সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন হবে সহজলভ্য, পাবে সব দেশের জনসাধারণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২০

কভিড-১৯ বা করোনাভাইরস মহামারি একটি আতংকের নাম হলেও এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য এবং সারা বিশ্বের মানুষকে বাঁচানোর জন্য গবেষকরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কোন দেশ? কে কার আগে ভ্যাকসিন আবিস্কার করে সফলতা আনতে পারে সে প্রতিযোগিতা তো রয়েছেই।
ইতিমধ্যে ফাইজার ও মডার্না যখন দাবী করছে তাদের ভ্যাকসিন শতকরা ৯০ পারসেন্ট বা ৯৫ পারসেন্ট কার্যকর।

তখনো কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের চেষ্টা অব্যহত রেখেছেন। তাদের দাবী শতকরা ৭০ পারসেন্ট হলেও এটা সহজ ভাবে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে পাওয়া যাবে। সে হিসেবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এখন সব দেশের সব জনসাধারনের আস্থা ও বিশ্বাসের হয়ে উঠতে যাচ্ছে।

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি করোনাভাইরাসের যে ভ্যাকসিনটি নিয়ে কাজ করছে, সেটির একটি ব্যাপক ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কোভিড -১৯ উপসর্গগুলি দেখানো লোকদের আটকাতে অত্যন্ত কার্যকর। ভ্যাকসিনটি শতকরা ৭০ ভাগ মানুষের মধ্যে কোভিড বাসা বাধতে দেয় না। রোগ প্রতিরোধক হিসেবে বেশী কার্যকর হবে।

ফাইজার ও মডার্না যখন দাবি করছে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের সাফল্য এক্ষেত্রে ৯৫%, তখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই খবরটিকে একই সাথে হতাশাব্যঞ্জক এবং বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফাইজার ও মডার্নার বিশ্বকে অবাগ করা আবিস্কার বিশ্ব বাসীকে আলোর মুখ দেখিয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশ যখন এই দুই কোম্পানির দিয়ে হুমরী খেয়ে পরছিলো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সবার জন্য সহজ লভ্য করার ফলে এখন মানুষ আরো স্বস্থির নিশ্বাস ফেলতে শুরু করছেন।
 
বলা হচ্ছে অন্য টিকা দুটির তুলনায় অক্সফোর্ডের টিকাটি হবে অনেক সস্তা, সংরক্ষণ এবং দুনিয়ার প্রতিটি কোনায় কোনায় ছড়িয়ে দেয়া হবে অপেক্ষাকৃত সহজ ভাবে সেই সাথে এর মূল্য হবে যে কোন ভ্যাকসিনের চেয়ে কম।
 
সুতরাং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ যদি এই টিকা অনুমোদন করে, সেটি মহামারি মোকাবেলার ক্ষেত্রে এই টিকাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
 
একই সাথে এমন তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে যে ভ্যাকসিনটিকে আরো নিখুঁত করে তোলা গেলে এটিরও সাফল্যের হার বেড়ে ৯০ শতাংশে পৌঁছে যাবে।
 
বৃটিশ সরকার এর মধ্যেই অক্সফোর্ডের টিকার ১০ কোটির চাহিদা জানিয়েছে, যা দেশটির পাঁচ কোটি মানুষকে দেয়ার সুরক্ষা দেয়ার জন্য যথেষ্ঠ। কৌতূহলোদ্দীপক  বৃটেনের জন্য এর মধ্যেই ৪০ লাখ টিকা প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। আরও নয় কোটি ৬০ লাখ টিকার সরবরাহ বাকী রয়েছে।

তবে যে কর্তৃপক্ষ টিকার নিরাপত্তার দিকগুলো, কার্যকারিতা এবং মাণের বিষয় তদারকি করে, সেই কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেয়ার পরেই এই টিকার ব্যবহার শুরু করা যাবে।সকল গবেষনা শেষ করে তবেই বাজারে ছাড়া হবে এই কভিড-১৯ ভ্যাকসিন।

বিভিন্ন বয়স, রোগীর স্বাস্থ্য গত কারন সহ সব দিক বিবেচনা করেই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

ব্রিটেনে একটি ব্যতিক্রমী ধরণের গণ টিকা কর্মসূচী শুরু করার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। সেজন্য সর্দিকাশি বা শিশুদের টিকা দেয়ার যে বার্ষিক কর্মসূচী পালন করা হয়ে থাকে, সেখানে কিছু কাটছাঁট করা হতে পারে। বিভিন্ন ভাবে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

যেমন:

১. বয়স্ক সেবা কেন্দ্রের বাসিন্দা আর কর্মীরা সবার আগে টিকা পাবেন।

২. এরপরেই পাবেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৮৫ বছর বয়সের ওপরের ব্যক্তিরা।

৩. এরপরে বয়সের ধাপ অনুযায়ী বাকি সবাই টিকা পাবেন। যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিল জুড়ে ২০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী অক্সফোর্ডের টিকার মানব পর্যায়ের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, মানব পর্যায়ের পরীক্ষায় তারা ৭০ শতাংশ সফলতা দেখতে পেয়েছেন।এই সফলতা আরো বাড়বে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড মানব শরীরে ৯০ শতাংশ কার্যকরী প্রমাণিত হবে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে আশার আলো দেখছে গোটা বিশ্ব। 

কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হলো, স্বেচ্ছাসেবীদের একটি অংশের মধ্যে এই টিকার ৯০ শতাংশ সফলতা পাওয়া গেছে, যাদের প্রথমে টিকার অর্ধেক ডোজ দেয়া হয়, পরে বাকিটা দেয়া হবে।
 
ইমের্জান্সি ইনফ্যাকশন ডিজিস এ্যান্ড গ্লোবাল হেল্থ দি ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড এর প্রফেসর পিটার হরবি বলেন, “ ভ্যাকসিন অবশ্যই কার্যকর হবে।তবে বয়স ভেদে এর পরিমান নির্ধারণ করা হবে। তবে ইনজেকশন টেবলেট বা ক্যাপসুল হিসাবে খাবার ঔষধ ব্যাবহার যোগ্য করার জন্যও প্রকৃয়া চলছে”।

ডব্লিউিএইচও, জিএভিআই ও কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘কোভ্যাক্স’ কর্মসূচির লক্ষ্য হলো কোনো দেশ যেন করোনা ভ্যাকসিন মজুদ করে না রাখে এবং প্রতিটি দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলোকে যেন প্রথম ভ্যাকসিন সেবা দেওয়া যায়।

ব্রিটেনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন খুব সহসায় বাজারে আসবে এবং এই ভ্যাকসিন প্রয়োগে বেঁচে যাবেন বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ। করোনা প্রতিরোধক টিকা বা ভ্যাকসিন সুখবর পেয়ে মানুষের মনে আশার সন্চারনা হয়েছে। ঔষধে যতটা না কাজ হবে তার চেয়ে বেশী কার্যকর হবে মানুষিক শক্তি। মনের বল।অনেক রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠবেন সাহস ও মনো বলের কারনে।মানুষিক তৃপ্তি “আমি ভ্যাকসিন দিয়েছি আমি এখন করোনা থেকে মুক্ত”। এই মনো বলের কারনে অনেকে নিজেকে সুস্থ্য মনে করবেন।

একুশে সংবাদ/এআরএম

প্রবাস বিভাগের আরো খবর