সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বোরকা পরে যুবলীগ নেতা কিলিং মিশনে আটক ৩, অস্ত্র উদ্ধার

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:০২ পিএম, ১০ মে, ২০২৩

কুমিল্লার গৌরীপুরে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন (৪৫) হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বোরকা পরিহিত একজনসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

 

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে র‍্যাবের ও পুলিশের পৃথক অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি, মোবাইল ফোন ও বোরকার নেকাব জব্দ করা হয়।

 

বুধবার (১০ মে) সকালে পুলিশ ও র‍্যাবের পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

 

র‍্যাবের কুমিল্লা ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে ঢাকা জেলার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে এ হত্যাকাণ্ডে বোরকা পরিহিত তিনজন হত্যাকারীর একজন মো. দেলোয়ার হোসেন দেলুকে (৩১) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলাসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। তাঁর বাড়ি দাউদকান্দি উপজেলার চর চারুয়া এলাকায়। পরে তাঁর সহায়তায় তিতাস উপজেলার বড় গাজীপুর এলাকা থেকে মো. সহিদুল ইসলাম নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

অপর দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে করা সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, দাউদকান্দি গৌরীপুরে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যাকাণ্ডের পর আসামিদের ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো একটি ব্যাগে করে দেবিদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ এলাকার মাজহারুল ইসলাম সৈকত নামের এক ব্যক্তির কাছে রেখে আসেন। ডিবি পুলিশ সৈকতকে গ্রেপ্তার করে এবং তাঁর কাছ থেকে দুটি অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, ২৪টি গুলি, সাতটি মোবাইল ফোন, দুটি বোরকার নেকাব ও জিনস প্যান্ট জব্দ করে। এ ঘটনায় পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি রাজেস বড়ুয়া বাদী হয়ে সৈকতসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন।

 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া বোরকা পরা মো. দেলোয়ার হোসেন দেলু (৩১)। তিনি দাউদকান্দি থানার চর চারুয়া এলাকার মৃত জাহেদ আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে ২টি হত্যা মামলাসহ মোট ৬ টি মামলা রয়েছে।

 

আরেকজন তিতাসের গাজীপুর এলাকা থেকে এই হত্যাকাণ্ডে আসামিদের দেশের ভিতরে ও বাইরে পালানোর পথ তৈরিকারী মো. সাহিদুল ইসলাম ওরফে সাদ্দাম মাস্টার (৩৩)। তিনি তিতাস বড় গাজীপুর এলাকার মো. ফজলুল হকের ছেলে। সাহিদুল ইসলাম কুমিল্লার তিতাসের ইঞ্জিনিয়ার হারুন-উর-রশিদ গার্লস কলেজের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের প্রভাষক। সাহিদুল অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

 

অন্যদিকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ গ্রামের মো. মাজহারুল ইসলাম (২৪)। বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ব্রিফিং করে এ তথ্য দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবির) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেস বড়ুয়া। মাজহারুল দেবীদ্বার উপজেলা বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওষুধের দোকানদার। মাজহারুলকে ৯ মে রাত সাড়ে ১২টায় বুড়িচং উপজেলার নিমসার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

এ ছাড়া পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ২টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলবার, ২৪টি গুলি, হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত ৭টি মুঠোফোন, ২টি নিকাব (বোরকার) ও ১টি জিনস প্যান্ট উদ্ধার করে। পুলিশ বলছে, হত্যার পর মাজহারুল অস্ত্রগুলো জমা রাখেন।

 

উল্লেখ্য, ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দির উপজেলার গৌরিপুর বাজারে হত্যা করা হয় জেলার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে। তিনজন বোরকা পরিহিত ব্যক্তি তাকে গুলিতে হত্যা করেন।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

অপরাধ বিভাগের আরো খবর