সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

‘কিডনি’ ভালো রাখার পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৭:৫০ এএম, জুলাই ২৩, ২০১৪
একুশে সংবাদ : কিডনি অকেজো হলে বাঁচার সম্ভাবনা কম। চিকিৎসা নিয়েও বেশিদিন বাঁচা যায় না। কিডনি অকেজো হওয়ার আগেই আপনাকে সতর্কতার সাথে চলতে হবে। বয়স ৬০ পার হলে কিডনি অকেজো হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই থাকে। বাইরে যতই তরতাজা থাকুন, ভিতরে কী চলছে বোঝার উপায় নেই৷ তাই সাবধান! বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়ে সতর্ক করলেন তা উপস্থাপন করা হলো। বয়স বাড়লে, যদি প্রেশার-সুগারের দোষ না থাকে, কিডনি ভালো রাখার দু'টি দাওয়াই জানা আছে আমাদের, প্রোটিন কম খাওয়া আর পানি খাওয়া ঘণ্টায় ঘণ্টায়। নিরামিষ খেতে পারলে তো কথাই নেই। তার উপর যদি ইউরিয়া-ক্রিয়াটিনিন নর্মাল থাকে তো হয়েই গেল। আর যাই হোক, কিডনি যে শেষপর্যন্ত সঙ্গ দেবে তা একেবারে পাক্কা। কিন্ত্ত এই বিশ্বাসে পানি ঢেলে হঠাৎ শোনা গেল দুঃসংবাদ৷ বিশ্ব কিডনি দিবসে ডাক্তাররা জানালেন, কোনও অসুখ-বিসুখ না থাকলেও বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কিডনি বুড়ো হয়, ভাটার টান আসে তার কার্যকারিতায়, সাবধান না হলে সামান্য ছুতোনাতায় সে বিগড়ে বসে। অনেক সময় রক্ত পরীক্ষা করেও বিপর্যয়ের খবর পাওয়া যায় না৷ আর সবচেয়ে বিপদের কথা, কম প্রোটিন আর বেশি পানির যুগলবন্দীতেই অনেক সময় বিপদ ত্বরান্বিত হয়৷ শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য প্রতি কেজি ওজনে এক গ্রামের হিসেবে প্রোটিন খেতে হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এতে কিডনির ওপর চাপ পড়ে না৷ না খেলে বরং অপুষ্টি হয়ে, পেশি ক্ষয় হয়ে এমন পরিস্থিতি হয় যে কিডনি খারাপ হলেও তা চট করে রক্ত পরীক্ষায় ধরা যায় না৷ অ্যানিমিয়ার আশঙ্কা তো আছেই৷ কাজেই মাপমতো প্রোটিন খেতে হবে৷ কম বয়সে মাঝে মধ্যে একটু বেশি খেলে ক্ষতি নেই৷ কিন্তু যেই সিনিয়ার সিটিজেন হলেন হিসেবের কথা মাথায় রেখে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে৷ ডায়াটেশিয়ানের সাহায্য ও জটিল হিসেবের মধ্যে ঢুকতে না চাইলে মোটামুটি একটা নিয়ম মেনে চলুন৷ যেমন, সকালে কোনও সিরিয়াল বা রুটি-তরকারির সঙ্গে ছোট এক কাপ দুধ, দই বা অল্প ছানা খান। দুধ-দই ভালো না লাগলে অল্প খিচুড়ি খাওয়া যায়৷ মাঝে মধ্যে ডিম বা সসেজ, বেকন খেতে পারেন৷ তবে সেদিন দুধ-দই-ছানা-খিচুড়ি বাদ যাবে৷ দুপুরে এক পিস মাছ/চিকেন/ডিম, নিরামিষাশী হলে অল্প পনির/ছোলা/রাজমা খান৷ সঙ্গে এক-আধ কাপ ডাল খেলে আর দুধ, দই, ছানার মিষ্টি না খাওয়াই ভালো৷ বিকেলে অল্প ছোলা বা বাদামে অসুবিধে নেই৷ ছানাও চলতে পারে৷ রাত্রে আবার খান দুপুরের নিয়মে। এবার পানি। পানি কম খাওয়া যেমন খারাপ, অতিরিক্ত খেলেও বিপদ। বেশি পানি বার করতে কিডনির খাটনি বাড়ে। ক্লান্ত হয়৷ তারপর হাল ছেড়ে দেয়৷ কাজেই পানি খান হিসাব করে। সুস্থ মানুষের দিনে সাধারণত দেড়-দু' লিটার ইউরিন হওয়া দরকার। তার জন্য দু-আড়াই লিটার পানি খাওয়াই যথেষ্ট৷ গরমে বা খাটাখাটনি বাড়লে আরেকটু বাড়তে পারে৷ কিন্ত্ত খুব বেশি নয়৷ দিনে ৫-৬ লিটার পানি খেলে কিডনি দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা বেশ প্রবল। কিডনি বাঁচানোর আরও নিয়ম ১. সুষম খাবার খেয়ে ও দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করে ওজন ঠিক রাখার চেষ্টা করুন৷ বেশি মোটা হলে যেমন বিপদ, বিপদ অপুষ্টি হলেও৷ ২. নুন কম খান৷ কাঁচা, ভাজা নুন, আচার, পাঁপড়, চাটনি, নোনতা বিস্কুট, চিপস ইত্যাদি এই বয়সে যত কম খাবেন, ততই ভালো থাকবেন৷ লো সোডিয়াম নুন খেলে কোনও ক্ষতি নেই৷ এই ধারণাটা ভুল৷ ৩. ধূমপান ছেড়ে দিন৷ মদ্ পানে দিনে এক-আধ পেগের বেশি নয়৷ ৪. সুগার বেশি থাকলে ওষুধ খেয়ে ও নিয়ম মেনে তাকে বশে রাখুন৷ না হলে কিডনির বয়স আপনার বয়সের তুলনায় দ্রুত গতিতে বাড়বে৷ ৫. একই নিয়ম হাইপ্রেশারের ক্ষেত্রেও। প্রেশার চেক করুন নিয়মিত৷ ৬. কারণ প্রেশার হঠাত্‍‌ হঠাত্‍‌ বেড়ে গেলে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে কিডনির ওপর৷ ৭. হৃদরোগ থেকেও কিডনির সমস্যা ত্বরান্বিত হতে পারে৷ ৮. জন্মগত কিডনির অসুখ থাকলে বিশেষ সতর্কতা দরকার৷ ৯. এই বয়সে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া একটিও ওষুধ নয়৷ কিডনি যদি দুর্বল থাকে, ক্ষতিকর ওষুধের একটি ডোজেই ঝামেলা হয়ে যেতে পারে৷ ১০. ৪০ পেরোলে ডাক্তারের পরামর্শ মতো কিডনি ফাংশন চেক করান৷ হাইপ্রেশার, সুগার, জন্মগত কিডনির অসুখ, হৃদরোগ থাকলে বিশেষ করে। ৬০-এর পর রিপোর্ট নর্মাল এলেও কিডনির কার্যকারিতা তলে তলে কমতে পারে৷ কাজেই সঠিক তথ্য পেতে ডাক্তারের পরামর্শ দরকার৷ তিনি এমডিআরডি নামের একটি ফর্মূলায় রিপোর্ট, বিএমআই ইত্যাদি বসিয়ে জিএপআর বা গ্লোমেরুলো ফিলট্রেশন রেট দেখে কিডনি ঠিক আছে কিনা তা বুঝবেন৷ যাদের বিপদ বেশি ১. নিজের বা ঘনিষ্ঠ কারোর কম বয়স থেকে হাইপ্রেশার ও সুগার থাকলে৷ ২. ওজন বেশি হলে৷ ৩. বেশি ধূমপান করলে৷ ৪. জন্মগত কিডনির অসুখ থাকলে৷ ৫. দীর্ঘদিন বেশি মাত্রায় ব্যথার ওষুধ খেলে৷ ৬. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ভেষজ ওষুধ বেশি খেলে৷ উপসর্গ কিডনির কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ নষ্ট হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় তেমন উপসর্গ হয় না৷ তাও সাধারণভাবে যা যা হতে পারে তা হল-মুখ-পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া৷ ১. হঠাত্‍‌ করে হাইপ্রেশার হওয়া বা প্রেশার খুব বাড়া৷ ২. রাত্রে বার বার টয়লেট যেতে হতে পারে৷ ইউরিনে জ্বালা হয় বা রক্ত পড়ে অনেক সময়৷ ইউরিন ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়৷ এই সব সমস্যাকে ইনফেকশন বা প্রস্টেটের কারণে ভেবে অবহেলা করলে বিপদ বাড়ে৷ ৩. রোগ বেড়ে গেলে শ্বাসকষ্ট, বমি বা গা গোলানো, অপরিসীম দুর্বলতা, খিদে কমে যাওয়া, মাথা ব্যথা, অনিদ্রা, প্রবল চুলকানি দেখা দিতে পারে৷ সমাধান রোগীকে দেখে কিছু পরীক্ষা করা হয়৷ যেমন, ইউরিনের সঙ্গে প্রোটিন বেরোচ্ছে কিনা, কিডনি ফাংশন টেস্ট বিশেষ করে সিরাম ক্রিয়াটিনিন মাপা, পেটের সোনোগ্রাফি করা, দরকার হলে ডপলার স্টাডিও করা হয়৷ এ সবে রোগ ধরা না গেলে কিডনি বায়োপ্সি করতে হতে পারে৷ ক্রনিক কিডনি ডিজিজ পাওয়া গেলে ওষুধের সঙ্গে নুন, পানিও প্রোটিনের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হয়৷ মানতে হয় নিয়ম৷ ডায়ালিসিসেরও প্রয়োজন হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে৷ কী হয় কিডনিতে বয়স বাড়লে কিডনি শুকিয়ে ছোট হতে থাকে, তার মধ্যে রক্ত চলাচল কম করে৷ ফলে দূষিত পদার্থ বার করা, জল-লবণ-ক্ষার-অম্লর ব্যালেন্স বজায় রাখার কাজে ব্যাঘাত হয়৷ সহ্য ক্ষমতা কমে যায়৷ সামান্য অনিয়মেই অকেজো হয়ে যেতে পারে৷ রক্তচাপ বেড়ে স্ট্রোক ও হার্টঅ্যাটাকও হয় অনেক সময়৷

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1