সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ভোলার শহররক্ষা বাধ ভেঙে বিস্তৃর্ন এলাকা প্লাবিত

প্রকাশিত: ০৪:৩৭ এএম, জুলাই ১৫, ২০১৪
একুশে সংবাদ ডেস্ক :মেঘনার অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে ভেঙ্গে গেছে ভোলা শহররক্ষা বাঁধ । সোমবার বিকেল ৫টার দিকে শহরতলীর নাছিরমাঝি এলাকায় বাঁধের ১০ ফুট অংশ ভেঙে পানি প্রবেশ করে। তীব্র¯্রােতে প্রবেশকরা পানিতে তলিয়ে গেছে ধনিয়া ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম। পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে কয়েক শত পরিবার। জরুরী ভিত্তিতে বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামত করা না হলে পানিতে ভোলা শহর প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, দুপুরে বাঁধে ফাটল দেখা দিলে এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডে জানায়। কিন্তু পাউবো কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বিকেলে বাঁধ ভেঙে যায় । ধনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন জানান, দুপুরের দিকে বাঁধে ফাটল দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানাই । কিন্তু তারা কোন ব্যাবস্থা না নেয়ায় বিকেলে বাঁধের বিশাল অংশ ভেঙে এলাকায় পানি প্রবেশ করে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম বলেন, জোয়ারের পানি কমলে বাঁধ মেরামত করা হবে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙা বাঁধ মেরামতের দাবী এলাকাবাসীর। অন্যদিকে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত ভোলার ৩টি উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের লাখো মানুষের যেন চরম মানবিক বিপর্যয় চলছে। অস্বাভাবিক জোয়ারে ৩য় দিনের মত প্লাবিত হয়েছে ওই সব ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রাম। ঘর-ভীটা রাস্তা-ঘাট, পুকুর, ঘের ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে ৩/৪ফটু পানির নিচে। এতে পানিবন্ধী হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লাখো মানুষ। পানিবনন্ধী মানুষের ঘরে চুলো জ্বলছে না, দিন মজুরেরা কাজে যেতে পারছেনা। ৩দিন ধরে তারা পানিতে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। পানির তোড়ে বহু ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। ঘূর্ণিঝড় মহাসেনে ক্ষতিগ্রস্থ বাধ নির্ধারিত সময়ে মেরামত না করার ফলে এসব মানুষ ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সোমবার ৩ উপজেলায় নতুন করে ৫০গ্রাম প্লাবিত হয়। ফলে পানির কষ্টে বিপন্ন হয়ে পড়েছে উপকূলের মানুষের জীবন-জীবিকা। ভোলার জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম রেজা সোমবার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সাথে তিনি দ্রুত বাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২ দিনের তুলনায় সোমবারের জোয়ারের গতি আরো অধিক বলে এলাকাবাসী জানায়। শনিবার মেঘনার পানি বিপদ সীমার ৩ দশমিক ৮০ মিটার উচ্চতায় প্রভাবিত হলেও রোববার তা বেড়ে ৪ ফটু উচ্ছতায় প্রভাবিত হয়েছে। এর পরিমান আরো বৃদ্ধি পাবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলার চরফ্যাশন, মনপুরা ও দৌলতখান এ ৩টি উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে তিন দফা জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে, চরফ্যাশনের মাদ্রাজ, হাজারীগঞ্জ, মুজিব নগর, আসলামপুর, কুকরী-মুকরী, ঢালচর, জাহানপুর, মনপুরার দক্ষিন সাকুচিয়া, উত্তর সাকুচিয়া, মনপুরা ও হাজিরহাট এবং দৌলতখান উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়ন। এসব এলাকার কোথাও বাঁধ নেই, কোথাও মহাসেনে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামত হয়নি, কোথাও নির্ধারিত সময়ে বাঁধ মেরামত হয়নি আবার কোথায় কখনই বাঁধ ছিলনা। পূর্নিমায় সৃষ্ট জোয়ারের চাপে ভোলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ফলে এসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে উপকূলের নির্মাঞ্চলও। লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ার কারনে মানুষ ঘর-ভীটা ছেড়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে। এদিকে, জোয়ারের পানির সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে নদী ভাঙ্গনও। সামরাজ, বেতুয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ব্যাপক ভাঙ্গনের ফলে ঘর-ভীট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম বলেন, চরফ্যাশনের কুকরী ও মনপুরার সাকুচিয়া পয়েন্ট দিয়ে বাঁধ নির্মানের কাজ চলছে, কিন্তু প্রবল জোয়ারের কারনে কাজের বিঘœ ঘটছে। জোয়ারের চাপ কমে গেলে পুরো দমে কাজ চলবে। ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম রেজা বলেন, প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি, মানুষের দুর্বিসহ অবস্থা, যেন মাববিক বিপর্যয়। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেছি, তারা সাহায্য নয়, বাঁধ মেরামতের দাবী জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। খুব দ্রুত বরাদ্দ দেয়া হবে।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1