সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

১৯ এপ্রিল পাবনার "ডাববাগান যুদ্ধদিবস"

প্রকাশিত: ০১:১৫ পিএম, এপ্রিল ১৮, ২০১৪
jjjjjjjjjjjjjjপ্রতিনিধি পাবনা ॥ ১৯ এপ্রিল পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক ‘ডাববাগান যুদ্ধদিবস'। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে সাঁথিয়া উপজেলার ডাববাগান বর্তমানে শহীদ নগর নামক স্থানে পাক হানাদার বাহীনির সাথে মুক্তিযোদ্ধা ও ইপিআর বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। স্বাধীনতার র্দীঘদিন পরে ওই স্থানে ‘বীরবাঙ্গালি’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হলেও রক্ষণা বেক্ষনের অভাবে অযতœ আর অবহেলায় পরে আছে স্মৃতিসৌধটি। পাবনা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পূর্বে উত্তর জনপদের প্রবেশদ্বার নগরবাড়ী-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পাইকরহাটি গ্রামের একটি পাড়ার নাম ছিলো ডাববাগান। বর্তমান নাম হয়েছে ‘শহীদনগর’। ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল ঢাকা থেকে উত্তর জনপদে প্রবেশের পথে পাক হানাদার বাহিনী ‘ডাববাগান’ অর্থাৎ বর্তমান শহীদনগর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা ও ইপিআর বাহীনির সদস্যদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হন। সে সময় মুক্তিসেনাদের পক্ষে ওই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইপিআর সুবেদার গাজী আলী আকবর (বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার শান্তিডাঙ্গা গ্রামে)। এ যুদ্ধে বেশিরভাগ যোদ্ধা ছিলেন বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী, আনসার সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক জানান, একাত্তরের ১৯ এপ্রিল দুপুরে নগরবাড়ী ঘাট হয়ে এই রাস্তা দিয়ে পাকিসেনারা বগুড়া যাওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে মুক্তিসেনারা সাঁথিয়া উপজেলার ডাববাগানে অবস্থান নেন। পাকিসেনারা সম্মুখ যুদ্ধে টিকতে না পেরে পিছু হটে নগরবাড়ী ফিরে যায়। যুদ্ধে প্রায় ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়। এদিকে ওই সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ইপিআর হাবিলদার মমতাজ আলী, হাবিলদার আব্দুর রাজ্জাক, নায়েক হাবিবুর রহমান, সিপাহী এমদাদুল হক, সিপাহী ঈমান আলী, সিপাহী রমজান আলীসহ আরও অনেক ইপিআর সদস্য ও নাম না জানা বহু মুক্তিযোদ্ধা। সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন জানান, সম্মুখ যুদ্ধে পরাজয় বরণের পর পিছু হটে যাওয়া পাকিবাহিনী নতুন করে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। শক্তি বৃদ্ধি করে রাতে আবার আক্রমণ করে পাকিসেনারা। এবার পাকিবাহিনীর বিশাল শক্তির কাছে টিকতে না পেরে মুক্তিসেনারা পিছু হটে গেলে পাকিসেনারা গ্রামবাসীর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। একে একে পুঁড়িয়ে দেয় ডাববাগানের পার্শ্ববর্তী রামভদ্রবাটি, কোড়িয়াল, বড়গ্রাম, সাটিয়াকোলা গ্রাম। পাকিসেনারা নির্বিচারে গুলি চালায় নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর। লোকজনদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরে এনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে শ’ শ’ স্বাধীনতাকামী গ্রামবাসীকে। তাদের মধ্যে করমজা ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ডা. আফাজ উদ্দিন, আব্দুল লতিফ, শেখ কাজেম আলী খাঁ, খোয়াজ শেখ, পিয়ার মন্ডল, জাকের আলী শেখ, সৈয়দ আলী মোল্লা, মহর আলী, জগত নারায়ণ বিশ্বাস, সন্তোষ, শাহজাহান বিএসসি, ফরিদা পারভীন প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এখানে ‘বীরবাঙ্গালি’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। ওই বছরের ১৯ এপ্রিল স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। তবে কিন্তু বর্তমানে রক্ষণা বেক্ষনের অভাবে অযতœ আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে স্মৃতিসৌধ। এমনকি সেদিনের যুদ্ধে শহীদদের কবর গুলোও চিহ্নিত করা হয়নি। বর্তমান প্রজম্মের  অনেকেই যানেনা এই যুদ্ধের ইতিহাস। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসীদের দাবী স্মৃতিসৌধটি সঠিক ভাবে রক্ষনা বেক্ষন করে এর সৌন্দয্য ফিরিয়ে আনা হক। এদিকে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সাঁথিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে দিবসটি পালনে নানা কর্মসূচী নেয়া হয়েছে।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1