সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বেনাপোলে মাতৃভাষা দিবস পালনে দু’বাংলার ভাষা প্রেমীদের মিলন মেলা

প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০

যশোর : "২১ ফেব্রুয়ারি আমার আলো আমার চোখ” এই স্লোগানে বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুই বাংলার ভাষা প্রেমি মানুষের মিলন মেলায় পালিত হলো ভাষা দিবস।

আর ২১ শে ফেব্রুয়ারী বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মাতৃভাষা ভাষার টানে বাঙালির আবেগের কাছে একাকার হয়ে যায় এপার বাংলা ওপার বাংলার মানুষ"।

এই ভাষা দিবসে এপার বাংলা-ওপার বাংলার মানুষের ভাষার দাবিতে আন্দোলনে শহীদদের সম্মিলিত শ্রদ্ধা জানাল ভারত-বাংলাদেশ।

বেলা ১১টায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিক ও বনগাঁ পৌর মেয়র শংঙ্কর আঢ্যর'র নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা শতশত বাংলাভাষি মানুষ বাংলাদেশিদের ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেয় একে অপরকে।

নোমান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতের পক্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁও পৌর সভার মেয়র শংঙ্কর আঢ্য, উত্তর ২৪ পরগনা মেন্টর জেলা পরিষদের শ্রী গোপাল শেঠ, দমদম পৌরসভার সি.আই.সি শ্রীমতি রিঙ্কু দে দত্ত।

বাংলাদেশের পক্ষে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ আফিল উদ্দিন, কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শফিউল আরিফ, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন পিপিএম, ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ান কোম্পানী কমান্ডার লে. কর্ণেল সেলিম রেজা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাঃ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার, বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল।

একুশ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মঞ্জু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একুশ উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব আলহাজ্ব নুরুজ্জামান।

ভাষা দিবসের মিলন মেলায় বিজিবি বিএসএফকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। এরপর দু’দেশের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী মানুষ দিবসটি উদযাপন করে যৌথভাবে।

সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদি ঢাকল ফুলের চাদরে। বেনাপোল চেকপোস্ট নো-ম্যান্সল্যান্ডে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারো ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানো হলো।

এসময় ভৌগলিক সীমারেখা ভুলে কেবল মাত্র ভাষার টানে দু’বাংলার মানুষ একই মঞ্চে গাইলেন বাংলার জয়গান।

বেনাপোল চেকপোস্ট নো-ম্যান্সল্যান্ড এলাকায় শুক্রবার এভাবেই কাটালেন দুই বাংলার ‘বাংলা ভাষাভাষী’ মানুষ।

“এবার দুই বাংলা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটি পৃথক পৃথক ভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এপারে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনের সামনে আর ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রপ্তানি টার্মিনালে তৈরি করা হয়েছে দুটি ‘একুশে মঞ্চ’। বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা সেই মঞ্চে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।”

"একই আকাশ একই বাতাস" দু’বাংলার মানুষের ভাষা এক। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি বলে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমাদের প্রাণ কাঁদে।
তাই তো বারবার ছুটে আসি দুই দেশের বাঙালী বাংলাভাষী মানুষের পাশে।

উভয় দেশের জনপ্রতিনিধিরা বলেন, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির কথা। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে জড়ো হয়েছিল হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী মানুষ। নেতাদের কণ্ঠে ছিল ভবিষ্যতে আরো বড় করে এক মঞ্চে একুশসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান উদযাপনের প্রত্যাশা। উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো শত:স্ফুর্তভাবে অংশ নেয় এ অনুষ্ঠানে।

দু'দেশের জাতীয় পতাকা, নানা রং এর ফেস্টুন, ব্যানার, প্লেকার্ড, আর ফুল দিয়ে বর্নিল সাজে সাজানো হয় চেকপোস্ট এলাকা। দু'বাংলার মানুষের এ মিলন মেলায় উভয়দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে এক ঈদ আনন্দের উৎসাহের সৃষ্টি হয়।

প্রতি বছরই দুই বাংলার সীমান্তবর্তী এ অংশের বাসিন্দারা এক সাথে মিলিত হয়ে দিবসটি পালন করেন। তখন দু’দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী ওই স্থানে আবেগাপ্লত পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

একে অপরকে আলিঙ্গন করে সকল ভেদাভেদ যেন ভুলে যায় কিছু সময়ের জন্য। ফুলের মালা ও জাতীয় পতাকা বিনিময় করে উভয় দেশের আবেগপ্রবণ অনেক মানুষ বাঙালীর নাড়ির টানে একজন অপরজনকে জড়িয়ে ধরে ।

দুই বাংলার মানুষের মাঝে বসে এক মিলন মেলা। এ সময় পেট্রাপোল ও বেনাপোল চেকপোস্টে ঢল নামে হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী মানুষের। ক্ষনিকের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত।

নো-মান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে প্রথম ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান উভয় দেশের জনপ্রতিনিধিসহ সরকারী কর্মকর্তারা।

এবার একুশে মঞ্চে সাত গুণীকে মৈত্রী পদক প্রদান করেন দুই দেশের অতিথিরা। এসময় পদক প্রদান করা হয় কালের কণ্ঠ’র বিশেষ প্রতিনিধি ফখরে আলম, পশ্চিমবঙ্গের কবি মুক্তি বসু, সমাজসেবক কার্ত্তিক দত্ত, বাংলাদেশের রাজনীতিক আজগর আলী মিঞা, রাজনীতিক মিনহাজ উদ্দিন, শিক্ষাবিদ শান্তিপদ বিশ্বাস ও বৃক্ষপ্রেমিক আব্দুল ওয়াহেদ সর্দার।

সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি এখনো যে অটুট রয়েছে তাও বোঝা গেল অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুই বাংলার অতিথিদের বক্তৃতায়। এরপর একুশ মঞ্চে’ উঠেন দু’দেশের নেতৃবৃন্দ।

এসময় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক সঙ্গীত ও নাট্য উৎসবে যেন অন্য রকম দোলায় ভাসে দুই বাংলার ভাষা প্রেমি মানুষ। ভাষা যেন তাদের সীমা রেখা ভুলে এক সুতায় বেধে রাখলো। উভয় বাংলার ভাষা প্রেমিদের প্রত্যাশা এমন সুন্দর অনুষ্ঠানসহ যেন বিভিন্ন অনুষ্ঠান দুই বাংলার মিলন মেলায় পালন করা হয়।

দুই বাংলার পুলিশ-বিজিবি ও বিএসএফ এর কঠিন নিরাপত্তা মধ্যে দিয়েই ভাষা শহীদদের স্মরনে দু’বাংলার মানুষের সম্প্রতি আর ভালোবাসার বাধনকে আরো সুদৃঢ় করার প্রত্যয় নিয়ে ভাষাপ্রেমিদের মিলন মেলা বসলো দুই বাংলার সীমান্তে।

ইয়ানূর রহমান
০১৭১২৭৯৭৬০২

এস.ইয়ানূর //২২.০২.২০২০

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1