সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

নাগরিক যন্ত্রণার চরম দুর্ভোগের কারন বেহাল সড়ক

প্রকাশিত: ০৫:০৬ এএম, আগস্ট ১৯, ২০১৪
একুশে সংবাদ : রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ এই মুহূর্তে চরম দুর্ভোগের মধ্যে বসবাস করিতেছেন। যাহারা বন্যায় আক্রান্ত, কিংবা জলাবদ্ধ হইয়া পড়িয়াছেন, তাহাদের জন্য ইহা যেমন সত্যি, যাহারা ইহার বাহিরে রহিয়াছেন তাহাদের জন্যও ইহা কম সত্যি নহে। রাস্তায় বাহির হইলেই বিপদ, রাস্তাগুলি দুর্গম গিরিপথের ন্যায় অমসৃণ, খানাখন্দে ভর্তি। কোনো কোনো রাস্তা বৃষ্টির পানির নিচে থাকিবার কারণে ইহাদের দুর্গমতার মাত্রা অনুধাবনেরও উপায় নাই। ফলে যানবাহনের আকস্মিক পতন কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লম্ফন প্রতিটি প্রয়োজনীয় ও মামুলি যাত্রাকে সমূহ অযাত্রায় পর্যবশিত করিতেছে। খবরে প্রকাশ, রাজধানী ঢাকার ২৩ শত কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় অর্ধেকেরই বেহাল দশা। দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামের ১০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতবিক্ষত। ছোট-বড় অন্যান্য শহরের সড়ক কিংবা মহাসড়ক, সর্বত্রই একই চিত্র। সবচাইতে করুণ পরিস্থিতি বিরাজ করিতেছে গলিপথগুলিতে। খানাখন্দবিহীন একটিও গলিপথ পাওয়া যাইবে কিনা সন্দেহ। পরিস্থিতি অবনতির জন্য অবশ্যই বর্ষাকে অনেকখানি দায়ী করা যাইবে। আবার বর্ষার পূর্বেই ওয়াসা, বিদ্যুত্ বিতরণ সংস্থা, তিতাস গ্যাস কিংবা টেলিফোন বিভাগের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে দফায় দফায় অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়িতে সড়কগুলিতে তৈরি হইয়া ছিল বড় বড় গর্ত। অন্যদিকে ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলিতেছে কয়েক বছর ধরিয়া, তাহাতেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংকুচিত হইয়া পড়িয়াছে এবং মেরামতবিহীন পড়িয়া রহিয়াছে। আর বর্ষা শুরু হইবার পর সড়কগুলিতে কার্পেটিং,পাথরকুচি ও খোয়া উঠিয়া গিয়া বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হইয়াছে। পূর্বের গর্ত এবং বর্ষার পরিনামে সৃষ্ট নূতন গর্তে সড়কগুলি পরিণত হইয়াছে মরণফাঁদে। প্রতিদিনই এইসব সড়কে ঘটিতেছে দুর্ঘটনা। আর জানা-অজানা দুর্গমতা এড়াইয়া যানবাহনগুলি চলিতে গিয়া ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হইতেছে। সব মিলিয়া বলিতে হয়, দেশবাসী ঘরের বাহিরে আসিলে কিছুক্ষণের মধ্যে অনুভব করিবেন যে, নাকাল হইবার সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হইয়া রহিয়াছে। তবে বর্ষাকে এককভাবে দায়ী করিয়া পার পাওয়া যাইবে না। বর্ষার পূর্বে যে নানান সংস্থা সড়ক খুঁড়িয়া রাখিয়াছে তাহার জবাব কী? ঐসকল নির্মাণ-সংস্কারের অবশ্যই প্রয়োজন রহিয়াছে, কিন্তু সরকারি সংস্থাগুলির যে কোনোই সমন্বয় নাই। ওয়াসা যেই রাস্তা একবার খুঁড়িয়া যায়, তাহার কিছুদিন পর একই রাস্তায় বিদ্যুত্ বিভাগের কোদাল পড়ে। সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে এই সমন্বয়হীনতার অভিযোগ অনেক পুরানা। ফ্লাইওভারের কাজ হইবে, ভালো কথা, কিন্তু বিদ্যমান সড়ককে যথাসম্ভব কম দখল করিবার চেষ্টা তো দেখা যাইতেছে না নির্মাণসংস্থাগুলির দিক হইতে। ঢাকায় এখন দুইটি সিটি কর্পোরেশন। কোনো কর্পোরেশনেরই নির্বাচিত মেয়র নাই। কিন্তু যাহারা দায়িত্বে এখনও রহিয়াছেন, তাহাদের তো কাজগুলি ঠিকঠাকমতো চালাইয়া যাইতে হইবে। সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারদের ফাঁকির কথা সর্বজনবিদিত, কিন্তু যেই উপকরণগুলি ব্যবহার করা হয়, তাহাতে প্রযুক্তিগত কোনো পরিবর্তন কি আনা যায় না? ফি বর্ষায় রাস্তা ব্যাপকভাবে ভাঙ্গিয়া যাইবে, এইভাবে আর কত দিন? বোম্বে শহরটি বর্ষাপ্রবণ, বিশেষত জুলাই-আগস্ট মাসে সেখানে প্রবল বৃষ্টি হইয়া থাকে। ঐ শহরের সড়কগুলিতে দেখা যায়, বিটুমিন-পিচ-খোয়ার পাশাপাশি শক্ত লৌহজাতীয় পদার্থ সড়কে ব্যবহার করা হয়। তাহাতে সড়কগুলি বর্ষায় সহজে ভাঙ্গিয়া পড়ে না। আর রাস্তাঘাটের সংস্কার-মেরামত একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের দেশে দেখা যায়, কর্তৃপক্ষ অপেক্ষা করিয়া থাকে, বর্ষা আসুক, ভালোমতো সড়কগুলি ভাঙ্গিয়া যাক, তাহার পর সংস্কার করা যাইবে। বর্ষার পূর্বেও প্রয়োজনীয় সংস্কার করিয়া রাখিলে বর্ষাকালীন ভোগান্তি একটু কমিত। আর গলিপথগুলি সারাবছরই থাকে ভাঙ্গাচোরা, ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধময়। সামনের কয়েকটি সড়ক মসৃণ রাখিয়া ভিতরেরগুলির কোনো খবর না লইবার যে উন্নয়নদর্শন, তাহা আজ আর চলিবে না। দেশ আগাইবে, কিন্তু উন্নয়নদর্শন মান্ধাতা আমলের হইলে তাহাকে সত্যিকারের উন্নয়ন বলা যাইবে না। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৯-০৮-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1