সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি, এগিয়ে আসতে হবে দায়িত্বশীলদের: ডয়চে ভেলে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:৫৩ পিএম, ২৪ জানুয়ারি, ২০২১

সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে বাংলাদেশে দায়িত্বশীলদের আগে টিকা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন তথ্য জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জার্মান ভিক্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে (ডিডাব্লিউ)। সেখানে বলা হয়,  শুরুতে ‘তরুণদের’ টিকা দিয়ে পর্যবেক্ষণের পরিকল্পনা করছে সরকার৷ কিন্তু অনীহা আর বিভ্রান্তির কারণে সরকারের পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েও আলোচনা চলছে৷ 

প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন নার্সকে প্রয়োগের মাধ্যমে আগামী ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে৷ পরদিন ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে কয়েকশ' জনকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা৷ এরপর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সারাদেশে টিকাদান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান৷ 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ জানুয়ারি টিকা দেয়ার কার্যক্রম ভার্চুয়ালভাবে উদ্বোধন করবেন৷ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রথম টিকা দেওয়া হবে একজন নার্সকে৷ এছাড়া আরও ২৪ জনকে টিকা দেওয়া হবে৷ এদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সময় কাজ করা সম্মুখযোদ্ধা স্বাস্থ্যকর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, চিকিৎসক এবং সাংবাদিকরা থাকবেন৷ পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে টিকা কার্যক্রম চালু করা হবে৷

এরইমধ্যে ভারত উপহার হিসেবে ২০ লাখ ডোজ টিকা পাঠিয়েছে৷ আসছে চুক্তির মাধ্যমে কেনা টিকার চালানও৷ কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গনে টিকা নিয়ে মানুষের অনীহা ও সন্দেহ প্রকাশ পাচ্ছে৷ বিষয়টিকে সরকার কিভাবে দেখছে? জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘এখানে বিভ্রান্তি বা অনীহার কিছু নেই৷ সরকার এই টিকা ফ্রি দিচ্ছে৷ যারা নিতে আগ্রহী হবে শুধু তাদেরই দেওয়া হবে৷ কাউকে জোর করে টিকা দেওয়া হবে না৷’’

টিকা নিয়ে এই অনাগ্রহ লক্ষ্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলামও৷ তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ করেই মানুষের মধ্যে আগ্রহ কেন কমে গেল সেটা বুঝতে পারছি না৷ তবে আমার মনে হয়, দায়িত্বশীলরা বিভ্রান্তি দূর করতে পারেন৷ তারা যদি আগে টিকা নেন তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হবে৷ তখন তারাও টিকা নিতে আগ্রহী হবে৷’’

টিকা দেয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে পাঁচটি হাসপাতালকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এরমধ্যে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা  জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা দেওয়া হবে৷ জানা গেছে, ২৮ জানুয়ারি এসব জায়গায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের উপর টিকা প্রয়োগ করা হবে৷ তাদেরকে এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখার পর সারাদেশে টিকাদান শুরু হবে৷ টিকা বিতরণের পরিকল্পনাও ইতোমধ্যে করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব৷

তবে, শুধু বাংলাদেশ নয় যেসব দেশে টিকা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে সবখানেই শুরুতে টিকা নিয়ে জনগণের সন্দেহের বিষয়টি গণমাধ্যমগুলোতে উঠে এসেছে৷ তা দূর করার জন্য অনেক দেশে শুরুতে দায়িত্বশীল বা সরকার প্রধানদের টিকা নেয়ার নজিরও দেখা গেছে৷

ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সাবেক মহাসচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘করোনার টিকা যেহেতু নতুন এসেছে, তাই মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকাটাই স্বাভাবিক৷ আমরা যেমনটা দেখি, ইপিআই'র টিকা যখন দেওয়া হয়, তখন প্রধানমন্ত্রী একটি শিশুকে টিকা খাইয়ে এটার উদ্বোধন করেন৷ এভাবে এখানেও যদি দায়িত্বশীলরা আগে টিকা নেন, তাহলে মানুষের আস্থার সংকট দূর হবে৷ ’’ 

একুশে সংবাদ/অমৃ 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর