সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সরকারি নিয়ােগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ১০ সদস্য গ্রেফতার

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:৩৩ পিএম, ২২ জানুয়ারি, ২০২২
ছবি একুশে সংবাদ

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গােয়েন্দা গুলশান বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সরকারি নিয়ােগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং প্রশ্নের উত্তর সরবরাহকারী চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। 


এ সংক্রান্ত বিষয়ে আজ বেলা ১২ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি ডিবির প্রধান ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, গতাকাল ২১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ দুপুর ৩ টা থেকে রাত আনুমানিক ১০ পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর মিরপুর, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও কাকরাইল এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলাে- ১। নােমান সিদ্দিকী, ২। মাহমুদুল হাসান আজাদ, ৩। আল আমিন রনি, ৪। নাহিদ হাসান, ৫। শহীদ উল্লাহ, ৬। তানজির আহমেদ, ৭। মাহবুবা নাসরীন রুপা, ৮। রাজু আহমেদ, ৯। হাসিবুল হাসান ও ১০। রাকিবুল হাসান। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে ইয়ার ডিভাইস ৬টি, মাস্টার কার্ড মােবাইল সিম হােল্ডার ৬টি, ব্যাংকের চেক ৫ টি, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ৭ টি, স্মার্ট ফোন ১০ টি, বাটন মােবাইল ৬টি, প্রবেশপত্র ১৮টি ও চলমান পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র ৩ সেট জব্দ করা হয় ।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান আজাদ সিজিএ অফিসের সরকারী কর্মকর্তা এবং মাহবুবা নাসরীন রুপা বগুড়ার ধুপচাঁচিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান।গােয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ কাকরাইলে অবস্থিত নিউ শাহিন হােটেল থেকে অসাধু উপায়ে অবলম্বনকারী দুইজন পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে কাফরুল থানাধীন সেনপাড়া পর্বতা এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ডিভাইস, প্রশ্নপত্র এবং উত্তর পত্রের খসড়াসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয় ।

 

ডিবি পুলিশের অপর দল বিজিপ্রেস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাহবুবা নাসরীন রুপাকে টাকা, ডিজিটাল ডিভাইসসহ গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যমতে অপর আসামিদেরকে গ্রেফতার করা হয় ।


উল্লেখ্য যে, প্রতিরক্ষা মহা হিসাব নিরীক্ষক এর কার্যালয়ের অধীন ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি অডিটর পদে নিয়ােগের জন্য গতকাল দুপুর ৩ টা থেকে বিকেল ৪:১৫ টা পর্যন্ত ৭০ নাম্বারের MCQ পরীক্ষা ঢাকামহানগরীর বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হলগুলােতে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের নিকট তথ্য ছিল।
পূর্বে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়া কতিপয় ব্যক্তি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মােবাইল অ্যাপস এবং ব্যক্তি পরিবর্তন করে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, উত্তর/সমাধান সরবরাহসহ অসদুপায় অবলম্বন করতে পারে ।


গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান আজাদ, নাহিদ হাসান, আল আমিন সিদ্দিকী ইতােপূর্বেও প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্তে ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে গ্রেফতার হয়েছিল। 

 

গ্রেফতারকৃত আসামীরা অন্যান্য আসামিদের যােগসাজশে বিভিন্ন সােশ্যাল অ্যাপস ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা হল থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে দেয়া, বাইরের রুমে ওয়ানস্টপ সমাধান কেন্দ্র বসিয়ে স্মার্ট ওয়াচ, ইয়ার ডিভাইস, মােবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করার কাজ করে থাকে। 


ইতােপূর্বে গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন ব্যাংক, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন হিসাব নিরীক্ষক কার্যালয়, জ্বালানি অধিদপ্তর,সমবায় অধিদপ্তর, খাদ্য অধিদপ্তর, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন সহ অন্যান্য সংস্থার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং উত্তরপত্র সরবরাহ করে বিপুল পরিমাণ টাকা বিভিন্ন ব্যাংক এবং বিকাশের মাধ্যমে এবং নগদে হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গােয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মশিউর রহমান মহােদয়ের নির্দেশনায় অভিযানটি পরিচালিত হয়।

 

একুশে সংবাদ/বেলাল দেওয়ান/এইচআই.

অপরাধ বিভাগের আরো খবর