AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নারায়ণগঞ্জে গাড়ী চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৬:০১ পিএম, ২৮ আগস্ট, ২০২১
নারায়ণগঞ্জে গাড়ী চোর  চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

র‌্যারে অভিযানে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা হতে সংঘবদ্ধ গাড়ী ছিনতাই চক্রের মূল হোতা আজিম উদ্দিনসহ চক্রের ৫ সদস্য আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে। সেসময় তাদের কাছ থেকে  সময ছিনতাইকৃত ৩ টি পিকআপ ও ১ টি সিএনজি উদ্ধার করে  র‌্যাব। র‌্যাব জানায়,গত ১১ আগস্ট ২০২১ তারিখ রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা হতে গাড়ী ছিনতাই চক্রের ৫ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার করা হয়।

উক্ত অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৪টি পিকআপ। বর্ণিত গ্রেফতারকৃদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটিত হয়। এছাড়া বেশ কয়েকজন ভ‚ক্তভোগী হতেও তথ্য পাওয়া যায়। এর পর র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ আগস্ট ২০২১ তারিখ বিকাল হতে রাত পর্যন্ত র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস টিমের অভিযানে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গাড়ী ছিনতাই চক্রের মূলহোতা  ১) আজিম উদ্দিন (৩৮), জেলা- নোয়াখালী ও সহযোগী যথাক্রমে ২)  রফিক উল্লাহ (২৬), জেলা- নোয়াখালী, ৩) সেলিম (৫০), জেলা-নোয়াখালী, ৪) কামরুল হাসান (২৬), জেলা-নোয়াখালী এবং ৫)  ওমর ফারুক (২৫), জেলা-নোয়াখালীদেরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। উক্ত অভিযানে উদ্ধার করা হয় ছিনতাইকৃত ৩ টি পিকআপ, ১ টি সিএনজি, ১ টি পিস্তল, ১ রাউন্ড গুলি, ৩ টি ছোরা, ১ টি চাইনিজ কুড়াল, ৬টি মোবাইল এবং নগদ ১২,০০০ টাকা । 

গ্রেফতারকৃতদের র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা সংঘবদ্ধ যানবাহন/গাড়ী ছিনতাই/চুরি চক্রের সদস্য। এই সংঘবদ্ধ গাড়ী ছিনতাইকারী চক্রের সাথে ১৫-২০ জন জড়িত। এই চক্রের মূল হোতা আজিম উদ্দিন। গত ১১ আগস্ট ২০২১ তারিখ এবং সদ্য অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা তার অন্যতম সহযোগী। বিগত ৫-৬ বছর যাবত এই দলটি সক্রিয় রয়েছে। এই সিন্ডিকেটে সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে ইতিমধ্যে শতাধিক গাড়ী ছিনতাই/চুরি করেছে বলে জানায় র‌্যাব। এ পর্যন্ত এই চক্রটি গাড়ী ছিনতাইয়ের মাধ্যমে কোটি টাকার অধিক কারবার করেছে বলে জানায়।

এই চক্রের সদস্যরা সাধারনত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটসহ নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুর এর আশপাশের এলাকায় পিকআপ, সিএনজি ছিনতাই/চুরি করে থাকে। তাদের কৌশল সম্পর্কে জানায় তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করে থাকে। যেমন একটি গ্রুপ প্রথমত এই দলের সদস্যরা বিভিন্ন ছদ্মবেশে গাড়ী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। মূলত গাড়ী পার্কিং, গতিবিধি, চালক ও মালিক সম্পর্কে পূর্বেই তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। দ্বিতীয় গ্রুপটি মূল হোতা/মূল সমন্বয়কের নির্দেশনা মোতাবেক এই দলটি মাঠ পর্যায় হতে গাড়ী ছিনতাই/চুরি করে থাকে।

এছাড়াও তারা ক্ষেত্র বিশেষে চালকদের প্রলুব্ধ করে ছিনতাই নাটক সাজিয়ে থাকে। এই দলে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সদস্যরা থাকে। যেমন অভিজ্ঞ চালক ও মেকানিক ইত্যাদি। যাতে নির্বিঘে ছিনতাই বা চুরিকৃত গাড়ী নিয়ে দু্্রত স্থান ত্যাগ করতে পারে। এছাড়া পার্কিং অবস্থায় গাড়ীর লক সহজে ভাঙ্গা যায়। এ দলের সদস্যরা গাড়ী ভাড়ার ছদ্মবেশে ভিকটিম চালকের সাথে যোগাযোগ করে। অতঃপর পথিমধ্যে চেতনানাশক ঔষুধ ভিকটিম গাড়ীর চালককে খাদ্য দ্রব্যের সাথে সেবন করিয়ে থাকে।

পরবর্তীতে গাড়ীর চালককে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তার মোবাইল ফোন হস্তগত করে নেয়। তৃতীয় গ্রুপটি ছিনতাই বা চোরাইকৃত গাড়ী গ্রহণ করার পর এরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে রাখে। অতঃপর ভিকটিম চালকের মোবাইল হতে মূল মালিকের সাথে যোগাযোগ করে টাকা দাবী করে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে তারা টাকা প্রাপ্তির পর চোরাইকৃত গাড়ী নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেয়, যা মালিক সংগ্রহ করে নেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা মালিককে প্রতারিত করে থাকে। চতুর্থ গ্রুপটি নির্দিষ্ট কয়েকদিন ছিনতাই হওয়া গাড়ী লুকিয়ে রাখার পর মূল সমন্বয়কের নির্দেশনা মোতাবেক নির্দিষ্ট ওয়ার্কশপে প্রেরণ করা হয়। যেখানে গাড়ীর রং পরিবর্তন করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে গাড়ীর যন্ত্রাংশ বিচ্ছিন্ন করা হয়ে থাকে। যা পরবর্তীতে কম মূল্যে বিক্রি করা হয়।

এছাড়াও চোরাইকৃত গাড়ীর যন্ত্রাংশ সমূহ এক গাড়ীরটা অন্য গাড়ীতে এবং ভূয়া রেজিষ্ট্রেশন নম্বর প্লেট প্রতিস্থাপন করে থাকে, যাহাতে কখনো ধৃত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। ৫ম গ্রুপটি মূল সমন্বয়ক নিজেই এই দলের মূল ভ‚মিকা পালন করে থাকে। তার কয়েকজন সহযোগী দ্বারা ভ‚য়া কাগজপত্র তৈরী করে থাকে। সাধারণত তারা বিভিন্ন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত করে ভ‚য়া কাগজপত্র তৈরী করে থাকে। পরবর্তীতে সেগুলো বিক্রি অব্দি ভাড়ায় দেওয়া হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, কমমূল্য হওয়ার কারণে এই চোরাই/ছিনতাইকৃত গাড়ীর একটি চাহিদা ও রয়েছে। এই যানবাহন সমূহ মাদক পরিবহনেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গ্রেফতারকৃতদের সিন্ডিকেটের মূলহোতা সমন্বয়ক গ্রেফতারকৃত আজিম। সে সকল কর্মকান্ডের নেতৃত্ব, সমন্বয়, বন্টন ও ছিনতাইকৃত গাড়ীর বিক্রয়/ভাড়ার ব্যবসা করে।

গ্রেফতারকৃত রফিক ও ফারুক নিজ গ্যারেজসহ বেশকয়েকটি গ্যারেজে গাড়ীর রং পরিবর্তন/মডিফিকেশন বা বিবর্তন করে থাকে। এরা ক্ষেত্র বিশেষে স্বশরীরে সম্পৃক্ত থেকে গাড়ী ছিনাতইয়ে কারিগরী সহায়তা প্রদান করে থাকে। গ্রেফতারকৃত সেলিম ও কামরুল যথাক্রমে পিকআপ ও সিএনজি’র দক্ষ চালক। তারা ছিনতাইয়ে মূলদলে যুক্ত থেকে ছিনতাইয়ে অংশগ্রহণ করে থাকে। সিন্ডিকেট সদস্যদের নামে রাজধানী ঢাকা সহ নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা ও গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এই সিন্ডিকেটে সদস্যরা পূর্বে বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ছিল। তারা বিভিন্ন মামলায় আটক হয়ে জেলে অপরাধীদের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে এই চক্রের সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। মূলহোতা আজিমের নামে মাদক মামলাও রয়েছে। 

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

একুশে সংবাদ/বেলাল/বা

Link copied!