সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বালিয়াডাঙ্গীতে  ভোটের মাঠে এমপির ৪ আত্মীয় !

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, সংসদ সদস্যর সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে যাওয়ার কড়া বার্তাদেয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ। কেউ এই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নিলে বহিষ্কারসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার স্থানীয় সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজনের ৪ আত্নীয় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল গত ২২ এপ্রিল। কিন্তু চারজনের কেউই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি। ইতিমধ্যে তারা প্রতীকও বরাদ্দ পেয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সেই ৪ আত্মীয়ের সবাই নির্বাচনে থেকে গেছেন। তারা হলেন ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলামের দুই চাচা, ভাই ও বোন। তারা এখনো ভোটের মাঠে আছেন।

উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলীর ছোট ছেলে উপজেলা যুবলীগের সদস্য আলী আফসার ও তার ফুফাতো বোন উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সিমা আক্তার সুমনা তাদের কেউই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।

মোহাম্মদ আলী ও সফিকুল ইসলাম বর্তমান সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলামের চাচা। আর আলী আফসার মাজহারুল ইসলামের চাচাতো ভাই এবং সিমা আক্তার সুমনা ফুফাতো বোন।

কেন্দ্রের কঠোর নির্দেশনা থাকার পরও নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রার্থীরা জানান, স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাদের আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ‘চেয়ারম্যান প্রার্থী’ হিসেবে নাম ঘোষণা করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অনলাইনে চেয়ারম্যান পদে আবেদন করেন তারা। ইতোমধ্যে ওই প্রার্থীরা প্রতীক ও পেয়েছেন এবং তারা মাঠে নেমেছেন নির্বাচনী প্রচারণায়।

এ বিষয়ে সংসদ সদস্যের ফুফাতো বোন উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সিমা আক্তার সুমনা বলেন, ‘আমরা যখন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি তখন প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা দেননি। এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আমি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগে প্রধানমন্ত্রী যেহেতু নির্দেশনা দেয়নি সেজন্য আমি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিনি।’

এদিকে সংসদ সদস্যের চাচা চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পেপার-পত্রিকায় দেখেছি উপজেলা নির্বাচন থেকে সংসদের আত্মীয়-স্বজনদের সরে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য আমাকে কেউ কোন কিছু বলেনি, তাই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি; এখন দল থেকে যদি আমার বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটি সঠিক হবে না।’

এদিকে সংসদ সদস্যের আরেক চাচা চেয়ারম্যান প্রার্থী সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এমপির চাচা হতে পারি, কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে থাকি না; আমি পরিবার নিয়ে আলাদা থাকি-আলাদা খাই। তাছাড়া নির্বাচন থেকে সরে যেতে হবে দল থেকে এমন কোনো চিঠিও পাইনি।’ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় কোনো চিঠি পেলে বিষয়টি অবশ্যই ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।’

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠিন বার্তা দিয়েছেন। মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়-স্বজন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ওই সিদ্ধান্ত শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার প্রত্যেক আত্মীয়-স্বজনদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু তারা সেটি শুনেনি; অতএব ধরে নেওয়া যায় তারা দলীয় সিদ্ধান্ত মানে না, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

ঠাকুরগাঁও জেলা আ.লীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বাবলু বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত প্রত্যেক প্রার্থীদের জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা গুরুত্ব দেননি। যারা দলের সিদ্ধান্ত উপক্ষো করে নির্বাচনে থেকে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


একুশে সংবাদ/এস কে   

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর