AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

স্ত্রীর মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না মালেক


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০২:৩২ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
স্ত্রীর মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না মালেক

প্রতি মাসের ২১ তারিখ রুটিন করে কেমো থেরাপী দিতে হয়। চলতি ২১ আগস্টও চলে গেছে। স্ত্রীর মৃত্যুর অপেক্ষা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া উত্তরপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুল মালেক।ইঞ্জিনবিহীন রিক্সা ও ভ্যান চালিয়ে জীবনের সঞ্চয় করা টাকা স্ত্রীর চিকিৎসায় খরচ করে এখন সম্বলহীন হয়ে পড়েছেন। স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় ১০টি কেমোর মধ্যে মাত্র ৬টি কেমো দিয়েই তার অর্থ সংস্থানের সকল উৎস থেমে গেছে। 

তিনি ১৯৮৩ সালে সামাজিকভাবে বিয়ে করেন কিশোরগঞ্জের নারী নূর জাহানকে (৫০)। এরপর সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে কেটে যাচ্ছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। সংসারে সালমা আক্তার (২৮) নামে এক কন্যা ও রুবেল (২০) নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে তাদের। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন আনেক আগেই। অর্থ সংকটে ছেলেকে ¯œাতকের কোর্স সম্পন্ন করাতে পারেননি। তাকে বিয়ে দিয়েছেন। সে এখন একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী করে।

আব্দুল মালেক বলেন, গত প্রায় ১০ মাস আগে স্ত্রী নূর জাহানের ডান স্তনে ব্যাথা অনুভবসহ ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝড়তে থাকে। প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিক ও পরে ময়মনসিংহের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জরুরী অপারেশনের পরামর্শ দেন। 

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক নূরুল আলমের (০১৭১৭-২৪৩৫১৬) পরামর্শে স্ত্রীকে নিয়ে যান ঢাকার আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার এন্ড জেনারেল হাসপাতালে। সেখানকার কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. আব্দুল মবিন চৌধুরী দ্রæত অপারেশনের প্রস্তুতি নিতে বলেন। অপারেশন সফল হয়। সব খরচ মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। 

পরামর্শ দেওয়া হয় প্রতি মাসের নির্ধারিত দিন ও সময়ে কোমো থেরাপী নিতে হবে। পরে ওই হাসপাতালের প্রফেসর ডা. আহসান দীদারের তত্বাবধানে একটানা ৬টি কেমো থেরাপী দেওয়া হয়। থেরাপী দেওয়া, আগে পরে ওষুধ ব্যবহার এবং প্রতিমাসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আপডেট জানা প্রভৃতি চিকিৎসা কাজে আব্দুল মালেক অর্থসংকটে পড়ে যান। 

প্রথমে রিক্সা ও পরে ভ্যান চালিয়ে সারাজীবনে তিন লাখ টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। সে টাকা শেষ করেন। স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ করেন। প্রতিদিন যা উপার্জন হয় তার সাথে ছেলের সামান্য মাসিক বেতনে চারজনের সংসার কোনোরকমে চলে। 

চলতি ২১ আগস্ট সপ্তম মাসের থেরাপী দেওয়ার কথা ছিল। বিমর্ষ চোখ-মুখে ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠে আব্দুল মালেক বলেন, “এখন খেয়ে-পড়ে চলার উপায় নেই, আবার থেরাপী দিব কিভাবে? যে মানুষটারে নিয়া ৩৮টা বছর সংসার করলাম। তার শেষটা মনে হয় আর করতে পরতাম না।” দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চোখের কোণের জল মুছেন আব্দুল মালেক। 

স্ত্রীর চিকিৎসা শেষ করতে সব মিলিয়ে আরও প্রায় তিন লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানান তিনি। এতে তার স্ত্রী আবার সুস্থ জীবনে ফিরে যেতে পারবেন বলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান তিনি। তবে এ অবস্থায় কেউ তাকে সাহায্যের হাত বাড়ালে গভীর শ্রদ্ধার সাথে তা গ্রহণের কথাও জানান তিনি। তার কোনো ব্যাংক হিসেব নেই। তার ছেলে রুবেলের মোবাইল নাম্বারে (০১৯২৫-১৯৩৩৮০) বিকাশ হিসাব খোলা রয়েছে।

অসুস্থ স্ত্রী নূর জাহান বলেন, থেরাপী নিয়ে শারিরীক দুর্বলতাও কাটে না। উঠা-বসা ও চলাফেরায় স্বামী আব্দুল মালেক তাকে সহায়তা করেন। 

একুশে সংবাদ/সানি/আরিফ

Link copied!