AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

পলাশে হাড়িধোয়া নদীতে অবাধে চলছে বালি লুটের মহোৎসব


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১২:৩৪ পিএম, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০
পলাশে হাড়িধোয়া নদীতে অবাধে চলছে বালি লুটের মহোৎসব

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলা হাড়িধোয়া নদীতে চলছে অবাধে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী খননের নামে হাড়িধোয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করার মহোৎসব চলছে। হাড়িধোয়া নদীর যেখানেই বালু পাচ্ছে, সেখানেই এক টানা স্যালু মেশিনের ইঞ্জিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে গভীরতা করা হচ্ছে ৫০/৬০ ফুটের মতো।

এক একেকটি স্থানে ৮ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত ওই মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় এসব বালু বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে নদীর ওপর নির্মিত কয়েকটি সেতু ও রাস্তাঘাট। এছাড়া কৃষি জমি ও ঘর-বাড়ি ভাঙন শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে গ্রামবাসী। 

নরসিংদী জেলার অন্যতম একটি নদী হাড়িধোয়া। প্রায় ৪১ কিলোমিটার এই নদীর দুই তীরেই রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার ও গ্রামাঞ্চল। হাড়িধোয়া নদীটি জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী হওয়ায় এই নদীটিসহ নরসিংদীর নদ-নদী গুলো সচল রাখতে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ৫শত ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যযে পুনঃখননের উদ্যোগ নেয় সরকার। 

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড এবং এর তত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরপর সেনা বাহিনীর কাছ থেকে সোনালী ড্রেজার নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নদী গুলো খননের কাজ নেয়। 

হাড়িধোয়া নদীর ভেলানগর ব্রিজ থেকে শুরু করে শিবপুর উপজেলার সাধারচর ও পলাশ উপজেলার সীমান্তবর্তী দিয়ে চরসিন্দুর ইউনিয়ন হয়ে শীতলক্ষ্যা নদী পর্যন্ত প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি স্যালু মেশিনের ইঞ্জিন বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এই বালু নদীর পাশ্ববর্তী কৃষকের ফসলি জমি নষ্ট করে তাতে ফেলা হচ্ছে। আর এখান থেকেই এই বালু বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে নদী গুলো খনন কাজের শুরু দিয়ে সেনা বাহিনী তদারকি করতো। তখন নদী খনন কাজে কোনো অনিয়ম ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে সেনা সদস্যদের তদারকি কমে যাওয়ার কারণে নামে-বেনামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে এই হাড়িধোয়া নদী থেকে রাত-দিনে একতালে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। 

এসব বালু পলাশের গজারিয়া ইউনিয়নের একটি প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে অন্যত্র বিক্রি করছে কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী। এভাবে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর এই ৪১ কিলোমিটারের অংশে রয়েছে ছোট বড় প্রায় ১০/১২টি ব্রিজ ও স্কুল-কলেজ সহ অসংখ্য ছোট বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যা প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ছে। 

নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করে বিক্রির ফলে স্থানীয়ভাবে কৃষি জমি ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গজারিয়া ইউনিয়নের দড়িচর গ্রামের আমিনুল ইসলাম খোকা বাদী হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। 

পলাশের চরসিন্দুর ইউনিয়নের শফিউল আলম শাহীন নামে এক ঠিকাদার বলেন, নদী খনন কাজ আগে সঠিক ভাবেই হচ্ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে  যে যার মতো করে বিভিন্ন স্থানে বালু বিক্রি করার মহোৎসব চালাচ্ছে যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

হাড়িধোয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রির বিষয়ে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদুরুজ্জামান ভূইয়া বলেন, আমি বালু তুলি না। আমি নদী খননের ঠিকাদার শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ট্রলি প্রতি ২৫০ টাকা ও ড্রাম ট্রাক প্রতি ৪০০ টাকা দরে বালু কিনে ব্যবসা করি। 

এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি একাধিকবার অভিযান পারিচালনা করা হয়েছে। অভিযানকালে কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বালু উত্তোলনের অভিযোগে গজারিয়া বাজারের পাশে নদী থেকে শাহ জালাল এন্টার প্রাইজের শহিদুল ইসলাম ও আবু ছালেহ মো: রায়হান নামে দুজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃতরা বালু উত্তোলন না করার শর্তে মুচলেকা দিয়ে ছাড় পায়। বিষয়টি নরসিংদীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেও অবগত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা ইয়াসমিন জানান, হাড়িধোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উওোলনের বিষয়ে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। যে বা যারা এই অসাধু চক্রের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। অসাধু এই চক্রের বিরুদ্ধে  যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে নদী খনন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।

একুশে সংবাদ/এআরএম

Link copied!