AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শার্শায় ইটভাটার জন্য কেটে নেওয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১১:০৭ পিএম, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১
শার্শায় ইটভাটার জন্য কেটে নেওয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি

শার্শায় কৃষকের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা। ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে মাছের প্রকল্পের কথা বলে শত শত একর কৃষি জমি নষ্ট করছে প্রভাবশালীরা। 

শার্শা প্রশাসেনর নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে অবাধে ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এতে জমি ফসল উৎপাদনের উপযোগিতা হারানোর পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাটও। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ থাকলেও জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের সংশ্লিষ্টতা থাকায় কেউ মুখ খুলছে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শার্শা জুড়ে প্রায় প্রতিটা গ্রামের কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। খননযন্ত্র দিয়ে কাটা মাটিগুলো শতাধিক ট্রাক্টর ও ট্রলি করে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। প্রতি ট্রাক্টর ও ট্রলি ভর্তি মাটি কিনতে খরচ হয় ১ হাজার ৬০০ টাকা। সেখানে মাটি কেনাবেচার কারবার করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতারা।

শার্শার বিভন্ন এলাকায় এ মাটি কেনাবেচা হয়। মাটি কাটার স্থানে প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত হওয়ার আগেই গাড়ি সরিয়ে নিতে নিজস্ব লোকজন দিয়ে পাহারা বসিয়েছেন তারা। প্রশাসনের নজর এড়াতে নিকটস্থ সড়কে গাড়ি চলাচল না করে দূরবর্তী এলাকা হয়ে মাটি গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর এ গুলো হচ্ছে অধিকাংশ রাতের আধারে।

স্থানীয়রা জানায়, মাটি খেকোরা ফসলি জমির ৩-৬ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নেন। এতে করে পাশ্ববর্তী জমিও ফসল উৎপাদনে উপযোগিতা হারিয়ে ফেলছে। যে জমি থেকে মাটি কাটা হয় সেটি থেকে ৫-৬ বছর ধরে ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।

শার্শার সামটা গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা ইদ্রিস আলী জানান, দিনে মাটি বিক্রি হয় না। গভীর রাতে চুরি করে হাজার হাজার গাড়ি নিয়ে মাটি বিক্রি করা হয় ইটভাটায়। সন্ধ্যা নামলেই এ সব মরন যান গুলো হাইওয়ে সড়ক জুড়ে মাটি বহন করে প্রশাসেনর নাকের ডগায়।

এদিকে, শার্শার সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় ও হাইওয়ে পুলিশের সহযোগীতায় এক শ্রেণির দুর্বৃত্তরা অবৈধভাবে জোরপূর্বক ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করায় কৃষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাটিদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না।

শার্শার বাগআঁচড়া ও সদর ইউনিয়নের ২টি সিন্ডিকেট ও এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গত ২মাস ধরে ফসলি জমির মাটি ও বালি উত্তোলন করে ইটভাটায় বিক্রি করে আসছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি পাকা পুল, কালভার্ট ও সড়ক ভেঙে গেছে। 

নিজামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও একাধিক সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে নিজামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে ফসলি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করে আসছে। যার ফলে সড়ক ও কালভার্টগুলো ভেঙে গেছে। এর সাথে যে মাটি খেকোরা জড়িত আছে তারা জনপ্রতিধি তো দুরের কথা প্রশাসনকেও তোয়াক্কা করে না।

নাম না প্রকাশের সর্তে একজন জনপ্রতিধি বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ আছে প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তি মাটি বহনকারী প্রতিটি ট্রাক্টর / ট্রলি থেকে মাসিক ১৫০০/২০০০ টাকা উৎকোচ নিয়ে থাকে। এমনকি কিছু সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তিরাও মাসোহারা নিয়ে থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, মাটি খেকোরা এক শ্রেণির সরকার দলীয় নেতাকর্মীকে ম্যানেজ করে দিনের আলোয় ও রাতের আধারে বড় বড় মেশিন দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে। নিরীহ কৃষকের ফসলি জমি থেকে না জানিয়ে বা জবরদখল করে মাটি কেটে নিচ্ছে। ভূমিদস্যুরা ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে মাছের প্রকল্পের কথা বলে শত শত একর কৃষি জমি নষ্ট করছে। 

কায়বা ইউপি চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহমেদ টিঙ্কু জানান, মাটি সিন্ডিকেটের সাথে তিনি জড়িত নন। দলীয় নেতা কর্মীরা জড়িত থাকায় তিনি বাধা দিয়ে বিরাগভাজন হতে চান না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল জানান, “স্থানীয় জনগণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনো অবস্থায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করা যাবে না। যারা এ ধরনের কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

একুশে সংবাদ/ই.নু/এস
 

Link copied!