সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

করোনাভাইরাসে মৃত্যু আরও ১০ জনের, আক্রান্ত বেড়ে ৩৭৭২

প্রকাশিত: ০৪:৩৮ পিএম, এপ্রিল ২২, ২০২০
দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৯০ জন। ফলে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৭৭২ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও পাঁচজন, ফলে সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৯২ জন। বুধবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, অধিদফতরের কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শহীদুল্লাহ। ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭৪টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৩৯০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৭৭২-এ। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১০ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১২০ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও পাঁচজন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৯২।নতুন করে যে ১০ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ সাতজন এবং নারী তিনজন। সাতজন ঢাকায় এবং তিনজন ঢাকার বাইরে। ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে একজন করে মারা গেছেন। বয়স হিসাবে ষাটোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব দুজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন এবং ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী দুজন মারা গেছেন। বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৫০ জনকে। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ৯০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৫ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫৯৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ২৪০ জনকে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৩৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৩২৭ জনকে। এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে সাত হাজার ৩৩৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ৫৬৭ জনকে এবং এ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে এক লাখ ৬৪ হাজার ৩৭৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন তিন হাজার ১৭২ জন এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮০ হাজার ১৭৬ জন। শুরুতে ডা. মো. শহীদুল্লাহ পিপিইসহ চিকিৎসা সামগ্রী গ্রহণ ও বিতরণের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সিএমএসডি (ঔষধাগার) থেকে নির্দিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে যথাযথ মান পরীক্ষা করে রাজধানীসহ সারাদেশের হাসপাতালে মাস্ক ও গ্লাভস সরবরাহ করা হচ্ছে। সিএমএসডির বাইরে অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উদ্যোগে বা অন্য কারও কাছ থেকে সংগ্রহ করে তা স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে বিতরণ করছে। ফলে এসব চিকিৎসা সামগ্রী ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে কেনা কিংবা অনুদানে প্রাপ্ত সামগ্রীর ব্যাপারে চিকিৎসক ও নার্সরা জানেন না বলে (নিম্নমানের সামগ্রীর জন্য) সিএমএসডিকে দোষারোপ করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এগুলো (নিম্নমানের মাস্ক ও গ্লাভস) সিএমএসডি থেকে সরবরাহ করা হয়নি। ডা. শহীদুল্লাহ জানান,গতকাল (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত সিএমএসডি পিপিই সংগ্রহ করেছে ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৫০টি। বিতরণ করেছে ১১ লাখ ৬৮ হাজার ২৪৮টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে তিন লাখ ২৯ হাজার ৯০২টি। সিএমএসডি প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার পিপিই গ্রহণ ও বিতরণ করে থাকে। বর্তমানে সিএমএসডি বিভিন্ন গ্রেডের এবং উন্নতমানের পিপিই পাচ্ছে এবং কোভিড-১৯ এর জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতালে বিতরণ করছে। এছাড়া লক্ষাধিক এন-৯৫, কেএন-৯৫, এসইপি-২ ও পি-২ বা সমমানের মাস্ক মজুদ রয়েছে। এগুলো কোভিড হাসপাতাল ও পিসিআর ল্যাবরেটরিতে বিতরণ করা হচ্ছে। বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের ২৫ লাখ ৬৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এক লাখ ৭৭ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। তবে প্রায় সাত লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৭৭২। মারা গেছেন ১২০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯২ জন। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1