সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দখলে দূষনে মৃত বুড়িগঙ্গার শাখানদী

প্রকাশিত: ০৭:২৭ এএম, আগস্ট ১৮, ২০১৪
একুশে সংবাদ: ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে লালবাগ-কামরাঙ্গীরচরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গার একটি শাখানদী। ফলে এখন বর্ষা মৌসুমেও শাখা নদীটির অবস্থা করুণ। এত আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নদীতে যে, কিছুদিন পর নদীটির চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে এলাকাবাসীর অভিমত। প্রতিদিন শাখা নদীর আশপাশের বাসিন্দারা গৃহস্থালির আবর্জনা ফেলছে নদীতে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগৃহীত আবর্জনাও সিটি করপোরেশনের পরিছন্নতা কর্মীরা এই শাখা নদীতে ফেলছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ— প্রতিদিন কয়েক টন আবর্জনা পড়ছে বুড়িগঙ্গার শাখা নদীতে। সিটি করপোরেশনের ক্লিনারদের পাশাপাশি, আশপাশের বাসিন্দাদের দোষারোপ করেছেন তারা। ফলে নানামুখী ভরাটে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়কার প্রবহমান নদীটি। ভরাট-দূষণে মৃতপ্রায় নদীটি বাঁচাতে পরিবেশবাদীরা আর্তনাদ করলেও এসবের কর্ণপাত করছে না সংশ্লিষ্টরা। দেখা গেছে, হাজারীবাগ কোম্পানীঘাটসংলগ্ন বুড়িগঙ্গার শাখা নদীতে বিভিন্ন আবর্জনা পরিষ্কারের গাড়িতে করে আবর্জনা ফেলছেন এলাকাবাসী। এছাড়া কামরাঙ্গীরচর এলাকাও এখন সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে; কিন্তু এখনও এই এলাকার বেশির ভাগ আবর্জনাই ফেলা হচ্ছে বুড়িগঙ্গার শাখা নদীতে। এখানকার বাসিন্দাদের একজন ইলিয়াস আহমেদ বাবুল। তিনি বর্তমানকে বলেন, সিটি করপোরেশন এখনও ওই এলাকার আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ শুরু করেনি। কোম্পানীঘাট থেকে কামরাঙ্গীরচর লোহার ব্রিজ পর্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর দুপারেই চলছে ভরাটযজ্ঞ। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সাবেক ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২ ও ৬৫ নম্বর নদীসংলগ্ন এলাকার আবর্জনা পরিষ্কার করে বর্জ্য শোধনাগারে না নিয়ে ফেলা হচ্ছে বুড়িগঙ্গার শাখা নদীতে। আরও দেখা গেছে, বেড়িবাঁধ সড়কসংলগ্ন নদীর অংশসহ তীর ভরাট করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা গড়ে তুলেছেন এলাকাবাসী। একটি ট্রাক স্ট্যান্ড, একাধিক সমিতির কার্যালয় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে এসব জায়গায় দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছবিও শোভা পাচ্ছে শাখা নদীর ভরাট করে গড়ে তোলা কিছু স্থাপনায়। নদীর জায়গার দখল পাকাপোক্ত করতে ওই নদীর পারে একটি মসজিদও গড়ে তুলেছেন দখলদাররা। জানতে চাইলে কামরাঙ্গীরচর রহমতবাগের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বুড়িগঙ্গার এই শাখা নদী উদ্ধারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপই নিচ্ছে না। ফলে শাখা নদীটি আর রক্ষা হচ্ছে না। এটি চলে যাচ্ছে দখলদারদের পেটে। কামরাঙ্গীরচর বেষ্টিত বুড়িগঙ্গার চারদিকে দেদার ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। এসব আবর্জনা এলাকায় দুর্গন্ধ সৃষ্টি করছে, দূষিত করছে নদীর পানি। নদীর পার দিয়ে চলাচলকারীরা নাকে রুমাল ছাড়া চলাচল করতে পারে না। আশপাশের কয়েক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাত্রাতিরিক্ত বর্জ্যদূষণে নদীপারের অনেকেই চর্মসহ দূষণজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোম্পানী ঘাটের বাসিন্দা সাফায়েত হোসেন বলেন, কয়েক মাস আগে বিআইডব্লিউটিএ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন মন্ত্রী শাখা নদী পরিদর্শন করে যে কোনো মূল্যে দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদীটি বাঁচিয়ে রাখার কথা বলে গেলেও এরপর আর কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। তিনি বলেন, প্রতিদিন নদীতে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা, এটার কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্যব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন শেখ মো. জাভেদ ইকবাল বলেন, সম্প্রতি বুড়িগঙ্গায় আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে ওই এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণও করছি। তবে শুনছি এখনও এলাকাবাসী নদীতে আবর্জনা ফেলেই চলেছেন। সিটি করপোরেশনের পরিছন্নতা কর্মীরা দখলদারদের সহায়তা করতে নদীতে আবর্জনা ফেলছে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে ক্যাপ্টেন জাভেদ ইকবাল বলেন, সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজ করে থাকে তবে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী প্রকৌশলী ইনামুল হক বলেন, পরিবেশবাদীরা বুড়িগঙ্গা রক্ষার ব্যাপারে কত আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন; কিন্তু সিটি করপোরেশনের কাছে এসব মূল্যহীনই থেকে যাচ্ছে। একুশে সংবাদ ডট কম/মামুন/১৮.০৮.২০১৪

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1