সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বদলে যাচ্ছে উপকূলীয় নদ নদীর চিত্র

প্রকাশিত: ১০:৫১ এএম, আগস্ট ২৯, ২০১৪
একুশে সংবাদ: জোয়ারে নদীর প্লাবন, আবার ভাটায় পানি নেমে যাওয়ার দৃশ্য উপকূলের মানুষের কাছে অতি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে কয়েক বছর ধরে এই চিত্রটি পাল্টে গেছে। অস্বাভাবিকতা দেখা দিচ্ছে এ প্রাকৃতিক নিয়মটাতে। এখন জোয়ারের পানি লোকালয় বা জমিতে ঢুকছে ঠিকই কিন্তু বের হচ্ছে না। জলাবদ্ধতায় উপকূলের জনজীবনে চরম ভোগান্তি নেমে এসেছে। সৃষ্টি হচ্ছে অকাল বন্যা। বাড়ছে নদীভাঙন, জমির লবণাক্ততা। এতে কৃষিতে অবনতি ঘটছে। পিছিয়ে পড়ছে এ অঞ্চলের অর্থনীতি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাসের কারণে নদীগুলো এখন আর পানি ধরে রাখতে পারছে না। উপকূলীয় জেলার নদ-নদীতে অতিরিক্ত পলি জমে সেগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পানির চাপ ধারণ করতে পারছে না, ফলে জোয়ারের স্ফীতি বাড়ছে। এসব কারণেই এই আপদের সৃষ্টি বলে বিশেষজ্ঞদের মত। সম্প্রতি কয়েক দফা মৌসুমি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জো’র প্রভাবে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলীয় বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট ও বরিশালের সহস্রাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জলাবদ্ধতা তৈরী হয়েছে দুই শতাধিক গ্রামে। তাই চাষাবাদ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবন-জীবিকাসহ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে চরম বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে জলাবদ্ধ বাসিন্দাদের। জোয়ারের সময় নদীর অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি থেকে রক্ষা পেতে উপকূলীয় গ্রামগুলোতে অনবরত মাটি ভরাট করে বসতভিটা ও বাড়িঘর উঁচু করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। আলাপকালে তারা জানান, নদীর লবণপানি ফসলহানি করছে, এতে সৃষ্টি হচ্ছে খাদ্যসংকট। বঙ্গোপসাগর এবং পায়রা ও বিষখালী নদীর মোহনায় দেখা গেছে, পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় ওই সব স্থানে ভাটার সময় দেড় থেকে দুই ফুট পানি থাকে। সেখানে পঞ্চাশটির বেশি ছোট বড় চরও জেগে উঠেছে। নদী দু’টির উজানে ধীরে ধীরে নাব্যতা কমে আসছে বলে স্থানীয় মানুষেরা জানান। বাংলাদেশ নদী গবেষণা ইন্সটিটিউট, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সূত্রমতে, পোল্ডার সিস্টেমের কারণে নদীর গতিবেগ কমে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে বছরে ১.২ বিলিয়ন টন পলি নিয়ে জোয়ারের পানি পরিবাহিত হতে না পেরে নদীবক্ষ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদীর তলদেশের গভীরতা সংযুক্ত খালগুলোর তুলনায় হ্রাস পাওয়ায় মাত্র সাড়ে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতেই নদীর উপচে পড়া পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ অঞ্চল। আবার শুষ্ক মৌসুমে প্রধান প্রধান নদীগুলোর শাখা-প্রশাখাসমূহের কার্যকারিতা পলি সঞ্চায়নের ফলে একেবারে বন্ধ হয়ে থাকে। নদী ও সুন্দরবন বিষয়ক গবেষক ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় এলাকা এমন একটি প্রাকৃতিক অবস্থান যেখানে মাটি, পানি ও বায়ুর সংমিশ্রণ ঘটে থাকে। জোয়ার ভাটার প্রবণতা, লবণাক্ততার অবস্থান এবং ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব এই তিনটি নিয়ামকের ওপর উপকূলীয় অঞ্চলের পরিচিতি নির্ধারণ নির্ভর করে। তিনি মনে করেন, বিপর্যস্ত নদী ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় ভাবে স্লুইসগেট ব্যবস্থাপনা না থাকা, বাঁধ দিয়ে অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বাঁধ ও ভারত সরকারের উজানে বাঁধ নির্মাণে উজানে পানিপ্রবাহ না থাকা নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাসের জন্য দায়ী। বেসরকারি সংস্থা কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (সিডিপি)’র নির্বাহী পরিচালক এস জাহাঙ্গীর হাসান মাসুম বলেন, খননের মাধ্যমে নদী-খালের নাব্যতা পুনরুদ্ধারসহ নদীতে অব্যাহত ক্যাপিটাল ড্রেজিং-এর বিকল্প এ মুহূর্তে নেই। একুশে সংবাদ ডট কম/মামুন/২৯.০৮.২০১৪

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1