সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামবাসীর নিত্য সমস্যা

প্রকাশিত: ০৪:৪৭ এএম, আগস্ট ১৬, ২০১৪
একুশে সংবাদ : একদিকে টানা বর্ষণ আরেক দিকে ঢুকছে জোয়ারের পানি। দুই ধরনের পানি এক হওয়ায় ভাসছে বন্দরনগরী। পানি ঢুকছে শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে। জোয়ারের পানি ঢুকছে খাল, উপখাল দিয়েও। এতদিন শুধু বৃষ্টির সময় এ দুর্ভোগ পোহাতে হলেও এখন মহানগরীর ৫০ লাখ মানুষের জন্য জলাবদ্ধতা নিত্যদিনের সমস্যা। জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামবাসীর নিত্যদিনের দুর্ভোগ জলাবদ্ধতায় বেহাল চট্টগ্রামের বেশিরভাগ সড়ক- ফাইল ছবি চট্টগ্রাম মহানগরীর ১১টি ওয়ার্ড দিয়ে গেছে শহররক্ষা বাঁধ। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ভেঙে গেছে গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধটি। পতেঙ্গার খেজুরতলা, চরপাড়া ও জাইল্যাপাড়া এলাকায় পানি ঢুকছে বেড়িবাঁধ ভেঙে। আগ্রাবাদ এলাকায় পানি ঢুকছে নাছিরখাল দিয়ে। মহেশখালের জোয়ারের পানি ডুবিয়ে দিচ্ছে হালিশহর। চাকতাই ও রাজাখালী খালের পানি উপচে পড়ছে বাকলিয়া ও খাতুনগঞ্জ এলাকায়। শহররক্ষা বাঁধসহ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ অন্তত দুই ডজন স্থাপনা। কর্ণফুলী তীরবর্তী এলাকাতে বন্দর ছাড়াও আছে তিনটি ইপিজেড, তিনটি জ্বালানি তেলের ডিপো, ভোজ্যতেল সংরক্ষণের সাতটি টার্মিনাল, কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর, জাহাজ মেরামতকারী ড্রাইডক, কাফকো ও সিইউএফএল নামক দুটি সার কারখানা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, তিনটি করাঞ্চল, ভ্যাট কার্যালয়, নৌ এবং বিমানবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। চট্টগ্রামের সাংসদ মইনউদ্দীন খান বাদল জানান, চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকার আট হাজার কোটি টাকায় কর্ণফুলী টানেল, এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু, দুই হাজার কোটি টাকায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের ঘুমদুম পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ, ৩৬ হাজার কোটি টাকায় মহেশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ৪৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এদিকে নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ূয়া বলছেন, 'চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সুরক্ষা ও নগরবাসীকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে জলাবদ্ধতা নিরসনের কোনো ত্বরিত পদক্ষেপ নেই কারোরই। ২৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি নতুন খাল খনন প্রকল্প একনেকে পাস হলেও তা চূড়ান্ত রূপ লাভ করেনি এখনও। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজেও নেই সমন্বয়। কাজ হচ্ছে না মাস্টারপ্ল্যান অনুসারেও। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই এখন কোমরপানিতে ডুবতে হচ্ছে নগরীর বাসিন্দাদের। প্রতিদিন দুই বেলা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে আগ্রাবাদ, হালিশহর, পতেঙ্গা, বাকলিয়া, চাকতাই, খাতুনগঞ্জ, চান্দগাঁওসহ নগরীর নিম্নাঞ্চল। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৪৫ মিলিমিটার। এতেই কোমর সমান পানি হয়েছে নিম্নাঞ্চলে। জোয়ারের ও বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে পড়ায় বাড়ছে নগরবাসীর দুর্ভোগ। জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে সিটি মেয়র এম মনজুর আলম বলেন, 'একনেকে নতুন একটি খাল খননের প্রকল্প পাস হলেও সেটি চূড়ান্ত হয়ে এখনও করপোরেশনে আসেনি। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জলাবদ্ধতা অনেকখানি দূর করবে।' এদিকে শহররক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে থাকায় শঙ্কা বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে। ঝুঁকির মুখে আছে বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় থাকা হাজার হাজার কোটি টাকার পণ্যও। আরও ভারি বর্ষণ হলে এবং জোয়ারের পানি সঙ্গে যুক্ত হলে পানি ঢুকে যেতে পারে বন্দরের ইয়ার্ডে থাকা প্রায় ২৫ হাজার কনটেইনারেও। দেশের বৃহত্তম পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় থাকা পাঁচ শতাধিক গুদামেও নষ্ট হতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য। গুদাম মালিকদের সংগঠন চট্টগ্রাম ঠিকাদার ও কমিশন এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিয়াজুর রহমান বলেন, 'বর্ষা ও জোয়ারের পানি এক হয়ে যাওয়ায় মহাদুর্ভোগে আছি আমরা।' নিয়মিত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় চট্টগ্রামের হালিশহর, বেপারীপাড়া, সিডিএ, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, বাকলিয়া, কাতালগঞ্জসহ নিম্নাঞ্চলে থাকা সহস্রাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্ধলাখ শিক্ষার্থীকে প্রতিদিনই মুখোমুখি হতে হচ্ছে দুর্ভোগের। জুনের টানা বর্ষণে এসব এলাকায় করপোরেশন পরিচালিত ৪৪টি স্কুলে পরীক্ষা পর্যন্ত স্থগিত করতে হয় চসিককে। জলাবদ্ধতার কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে বাণিজ্যিক রাজধানীর ব্যবসা-বাণিজ্যও। আগ্রাবাদ এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি ৪৫টি ব্যাংকের কার্যালয় থাকলেও জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রাহকদের। চাকতাই চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনামুল হক এনাম বলেন, জোয়ার ও বৃষ্টির পানির কারণে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৬-০৮-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1