সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মাদকে নিরাপদ নয় যুবসমাজ!

প্রকাশিত: ০৪:৪০ এএম, জুলাই ২১, ২০১৪
একুশে সংবাদ : দেশে এখন মাদক এক ভয়ঙ্কররূপে আবির্ভূত হয়েছে। সীমান্তপথে এ দেশ থেকে ভারত ও মিয়ানমারে যাচ্ছে চাল, ডাল, তেল, ইলিশসহ নানা মূল্যবান দ্রব্য। বিনিময়ে আসছে ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা ভয়ঙ্কর মাদক। মাদকের এ ভয়ঙ্কর বিস্তারে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে দেশের সম্ভাবনাময় যুবসমাজ, যাদের হাতে রয়েছে বাংলাদেশ গড়ার চাবিকাঠি। পাশাপাশি মাদকের ভয়ঙ্কর থাবা দেশের শিশু-কিশোর এবং কিশোরীদের একটি অংশকেও গ্রাস করে নিচ্ছে। দেশের আনাচে-কানাচে পৌঁছে গেছে মরণ নেশা ইয়াবাসহ নানা মাদক। আর তার প্রধান শিকার হচ্ছে কিশোর-তরুণ-যুবকরা। এভাবে পুরো সমাজকেই ক্রমে গ্রাস করে ফেলছে মাদক। এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হিসেবে সমাজে অপরাধের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ। তবে বেসরকারি নানা গবেষণা সংস্থার মতে, দেশে ৫৫ লাখেরও বেশি মাদকাসক্ত রয়েছে। মাদকসেবীদের পাল্লায় পড়ে আজকাল শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের সন্তানরাও বিপথগামী হচ্ছে। তারা ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনের মাধ্যমেই সাধারণত মাদক জগতে পা বাড়ায়। এক পর্যায়ে মাদক তাদের গ্রাস করে নেয়। মাদকের নেশায় পড়ে এখন বস্তি এলাকার শিশুরাও গাঁজা, ফেনসিডিল থেকে শুরু করে হেরোইনেও আসক্ত হয়ে পড়েছে। দেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মাদক তৈরি হচ্ছে। স্থলপথ ছাড়াও জল ও আকাশপথেও আসে এ মরণ নেশার চালান। আর যুবসমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ আসক্ত হয়ে দিন দিন ঝুঁঁকছে মৃত্যুর দিকে। ইউএনডিপির এক তথ্যে জানা যায়, পৃথিবীতে মাদকাসক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শতকরা দুই ভাগ। সমাজ গবেষকদের মতে, বাংলাদেশে এ হার আরও বেশি হবে। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, মাদক একটি সম্ভাবনাময় যুবসমাজকে ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অস্ত্র, ডাকাতি, খুন, ছিনতাইসহ দেশে প্রতিনিয়ত যেসব অপরাধ ঘটে চলছে সেসবের বেশির ভাগের পেছনেই রয়েছে মাদক। সৃষ্টি হচ্ছে হাজার হাজার ঐশীর। বছরে মাদকের পেছনে ব্যয় হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর মাদকসেবনকারীদের প্রায় ৮৫ শতাংশের বয়স ১৩ থেকে ২৯ বছর। তাদের একটি বিশাল অংশই মাদকদ্রব্য কেনার জন্য টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক এবং সুনাগরিক তৈরির পথেও মাদক বাধার সৃষ্টি করছে। মাদকাসক্তদের বাঁচাতে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে ইয়াবার বিস্তার রোধ করতে হলে মাদক পাচারের রুটগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনে নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করে বড় ধরনের একটি অভিযান চালানো জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশের অভ্যন্তরে যারা মাদক বিক্রি করছে তাদেরও কঠোরভাবে দমন করতে হবে। একইসঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবক, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সমাজের সর্বস্তরে মাদকবিরোধী অবস্থানকে শক্তিশালী করতে হবে। নৈতিক শিক্ষা ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। অল্প বয়সী কিংবা তরুণ-তরুণীদের এমন ভয়াবহ মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সর্বস্তরের লোকজনের সমন্বয়ে এ ব্যাপারে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়তে হবে। মনে রাখতে হবে, মাদকমুক্ত দেশ গড়তে না পারলে সুস্থ সমাজ গঠন কঠিন হবে। সর্বগ্রাসী মাদকের ছোবল থেকে দেশের যুবশক্তিকে নিরাপদ রাখাও সম্ভব হবে না। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২১-০৭-০১৪:

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1