সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

গানের পাখি কোকিল

প্রকাশিত: ১১:০৪ এএম, এপ্রিল ১২, ২০১৪
একুশে সংবাদ :  কোকিল একটি পরিচিত পাখি। এদের চমৎকার গান বসন্তকালকে মুখরিত করে রাখে। এরা বাসা পরজীবী, অর্থাৎ পরের বাসায় ডিম পেড়ে চলে যায়, তাই এদের আরেক নাম পরভৃত। কোকিল আছে সাহিত্যের পাতায়, মানুষের মুখে, গানে-বাগধারায়। কোকিলকণ্ঠী, বসন্তের কোকিল-এমন কত না উপমায় কোকিল ব্যবহৃত হয়। কোকিলের কুহুতান ছাড়া বসন্ত ভাবা যায় না। তার পরও এখন কোকিল ছাড়াই বসন্ত আসে, চলে যায়। সারা দেশের  মতো মাগুরায় এখন আর আগেরমতো কোকিলের ডাক শোনা যায় না। সুদূর থেকে দু-একটি কোকিলের ডাক ভেসে আসলেও যান্ত্রিক সভ্যতার যাঁতাকলে তা শহরবাসীর কর্ণকুহুরে পৌঁছে না। সুরেলা পাখি কিংবা গানের পাখি হিসেবে কোকিল আমাদের কাছে পরিচিত। গ্রামের মেঠোপথ ধরে বা শহরের আশপাশের গাছ-গাছালির নিচ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দূর থেকে ভেসে আসা কোকিলের সুমধুর সুরে প্রাণের মাঝে ঝঙ্কার তোলেনি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে মজার ব্যাপার হলো পুরুষ কোকিলই শুধু গান গাইতে পারে। স্ত্রী কোকিল কখনও গান করে না। পুরুষ কোকিলের গায়ের রঙ কালো। আর মেয়ে কোকিল ছাই রঙের শরীরে লেজের দিকে ডোরাকাটা দাগবিশিষ্ট। আকার-আকৃতি ও চোখের রঙ উভয় কোকিলেরই একই রকম। পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে বলেই প্রায় সময় লোকচক্ষুর অন্তরালেই থেকে যায় এরা। ১৮ ধরনের কোকিল থাকলেও সচরাচর যে কোকিল দেখা যায় সেটি কালো কোকিল। কোকিল অন্য পাখির বাসায় ডিম পাড়ে। কালো কোকিল সবচেয়ে বেশি ডিম পাড়ে কাকের বাসায়। এপ্রিল থেকে আগস্টে কাক ডিমে তা দেয়। তা দেওয়ার সময় বাসার চারদিকে ঘুরঘুর করে পুরুষ কোকিল কাককে রাগান্বিত করে। তখন কাক তাড়া করে পুরুষ কোকিলকে, আর সে এ সুযোগে মেয়ে কোকিল কাকের বাসায় ডিম পেড়ে চলে আসে। অথবা কাক যখন সামান্য সময়ের জন্য বাসা ছেড়ে যায়, তখনই কোকিল গিয়ে ডিম পেড়ে আসে। কাক যেন টের না পায় সে জন্য তার কয়েকটি বা সব ক`টি ডিম ফেলে দিয়ে কোকিল ডিম পাড়ে। বোকা কাক কিছুই বুঝতে পারে না। সে নিজের ডিমের সঙ্গে কোকিলের ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। ডিম পাড়ার ক্ষেত্রেও কোকিলের রয়েছে এক অসাধারণ ক্ষমতা। ডিম দেওয়ার চূড়ান্ত সময় হওয়ার পরও এরা আরও অতিরিক্ত ২৪ ঘণ্টা সময় তার গর্ভে ডিম ধরে রাখতে পারে। স্বাচ্ছন্দ্যে ডিম পাড়া যায় সে রকম একটি পোষক পাখির উপযুক্ত বাসা খুঁজে বের করে তবেই এরা ডিম দেয়। তবে আরও একটি মজার ব্যাপার হলো, কোকিলের বাচ্চা ফোটার পর তা দেওয়া কাকটি বুঝতে না পেরে নিজের ডিমগুলোই ফেলে দেয় এবং অন্য পাখির জাত হলেও বাচ্চার লালন-পালন করে। অন্যের বাসায় ডিম দিয়ে বাচ্চা ফোটানোর কারণে অনেকে কোকিলকে পরনির্ভরশীল পাখিও বলে থাকে। কোকিলের এমন আচরণের কারণে বাচ্চা কোকিলগুলো শৈশব থেকেই মাতৃস্নেহহীনভাবে বড় হয়। সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই হচ্ছে কোকিলের প্রজনন মাস। কোকিল বৃক্ষচর। পোকামাকড়, শুককীট ইত্যাদি এদের মূল খাদ্য। এছাড়া ফলমূলও খায়। মাগুরার বিশিষ্ট লেখক ও লোকজ ঐতিহ্যের সংগ্রাহক সালাহ্ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোকিল আগের মতো দেখাই যায় না। নতুন প্রজন্ম এসব নিয়ে ভাবে না। কোকিলের বংশধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে একুশে সংবাদ ডটকম/এমপি/১২-০৪-১৪

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1