জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো বাস। কিন্তু সেই বাসই এখন যেন হয়ে উঠেছে জীবনের জন্য এক আতঙ্কের নাম। আজ দুপুরে বিআরটিসির একটি বাস দুর্ঘটনায় পড়ে—ভাগ্যক্রমে কেউ হতাহত হয়নি, তবে এ ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল কতটা ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বাস সংকট মেটাতে ফিটনেস বিহীন পুরোনো বিআরটিসি বাস চালু করেছে। এসব বাসের অনেকগুলোরই গঠন দুর্বল, ব্রেক সিস্টেম নড়বড়ে, যন্ত্রাংশ জীর্ণ—ফলে প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, “এই দুর্ভোগের শেষ কোথায়? শিক্ষার্থীদের জীবনের নিশ্চয়তা কোথায়?”
বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায়, অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়েই এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাসে চড়তে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে ময়মনসিংহ শহর থেকে যারা প্রতিদিন টিউশনি কিংবা অন্যান্য কাজে যাতায়াত করেন, তাঁদের দুর্ভোগ সীমাহীন। একজন শিক্ষার্থীর কথায় উঠে আসে সেই শঙ্কা—
“আমরা যারা ময়মনসিংহ শহরে থাকি বা টিউশনি করি, প্রতিদিন বাসে যাতায়াত করতে গিয়ে মনে হয় জীবনের সঙ্গে জুয়া খেলছি। কোনোদিন যদি দুর্ঘটনায় কোনো মায়ের কোল খালি হয়, তার দায় নেবে কে?”
এই প্রশ্ন শুধু একজন শিক্ষার্থীর নয়, এটি হাজারো কণ্ঠের প্রতিবাদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হয়, “আমাদের সক্ষমতার সীমা আছে।” কিন্তু শিক্ষার্থীরা জানতে চান—জীবনের চেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা কী হতে পারে?
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম যেমন বিদ্রোহ ও মানবতার প্রতীক, তেমনই এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ফিটনেস বিহীন বাস দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। এখন সময় এসেছে দায়িত্বশীল ও টেকসই সিদ্ধান্ত নেওয়ার।
দায়মুক্তির নয়, দায়িত্ব পালনের সময় এখন।
শিক্ষার্থীরা আর চুপ করে বসে থাকতে চায় না। তারা চায় নিরাপদ যাতায়াত, চায় সম্মানজনক পরিবহন ব্যবস্থা। এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া মানে ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলোকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া।
একুশে সংবাদ/এ.জে