AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ‘দায়মুক্তি পত্র’ লেখানোর অভিযোগ


জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ‘দায়মুক্তি পত্র’ লেখানোর অভিযোগ

ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের দায়ে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস্ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ‘দায়মুক্তি পত্র’ লেখানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া জনির বিরুদ্ধে ‘চাকরির প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন’ ও শিক্ষক নিয়োগে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে তদন্ত কার্যক্রম চলছে।

 

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের ছাত্রী। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।

 

জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় মাহমুদুর রহমান জনির উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে দিয়ে দায়মুক্তি পত্র লেখানো হয়। সেখানে প্রক্টরিয়াল বডির দুই সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। তবে জোড়পূর্বক দায়মুক্তি পত্র লেখানোর খবর পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা আড়ালে নিয়ে যায়। এরপর ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে সম্পূর্ণ দায়মুক্তি পত্র লেখানো হয়।

 

এদিকে গত ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর গত বছরের ২৪ নভেম্বরের দায়মুক্তি পত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেন ওই ছাত্রী। এতে তিনি উল্লেখ করেন, মাহমুদুর রহমান জনি আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। পরে কিভাবে দরখাস্ত লেখা যায়- সে বিষয়ে প্রক্টর স্যারের কাছে পরামর্শ নেওয়া হয়। প্রক্টর স্যার কিছু পয়েন্ট বলে দেন এবং গুছিয়ে লিখতে বলেন। এছাড়া আরেকজন সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবালও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কিছু সাংবাদিক প্রক্টর অফিসে চলে আসে। তাই আমাকে বের করে শৈবাল স্যারের গাড়িতে অন্যত্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বাকি লেখা সম্পন্ন করা হয়। পরেরদিন প্রক্টর স্যারের বাসায় আপনার (উপাচার্য) অনুমতিতে জমা দিই।

 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘আমি বিভিন্ন সময়ে পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনি এবং তার স্ত্রী পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নন্দিতা সরকারের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক এবং সর্বশেষ সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও নির্যাতিত হয়েছি। সামাজিক নির্যাতনের ক্ষেত্রে নন্দিতা সরকারের সম্পূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’

 

অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন পরবর্তী বিয়ের প্রলোভনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার না করার শর্তে জনি আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে আমার থেকে উপাচার্য বরাবর চার পৃষ্ঠার একটি দায়মুক্তিপত্র লিখিয়ে নেয় এবং যথারীতি সে একজন প্রতারক। তার প্রতারণা এরপরেও অব্যাহত থাকে। এমতাবস্থায় সব সত্য বিষয়গুলো আমি সবার সামনে আনতে চাই।’

 

তদন্ত কমিটি দায়মুক্তিপত্রের মাধ্যমে ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে এই শঙ্কা থেকে ওই ছাত্রী বলেন, ‘তদন্ত কমিটির কাছে দায়মুক্তিপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জেনেছি। তারা দায়মুক্তি পত্রের উপর ভিত্তি করে মিস লিড হচ্ছে। কিন্তু আসল সত্যটা সবার জানা উচিত বলে মনে করি।

 

ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নির্যাতনের বিষয়ে নন্দিতা সরকার বলেন, ‘ওই নারী যেহেতু আমার বিষয়ে কোথাও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি, তাই আমি এ ব্যাপারে কথা বলবো না।’

 

এদিকে এ বিষয়ে জানতে মাহমুদুর রহমান জনির মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়ে এবং বিভাগে গিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 

অভিযোগের বিষয়ে সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল বলেন, ‘তাকে দিয়ে জোরপূর্বক দায়মুক্তি পত্র লেখাতে যাব? আমার উপস্থিতিতে সে নিজেই প্রক্টরের বাসায় গিয়ে দায়মুক্তি পত্র জমা দিয়েছে। যেহেতু প্রক্টর স্যারকে জমা দিয়েছে, সেহেতু স্যার ভালো বলতে পারবে।’

 

দায়মুক্তিপত্র লিখে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কিছুই লেখিনি। এরকম আমি কিছুই করিনি। আমি এর মধ্যে নাই। আমি আমার পরিবারের বাইরে এখন কোনও কিছুর মধ্যেই নাই।’

 

‘চাপ প্রদানের’ অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘চাপে ফেলে কাউকে কোন কিছু লেখায়নি এবং কী লিখেছে, কী লেখেনি আমি কোন কিছুই জানি না এবং লেখার সময়ও আমি ছিলাম না। আমার অফিস বন্ধ থাকায় বাসায় এসে একটি মুখবন্ধ করা চিঠি দিয়ে যায়। আমি সেটা খুলেও দেখিনি। আমি উপাচার্য বরাবর জমা দিয়েছি।’

 

উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘দায়মুক্তি পত্র পেয়েছি। কিন্তু ভুক্তভোগী সরাসরি আমাকে দেয়নি। এটা আমাকে ব্যাক্তিগতভাবে দিয়েছে। তাই আমি এটা নিয়ে কাউকে কিছু বলবো না।’

 

উল্লেখ্য, মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে বিভাগের ছাত্রীদের শিক্ষক বানানোর প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, শিক্ষক নিয়োগে প্রভাব বিস্তার এবং জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগ উঠে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত নভেম্বর মাসে ওই শিক্ষকের আপত্তিকর ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনার দেয়ালে সাঁটানো হয়। ছবিতে পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনি ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষক আনিকা বুশরা বৈচিকে দেখা যায়। পরে মাহমুদুর রহমান জনির আরও অপকর্ম ফাঁস হয়।


একুশে সংবাদ/এসএপি

Link copied!