সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ফসলি জমিতে মিললো হাত-পায়ের রগ কাটা রক্তাক্ত মহিলার লাশ 

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৮:৫৬ পিএম, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২
ছবি: একুশে সংবাদ

পেকুয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের পেকুয়ায় ফসলি জমিতে হাত-পায়ের রগ কাটা অবস্থায় এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

 

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারী) সকাল ৯টার দিকে সদর ইউনিয়নের বাগগুজারা নুইন্যামুইন্যা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকা থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।


নিহত মহিলার নাম মোহছেনা আক্তার (৩৭)। সে কক্সবাজার সদরের বৈধঘোনা খাঁজা মঞ্জিল এলাকার ছাবের আহমদের মেয়ে ও মৃত আবু তৈয়বের স্ত্রী। তার ২ ছেলে ১ মেয়ে বলে জানাগেছে।

 

ঘটনার খবর পেয়ে পেকুয়া থানার ওসি তদন্ত কানন সরকার ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।  

 

প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম, হেফাজ উদ্দিন বলেন, সকালে বোরো চাষের জন্য জমিতে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করতে যায়। এ সময় বিলের মাঝে একটি রক্তাক্ত মহিলার লাশ দেখতে পায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়।

 

স্থানীয়দের ধারনা ওই মহিলাকে অন্য কোথাও খুন করে গভীররাতে বিলে ফেলে রেখে চলে যায় ঘাতকরা। 

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিলের মাঝে পড়ে আছে বোরকা ও নেকাব পরানো মহিলা। দুই পা ও বাম হাতের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। বুকের মাঝখানে রক্তে ভিজে গেছে বোরকা। কাটা হাত থেকে রক্ত ঝরে পড়ছে মাটিতে। লাশের পাশে একটি ভ্যানেটি ব্যাগ। পায়ের জুতাগুলো ছিটিয়ে ছটিয়ে রয়েছে পাশে। লাশের বিশ হাত দুরে একটি দু'ধারা ছোরা মাটিতে পুঁতে রাখছে।


দেখাগেছে,ব্যাগের ভেতর একটি মুঠোফোন, ভোটের স্মার্টকার্ড ও অল্পকিছু টাকা। নৃশংসভাবে তাকে খুন করা হয়েছে।

এদিকে লাশের খবর শুনে দেখতে শত শত উৎসুক নারী পুরুষ ভীড় করছে। 

 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ওই মহিলার লাশ সনাক্ত করে তারই মেয়ের জামাই ডুলহাজারা এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। সে ঘটনাস্থলে এসে ওই মহিলা তার শ্বাশুড়ি দাবী করেন। এসময় তিনি বলেন আমি যতটুকু জানি আমার শ্বশুরের প্রবাসী বন্ধু চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী এলাকার জৈনিক রিদুয়ান নামের এক ব্যক্তি। আমার শ্বশুর মালেশিয়া প্রবাসজীবনে মারা যায়। এ সুবাধে আমার শ্বাশুড়ি কে বিয়ে করে সে। এর পর থেকে তাদের মধ্যে সংসার চলে। রিদুয়ান আমার শ্বাশুড়িকে ফুসলাইয়া এক এনজিও থেকে কর্জ টাকা নিয়ে নেন এবং কিস্তিতে পরিশোধ করবেন বলে। অনেকদিন ধরে কিস্তির টাকা পরিশোধ না করলেও ঘটনার আগের দিন কিস্তির টাকা নিয়ে যেতে বলে কক্সবাজার থেকে কল করে ডেকে নিয়ে যায় সেই রিদুয়ান। কিস্তির টাকা নিতে এসে আমার শ্বাশুড়ি কে লাশ হতে হল। আমি শ্বাশুড়ির হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবী করছি ও সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। 

 

নিহতের ছেলে আরিফুল ইসলামের দাবি,গতকাল সোমবার মুঠোফোনে কথা বলে বাসা থেকে বের হন মা। পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে মাকে ডেকে নিয়ে বিক পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে সৎ বাবা রিদুয়ান।

 

আরিফ আরো বলেন,আমার বাবা মালেশিয়ায় থাকতো। এক বছর আগে বাবা সেখানে মারা যান। রিদুওয়ানও মালয়েশিয়া থাকতো। বাবার সঙ্গে মালেশিয়ায় পরিচয় হয় তার। রিদুওয়ান দেশে আসলে পরিচয়ের সুত্র ধরে কক্সবাজার বাসায় আসা যাওয়া করতেন।


৭/৮ মাস আগে আমার মায়ের সঙ্গে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের দক্ষিন কোনাখালী আব্দুল হাকিম পাড়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে রিদুয়ানের সাথে বিয়ে হয়। কিন্তু মা কখনো রিদুওয়ানের বাড়িতে যায়নি। শহরের খাজামঞ্জিল এলাকায় এসে মাঝে মধ্যে আমাদের সাথে থাকতো সে। আমি আমার মায়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবী করছি ও সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। 

 

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী  ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,সিআইডি ক্রাইমসিন তদন্ত করছে। পিবিআই টীমও আসছে। লাশের ছেলে ও স্বজনরা এসেছে।

 

তিনি আরো বলেন,  নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। বাহিরে কোথাও খুন করে গভীররাতে হয়তো লাশ এখানে ফেলে চলে গেছে। তবে কি জন্য, কেন খুন করা হয়েছে তা অগ্রিম বলতে পারছিনা। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। 


একুশে সংবাদ/এস এম জোবাইদ/এইচ আই/


 

অপরাধ বিভাগের আরো খবর