সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

চিম্বুক পাহাড়ে হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে ম্রোদের কঠোর কর্মসূচি

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:১৪ পিএম, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণে চলছে। পরিবেশ ও ঐতিহ্য ধ্বংসের এই কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে আবারও পদযাত্রা করেছেন আদিবাসী ম্রো সম্প্রদায়। 

গতকাল (রোববার) কয়েক হাজার ম্রো নারী ও পুরুষ চিম্বুক পাহাড়ের রামরিপাড়া থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা লংমার্চ (পদযাত্রা) করে বান্দরবান জেলা শহরে রাজার মাঠে এসে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেন।

এর আগেও কালচারাল শোডাউন নাম দিয়ে সাংস্কৃতিক শোভাযাত্রা করেছিলেন ম্রো জনগোষ্ঠী। গতকাল রাজারমাঠের সমাবেশে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে আন্দোলনের অন্যতম নেতা সিংপাত ম্রো বলেন, তাদের ‘কালচারাল শোডাউনসহ’ নানা প্রতিবাদ উপেক্ষা করে চিম্বুকের নাইতংপাহাড়ে হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণ চলছে। এ জন্য চিম্বুক পাহাড়বাসী আবারও লংমার্চ (পদযাত্রা) করতে বাধ্য হয়েছে।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে হোটেল ও বিনোদন পার্কের প্রকল্প বাতিল ও নির্মাণকাজ বন্ধ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বান্দারবানের সমাবেশে বলা হয়েছে, ম্রোদের আদি বিচরণভূমি জমি দখল করে হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণের ফলে প্রত্যক্ষভাবে ছয়টি ম্রোপাড়া উচ্ছেদ হবে। পরোক্ষভাবে আরও ১১৫টি পাড়ার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

এ প্রসঙ্গে ম্রোদের চলমান আন্দোলনে সক্রিয় নেতা জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের চট্টগ্রাম-পূর্বাঞ্চলের সভাপতি অ্যাডভোকেট ভুলন লাল ভৌমিক রেডিও তেহরানকে বলেছেন, বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ম্রো নৃ-গোষ্ঠীর একমাত্র আদি বাস হচ্ছে বান্দারবানের এ পার্বত্য অঞ্চলটি। ম্রোদের জাতিগত বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিগত ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে  এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। 

উল্লেখ্য, বান্দরবান জেলা শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচতারা ম্যারিয়ট হোটেল ও বিনোদন পার্কের কাজ শুরু হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিকদার গ্রুপের আর অ্যান্ড আর হোল্ডিংস লিমিটেড এবং আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এখানে মূল হোটেল ভবন ছাড়াও এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১২টি পৃথক ভিলা, আধুনিক কেবল কার থাকবে। সেখানে রাইড এবং সুইমিং পুলসহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদন সুবিধা থাকবে বলে জানানো হয়।

সূত্র: পার্স টুডে


একুশেসংবাদ/অমৃ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর