AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ডিমলায় স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি
০১:৩৩ পিএম, ২১ অক্টোবর, ২০২১
ডিমলায় স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী ডিমলায় তিস্তা নদী বেষ্টিত এলাকায় স্বরণকালের আকস্মিক ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।রেড এলার্ট(লাল সংকেত)জারি করে মানুষজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য ঘোষনা দেয়া হয়েছে।বুধবার(২০ অক্টোবর)দিবাগত রাত নয়টায় এ পয়েন্টে পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার(৫২.৬০)৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও একই দিনের দুপুর ২ টায় ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলো।

তিস্তার ভয়াবহ বন্যায় এলাকার হাজার হাজার পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছে। স্রোতে ভেসে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে অনেকের বসতবাড়ি,ফসল,ফসলি জমি, পুকুর,গাছ,রাস্তা-ঘাট, ভেঁঙ্গে পড়েছে পুল,কালভার্ট ও বেশ কয়েকটি বাঁধ। পানিবন্দি হয়ে প্রায় দশ হাজার পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বেশি ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হয়েছে উপজেলার পূর্বছাতনাই,টেপাখড়িবাড়ি খগাখড়িবাড়ি,খালিশা চাপানী,ঝুনাগাছ চাপানী,পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়ন। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেও তিস্তার পানি সামাল দিতে পারছেনা সংশ্লিষ্টতা। এতে তিস্তা ব্যারাজ রক্ষায় উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত ফ্লাড ফিউজ দুইশো মিটার ভেঁঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের সাথে লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী, পাটগ্রাম, হাতিবান্ধার সাথে নীলফামারী জেলার সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্রের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার(১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সেই পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার সকাল ৯টায় বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ২টায় আরও ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি  পেলেও রাত ৯টায় আবারও ৬০ সেন্টিমিটার উপড় দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, এলাকার জিরো পয়েন্টে তিস্তার ডান তীর ও গ্রোয়িং বাঁধ হুমকীর মুখে পড়েছে। বিশেষ করে গ্রোয়িং বাঁধটির দুইশো মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে হুমকিতে পড়েছে ডানতীর বাঁধ। এলাকার শত বসত বাড়ি তিস্তা নদীতে ভেঁসে গেছে।পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও পরিবার।

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন বলেন, পুর্ব দোহল পাড়ার দুটি বেড়িবাঁধ ভেঁঙে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় ওই এলাকা সহ দোহল পাড়া, কিসামত চরের প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনশো একর জমির ফসলের ক্ষতি হয়। 

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, পরিস্থিতি খুব খারাপ। তিস্তা বাজার, তেলিরবাজার, দোলাপাড়া, চরখড়িবাড়ি এলাকা তলিয়ে গেছে। চরের ফসলের জমি সব পানির নিচে। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষজন গবাদী পশু সহ নিরাপদে সরে গেছে।

খালিশাচাঁপানী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, কার্তিক মাসের এমন হঠাৎ বন্যা এলাকাবাসীকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। এলাকার ছোটখাতা,বাইশপুকুর, সুপারীপাড়া গ্রাম এখন নদীতে পরিনত হয়েছে।

ঝুনাগাছ চাপানী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ভেন্ডাবাড়ি ছাতুনামা ফরেষ্টের চর এলাকার এখন তিস্তা নদীর পানি বয়ে যাচ্ছে। ঘরবাড়িতে বুক সমান পানি।

পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য বদিউজ্জামান বদি ও খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের পুর্ব দোহল পাড়ার আব্দুল লতিফ বলেন, এলাকায় বাঁধ ভেঁঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দ্রুত বাঁধ গুলো সংস্কার ও পুনর্নিমাণ করা না হলে না খেয়ে মরতে হবে অনেককেই। এ ছাড়াও নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ২২টি চরের ২০ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়।

পানিবন্দী পরিবারগুলো গবাদি পশু, বিশুদ্ধ পানি,শুকনো খাবার, বিদ্যুৎ,জালানি, চলাচলের রাস্তার অভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন আগে কোনোরকম ঘোষণা দেয়নি যে বাড়ি সরিয়ে ফেলতে হবে। 

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা বলেন, উজানের ঢলে তিস্তা নদীর ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেও পানি সামাল দেয়া যাচ্ছেনা। আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর রাখছি। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেছে। যে কোন সময় তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড ফিউজ পুরো নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে। আমরা তিস্তা অববাহিকায় লাল সংকেত দিয়ে মানুষজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলেছি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী।

একুশে সংবাদ/সু/বা

Link copied!