সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সড়ক দুর্ঘটনারোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন

প্রকাশিত: ০৪:৪০ এএম, আগস্ট ১৬, ২০১৪
একুশে সংবাদ : যোগাযোগ ব্যবস্থা একটি দেশের অর্থনীতির প্রাণ। অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য যত বৃদ্ধি পাইবে সড়ক-মহাসড়কের ওপর চাপও বৃদ্ধি পাইবে সমহারে। সেই বৃদ্ধির সহিত যদি সড়কপথে মৃত্যুমিছিলও দীর্ঘ হয়, তবে বুঝিতে হইবে আমরা পরিণত পরিকল্পনায় আগাইতেছি না। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন হইতে জানা যায় যে, ফি বত্সর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ৩ সহস্রাধিক মানুষ নিহত হইতেছে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে ও হাসপাতাল হইতে অব্যাহতি পাইবার পর নিহতের সংখ্যা যোগ করিলে অঙ্কটি দাঁড়ায় ৫ সহস্রাধিকে। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা ইনস্টিটিউট সারা দেশের মোট তিন হাজার ৫৮০ কিলোমিটার মহাসড়কে ২০৯টি স্থানকে অতি-দুর্ঘটনাপ্রবণ 'ব্ল্যাক সপট' হিসাবে চিহ্নিত করিয়াছে। মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ শতাংশ এবং মোট মৃত্যুর ৯০ শতাংশই ঘটে এই স্থানসমূহে। এই 'ব্ল্যাক স্পট'সমূহ কিনা ছড়াইয়া রহিয়াছে মোট মহাসড়কের মাত্র ৫৫ কিলোমিটার জুড়ে! এগুলোতে রহিয়াছে সরু বাঁক ও নির্মাণ প্রকৌশলগত নানবিধ ত্রুটি। অনেক স্থানে রহিয়াছে অবৈধ হাটবাজার, বাসস্ট্যান্ড ও অন্যান্য স্থাপনা। এই সকল স্থানে লোকসমাগমের প্রাচুর্য ঘটিলেও ট্রাফিক ব্যবস্থা সামান্যই রহিয়াছে। তাহার সহিত যদি চালকদের অদক্ষতা, সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব এবং ফিটনেটবিহীন লক্কড়ঝক্কড় যানবাহনের বিষয়টি আমরা হিসাবে ধরি—তাহা হইলে যেই দুর্ঘটনার মহামারি দেখিতেছি নিত্যদিন, তাহাতে বিস্ময়ের কিছু থাকে না। সড়ক দুর্ঘটনা যেমন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাইতেছে, তেমনিভাবে কর্তৃপক্ষের টনকও যেন অনড় থাকিতেছে। তাহা তখনই একটুখানি নড়াচড়া করে, যখন বিশিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ দুর্ঘটনার শিকার হন। সেই অনভিপ্রেত মৃত্যু লইয়া মিডিয়া ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শোকতাপ ও উত্তেজনা, সভাসমাবেশ ও গবেষণা চলে কিছুদিন ধরিয়া, অতঃপর অবস্থাখানি দাঁড়ায় 'থোড় বড়ি খাড়া'র মতো। সড়ক দুর্ঘটনায় সকল মৃত্যুই মর্মান্তিক। তাহা দুই অঙ্কের সংখ্যায় যখন নিত্য ঘটে এবং নিয়মমাফিক ফাঁকা বুলি ছাড়া যখন কার্যকর পদক্ষেপ খুব কমই দেখা যায়, তখন এই আশঙ্কার কথা উচ্চারণ নিশ্চয়ই অমূলক হইবে না যে—এই মৃত্যুমিছিল আমরা মানিয়া লইয়াছি এবং লইতেছি। ইহাই ভয়ঙ্কর। আমরা জানি, কোথায় সমস্যা রহিয়াছে। আমরা ইহাও জানি সেই সমস্যার সমাধান কী হইতে পারে। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের প্রায় ৩২ শতাংশই ১৫ হইতে ৩০ বত্সর বয়সের মধ্যে। তাহার অর্থ, দেশের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের বিপুলসংখ্যক মানুষকে যেন পঙ্গু করিবার কারখানায় পরিণত হইয়াছে আমাদের সড়কপথ। কয়েক বত্সর পূর্বে প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়াছে—এশিয়া, ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ার ১৫টি দেশের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা নেপালে সবচেয়ে বেশি, দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। সর্বনিম্ন যুক্তরাজ্যে। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বত্সর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার অধিক ক্ষতি হইতেছে। ইহা আমাদের জিডিপির প্রায় দুই শতাংশের সমান। সড়ক ব্যবস্থাপনায় কিছু উন্নতি হইলেও তাহা সড়ক দুর্ঘটনারোধে তেমন কার্যকর কোনো পরিবর্তন সাধন করিতে পারে নাই। নিয়মিত রাস্তা-ঘাট সংস্কার, সমপ্রসারণ, ডিভাইডার তৈরি, চালকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, ওভারলোডেড ও দ্রুতগামী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক পুলিশসহ সকলের জবাবদিহিতা ও দায়িত্বশীলতা প্রতিষ্ঠা এবং সড়ক নিরাপত্তাজনিত পাঠক্রম পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করিবার মাধ্যমে ইহার প্রতিকার করা যাইতে পারে। এই সকল ব্যবস্থাপনা আমাদের জ্ঞাত ও উপলব্ধিগত। সুতরাং এখন প্রয়োজন কেবল সদিচ্ছা এবং এই ভয়ঙ্কর অবস্থাটি হূদয়মর্মে অনুধাবন করা। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১৬-০৮-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1