সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ইসলামী দৃষ্টিতে 'তালাক '

প্রকাশিত: ১২:২২ পিএম, আগস্ট ১১, ২০১৪
একুশে সংবাদ : তালাক সম্পর্কিত কিছু কথা। দিগন্ত টেলিভিশনে সরলপথ অনুষ্ঠানে তালাক সংক্রান্ত একটি মাস’আলা দিতে গিয়ে প্রফেসার কাজী ইব্রাহিম কোরআন বিরোধী একটা মাস’আলা দিলেন এমনকি রাছুল (ছ:) হাদীস এর ধার ধারলেন না তিনি বলে দিলেন ওমর রা. যেহেতু বলেছে সেটা তালাক হয়ে গেছে। এবার আলোচনা করা দরকার কি ফতোয়া? সরাসরি টেলিভিশন প্রশ্ন উত্তর পর্বে অল্প বয়স্ক এক ভাই টেলিফোনের মাধ্যমে প্রশ্ন করলেন আমি রাগ করে ভয় দেখানোর জন্য আমার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে ফেলেছি আমি সেটা মন থেকে বলিনি এবং আমি এর জন্য আল্লাহর কাছে অনেক মাফ চেয়েছি। সেটা কি তালাক হয়ে যাবে? প্রফেসার কাজী ইব্রাহিম আল্লাহ্র কোরআন এবং রাসুলের হাদীস এর তোয়াক্কা না করে ওমরের রা. বরাদ দিয়ে হাদীস আওরিয়ে উত্তর দিলেন আপনার তালাক হয়ে গেছে। কোরআনে সূরা বাকারা তালাক সম্পর্কে প্রফেসার ইব্রাহিম যে পড়ে নাই সেটা আমি সহ কেউ বিশ্বাস করবে না। আল্লাহর রাসুল (ছ:) বলেছেন রাগ অবস্থায় তালাক এবং গোলাম আযাদ গ্রহন যোগ্য নয়। প্রফেসার ইব্রাহিম সাহেব কিভাবে নবীর উম্মত সেটাই চিন্তার বিষয়। কারণ, ওমর রা. নিজেই এবং তার পুত্র একবার তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছিলেন সেটা নিম্নে তিনটি হাদীস বর্ণনা করলেই বুঝতে পারবেন। হাদীস তিনটি কুর’আনুল কারীম এর ৬৫ এবং ১০১৫ নং পৃষ্ঠা থেকে হুবহু উদৃত করছি : ক) না’ফে থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই ইবনে ওমর (রাযিআল্লাহু আনহুমা) ‘ইলা’ (চার মাস স্ত্রী সংস্পর্শ পরিত্যাগের কসম করা) সম্পর্কে বলেন, যার উল্লেখ আল্লাহ্ কুরআনে করেছেন যে, নিদির্ষ্ট সময় (চার মাস) অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী হয় তার স্ত্রীকে বৈধ পদ্ধতিতে রাখবে, আর না হয় তালাক দিবে। (বুখারী, হাদীস নং ৫২৯০) খ) না’ফে, ইবনে ওমর (রাযিআল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণনা করেন যে, যখন চার মাস অতিবাহিত হয়ে যায়, তখন তালাক দেয়া পর্যন্ত (স্ত্রী) অপেক্ষা করবে। স্বামী তালাক না দেয়া পর্যন্ত তালাক হবে না। উসমান, আলী, আবু দারদা এবং আয়শা (রাযিআল্লাহু আনহুম) সহ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ) আরো বার জন সাহাবী থেকে এমত বর্ণিত হয়েছে। (বুখারী, হাদীস নং ৫২৯১) গ) আবদুল্লাহ্ ইবনে উমার (রা:) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (সা:)-এর জীবদ্দশায় তিনি তার ঋতুবতী স্ত্রীকে তালাক দিলে উমর ইবনুল খাত্তাব রাসূলুল্লাহ্ (সা:)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস কররেন। রাসূল (সা:) বললেন: তাকে (তোমার পুত্রকে) বলো সে যেনো তার স্ত্রী ‘রুজু’ করে (ফিরিয়ে নেয়) এবং ‘তুহর’ বা ঋতু থেকে পবিত্র হওয়া পর্যন্ত এবং তারপর ঋতুবতী হয়ে (পুনরায়) পাক না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী হিসেবেই রেখে দেয়। অত:পর ইচ্ছা করলে তাকে রাখবে অন্যথায় যৌন-মিলন না করে তালাক দিবে। এভাবে ইদ্দত পালনের সুযোগ রেখে আল্লাহ্ তা’য়ালা স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে আদেশ করেছেন। বু.খা:- ৫২৫১। হাদিস তো আছেই এবং মুসলমানের পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনের ৬৫ নং সূরা তালাক ১-৫ আয়াতে তালাক এর ব্যাপারে বিস্তারিতই বিদ্যমান। আপনাদের অনেকরই হয়তো জানা আছে নবী করিম (ছ:) তাঁর সব স্ত্রীদের তালাক দিয়ে এক মাস ঘর ছাড়া ছিলেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না কোন কোন স্ত্রীদের জন্য রাছুল (ছ:) এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিরমিযী ৩২৫৬ নং হাদিসটি পঠনে পরিষ্কার হবে। ‘হে আমীরুল মুমিনীন। নবী করীম (সা:) এর সেই দুজন স্ত্রী কে কে যাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন, তোমরা দুজন যদি অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর দিকে রুজু হও তবে ভালো, কারণ তোমাদের দু’জনের অন্তর ঝুঁকে পড়েছে’ (৬৬:৪)? ওমার (রা:) বলেন, হে ইবনে আব্বাস! আশ্চর্য (তুমি এটুকুও জান না)! যুহরী (র) বলেন, আল্লাহর শপথ! এই কথা জিজ্ঞেস করা তার নিকট অপমন্দ লেগেছে, কিন্তু তিনি তা গোপন করেনি। ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন, তিনি আমাকে বললেন, তারা দু’জন আয়েশা ও হাফসা (রা:)। ইমাম নাসায়ী মুহাম্মদ ইবনে লাবিদের বর্ণনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন:- এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক এক সাথে দিয়েছেন এ সংবাদ রাসুল (ছ:) এর নিকট পৌছালে তিনি রাগান্বিত হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, তোমরা কি আল্লাহর কিতাবের প্রতি উপহাস করছ? অথচ আমি এখনও তোমাদের মধ্যেই রয়েছি। এ সময় এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো হে আল্লাহ্র রাসুল! আমি তাকে হত্যা করব। (মাআরেফুল কোরআন ১২৭ পৃষ্ঠা) এ হাদীসটি থেকেও বুঝা যায় এই ভাবে তালাক প্রদান কারী এবং আল্লাহর কিতাব ও রাসুল বিরোধী ফতোয়া দিয়ে তালাক কবুল হওয়ার ফয়সালাকারী উভয়ই হত্যার হকদার। যদি কেউ না ভুলবশত করে থাকে। তবে প্রফেসার ইব্রাহিম এর মত লোকের জন্য ক্ষমা পাওয়া অসম্ভব। এই সমস্ত হাদীস থাকার পরও যদি এইরকম কোরআন বিরোধী মাস’আলা কেউ দেয় সে কিভাবে মুহাম্মদ (ছ:) এর উম্মত বলার এবং রাসুল (ছ:) সাফায়্যাত পাওয়ার দাবী করতে পারে। এইসব কর্মে দাবীদার পাপীষ্ঠ বান্দাদের জায়গা যে কোথায় সেটা আল্লাহ্ই ঠিক করবেন। এবং মানুষের চিন্তা করা দরকার। প্রকৃতপক্ষে এরা সাহাবাদেরই উম্মত। আল্লাহ্র ভয় এদের অন্তরে নেই। এই তথাকতিত আলেম সাহেবেরা বলে রাসুল (ছ:) যেটা করেন নাই সেটাই বেদাত তাহলে এসব কর্মগুলি কি? কাজেই রাগের মাথায় কোন পুরুষ যদি স্ত্রীকে এক সাথে ১.২.৩ তালাক বলেও ফেলে সেটা তালাক হওয়ার কোন কারণ নাই এবং রাছুল ছা. এর হাদিস অনুযায়ী এক তালাক হিসাবে গন্য হতে পারে যদি স্বামী স্ত্রী উভয়েই তা মেনে নেয়। যেহেতু রাছুল ছা. বলেছেন রাগের মাথায় তালাক দিলে সেটা গ্রহন হবে না। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/১১-০৮-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1