সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বৈরুতের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদের কথা অস্বীকার করল হিজবুল্লাহ

প্রকাশিত: ০২:১৩ পিএম, আগস্ট ৮, ২০২০
একুশে সংবাদ: লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি গুদামে ক্ষেপণাস্ত্র মজুতের কথা অস্বীকার করেছে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বৈরুত বন্দরে সম্প্রতি যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে তার সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার। বিস্ফোরণের প্রথমদিকে কিছু গণমাধ্যম জানায় যে, ওই গুদামে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র মজুত ছিল। এই খবর নাকচ করে দিয়ে সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লেবাননের জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য কিছু গণমাধ্যম এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত খবর প্রচার করেছে। এসব গণমাধ্যমের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং তারা লেবাননের ভেতরে গৃহযুদ্ধ শুরু করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় এবং দলমতের বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গত মঙ্গলবারের বিস্ফোরণের ব্যাপারে যে তদন্ত হবে তাতে কোনো রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক পরিচয় গুরুত্ব পাওয়া উচিত নয়। ওই বিস্ফোরণকে হিজবুল্লাহ মহাসচিব লেবাননের জন্য মানবিক ও জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই সংকট মোকাবিলায় দেশের মানুষের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। গত মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বৈরুত। ওই বিস্ফোরণে দেড় শতাধিক মানুষ নিহত এবং আরও পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বৈরুতের ওই প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের কারণ এখনও শতভাগ নিশ্চিত না হলেও সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস, বন্দরের গোডাউনে প্রায় ছয় বছর ধরে মজুত রাখা বাজেয়াপ্ত ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিপর্যস্ত বৈরুতের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশটিতে ইতালি, ফ্রান্স, ইরান, ইরাক, কুয়েত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে মানবিক ও মেডিকেল সহায়তা পাঠানো হয়েছে। বিস্ফোরণের তাণ্ডবে বৈরুত শহরের প্রায় অর্ধেকটাই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। বিস্ফোরণের প্রভাব এতটাই তীব্র ছিল যে দেড়শ’ কিলোমিটার দূর থেকেও তা অনুভব করা গেছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় ৪ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পের মতো কম্পন সৃষ্টি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অপরদিকে, এত বিশাল পরিমাণ ভয়ানক দাহ্য পদার্থ ছয় বছরের ওপর শহর কেন্দ্রের এত কাছে কোন নিরাপদ ব্যবস্থা না নিয়ে এভাবে গুদামঘরে কীভাবে রেখে দেয়া হল তা নিয়ে দেশটির জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। তারা এটা বিশ্বাস করতে পারছেন না। যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে বন্দর নগরীর বিস্তীর্ণ জনপদ তার উৎসের নাম সরকার করছে না; কিন্তু এটা জানা যাচ্ছে যে মলডোভিয়ান পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রোসাস ২০১৩ সালের নভেম্বরে ঠিক ওই পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিয়ে বৈরুতে নোঙর করেছিল। রাশিয়ার মালিকানাধীন জাহাজটি জর্জিয়ার বাটুমি থেকে যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে। সেটির গন্তব্য ছিল মোজাম্বিকের বেইরা। জাহাজটিতে ছিল ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। এই রাসায়নিক সাধারণত আসে ছোট গোল টুকরোর আকারে। কৃষিকাজে সারের জন্য এই রাসায়নিক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবে জ্বালানি তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এটা দিয়ে বিস্ফোরক তৈরি করা যায়; যা খনিতে বিস্ফোরণের কাজে এবং নির্মাণ শিল্পে ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। পূর্ব ভূমধ্যসাগর দিয়ে যাওয়ার সময় রোসাস জাহাজটিতে কিছু ‘কারিগরি ত্রুটি’ ধরা পড়ে এবং জাহাজটি বৈরুত বন্দরে নোঙর করতে বাধ্য হয়। এই তথ্য এসেছে জাহাজ শিল্পের সাথে জড়িত ২০১৫ সালের একটি প্রতিবেদনে, যেটি শিপিংঅ্যারেস্টেডডটকম নামে একটি নিউজলেটারে প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদন লিখেছিলেন জাহাজের কর্মীদের পক্ষের লেবানিজ আইনজীবীরা। একুশে সংবাদ/তাশা/গো/০৮/০৮/২০২০

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1