সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বেড়িবাঁধে কাপড়ঘেরা নৌকায় প্রেমের আড্ডার নামে চলছে অশ্লীলতা

প্রকাশিত: ০৮:৩৩ এএম, এপ্রিল ১৫, ২০১৪
একুশে সংবাদ :  ডিঙ্গি বা খোলা নৌকা নয়। ছাউনি দেয়া। দু’পাশ কাপড় দিয়ে মোড়ানো নৌকা। ভেতরে চটের বিছানা। নির্জনে সময় কাটানোর জন্য এ আবরণ নয়। ভেতরে চলছে অশ্লীলতা। প্রিয় মানুষের সঙ্গ পাওয়ার জন্য উঠতি বয়সী অনেকেই বেছে নেয় এ নৌকা। এ সুযোগে নৌকার মাঝিরাও মেতে ওঠে অনৈতিক ব্যবসায়। নিত্যদিনের এ চিত্র মিরপুর বেড়িবাঁধের কোলঘেঁষে থাকা শুকিয়ে যাওয়া জীর্ণ নদীর বুকে। আর এ অবস্থায় এলাকাবাসী এর নাম দিয়েছে ডেটিং স্পট। গতকাল সরজমিনে এ এলাকা ঘুরে দেখা যায় প্রকাশ্যেই চলছে এসব অনৈতিক ও অশ্লীল কার্যক্রম। মিরপুর বেড়িবাঁধের চটবাড়ি বটতলায় নবাবের বাগ ঘাটে দীর্ঘদিন ধরে চলছে এই ব্যবসা। প্রেমিক যুগলেরা নির্জনে সময় কাটানোর জন্য বেছে নেয় নৌকা। সেখানে মাঝিরা ফেঁদে বসেছে অন্যরকম ব্যবসা। তারা যুবকদের নারী সাপ্লাই দিচ্ছে। সরবরাহ করছে নানা ধরনের মাদক। আর এ ব্যবসা পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। নৌকা ভাড়া নেয়া হয় ঘণ্টা হিসাব করে। ভাড়ার পরিমাণ প্রতি ঘণ্টায় ১০০০ টাকা। সারা দিনের জন্য নিলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। ঘণ্টা হিসেবে নৌকা ভাড়া দেয়ার পাশাপাশি চাহিদামত মেয়েও সাপ্লাই দেয় আলী মাঝি। তার নৌকায় মদ আর খারাপ মেয়েদের আড্ডা। তার নৌকায় আছে নানা যৌন উপরকণ। এগুলোর জন্য আলাদা ভাবে গুনতে হয় মোটা টাকা। আর সেই সঙ্গে আছে বকশিশ। প্রেমিক যুগল যখন কাপড়ঘেরা নৌকায় মত্ত তখন মাঝিরা কাজ করে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে। নবাবের বাগ এলাকায় এমন ৫ থেকে ৮টি ঘাট আছে। নদী পথে মিরপুর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত যাওয়া গলেও মাঝিদের নির্দিষ্ট একটা সীমানা আছে। রহস্যজনক কারণে তারা সে সীমানার বাইরে যায় না। সংশ্লীষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বিদ্যুতের খুঁটি ছাড়াও নির্দিষ্ট পিলার দিয়ে শনাক্ত করা হয়েছে সীমানা। নির্দিষ্ট সীমানায় অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারে না। আধিপত্য দেখাতে পারে না। কথা বলে জানা যায়, জনৈক রাজা ও জাহাঙ্গীর মাঝি নিয়ন্ত্রণ করে নৌকার ঘাট। এরাই এখানকার মাঝিদের নেতা। করা হয়েছে সমিতি। জানা গেল, সমিতি আর পুলিশকে দেয়ার জন্য প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা চাঁদা ওঠে এখান থেকে। এর মধ্যে ৫০ হাজার টাকা টাকা সমিতির। দেড় লাখ টাকা যায় শাহ আলী থানায়। একজন মাঝি জানালেন, আমাদের ঘাটের নির্দিষ্ট কোন মালিক নেই। পুলিশই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য প্রতি মাসে থানায় দেড় লাখ টাকা দিতে হয়। এর বাইরে প্রতিদিন ডিউটি পুলিশকে দিতে হয় নৌকা প্রতি ১০০ টাকা করে। সরজমিনে দেখা যায়, নৌকাগুলোতে সকাল থেকেই শুরু হয় জমজমাট প্রেমের আড্ডা। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। স্থানীয়রা বলেন, বহু দিন ধরেই এ ব্যবসা চলছে। কোনভাবেই এসব বন্ধ করা যাচ্ছে না। পুলিশ প্রতিদিন এসে টাকা তুলে চলে যায়। কাউকে কিছু বলে না। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, যারা প্রথম এ জায়গায় আসে তাদের হারাতে হয় সর্বস্ব। সহজ-সরল লোক পেলেই সে হয়ে যায় মাঝির শিকার। মাঝিরা যাত্রীর জন্য ঘাট ছেড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে জোড়া কোন ছেলেমেয়ে দেখলেই তাদের রিকশার পিছনে ছুটে। বলে, আসেন মামা আমার নৌকায় ভাল ব্যবস্থা আছে, ভাড়াও কম। এখানে খোলা নৌকা নেই বললেই চলে। এক মাঝি জানালেন, এখানে যারা আসে তাদের বেশির ভাগই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া। কমার্স কলেজ, ঢাকা কলেজ ত্রবং জাহাঙ্গীর নগরসহ বিভিন্ন জায়গার ছাত্র-ছাত্রীরাই আসে। নৌকার ভেতরের অশ্লীল কার্যক্রমের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এখানে পরিবার নিয়ে কেউ ঘুরতে আসে না। যোগাযোগ করা হলে শাহ আলী থানার ওসি বলেন, আমরা এসব নিয়ন্ত্রণ করব কেন? তিনি েসব বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এমন দাবি করে বলেন, বরং আমি দায়িত্বে আসার পর নৌকার সব ছই ভেঙে দিয়েছি। তাদের ঘাট থেকে তুলে দিয়েছি। এখন আর এসব হয় না। এখনও এসব হলে আমি শিগগিরই ব্যবস্থা নেব। দেড় লাখ টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন প্রশ্নই ওঠে না। তারা বাঁচার জন্য এসব আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। চামড়ার মুখ বুঝলেন না কত কি বলবে। একুশে সংবাদ ডটকম/এমপি/১৫-০৪-১৪

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1