সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাজশাহীতে আলু ক্ষেতে ব্যস্ত কৃষক

প্রকাশিত: ০৫:২৭ পিএম, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২০

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীর মাঠ জুড়ে সবুজে ভরছে আলুক্ষেত। জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে যে দিকে চোখ যায় দেখা যাচ্ছে সবুজের মাঠ জুড়ে চাষিদের ব্যস্ত পদচারনা। অধিক ফসলের আশায় শুরু থেকেই ক্ষেতের যত্নে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

বর্তমানে শীতের প্রকোব থেকে ক্ষেত বাঁচাতে সেচ, কীট ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।তবে আলুচাষিরা শংকার মধ্যে রয়েছেন।

ভারী কুয়াশা না থাকলেও ঘনঘন বৃষ্টিতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন চাষিরা। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যারা আলু চাষ করে থাকেন তারা বলছেন, জমি থেকে পানি নিষ্কাশন না হওয়া এবং জমি স্যাঁতস্যাঁতে থাকায় মাটি চেঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। এতে ফলন কম হতে পারে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হতে জানা যায়, এবারে জেলায় আলুচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৪৮ হেক্টর। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। গতবছর আবাদ হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯৭১ হেক্টর।

গত মৌসুমের পুরো সময়ই আলুতে লোকসান গুণতে হয়েছে চাষিদের। তবে শেষ সময়ে কোল্ড স্টোরেজে রক্ষিত আলুতে লাভের মুখ দেখেছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা ব্যবসায়ীরাই লাভ করেছেন। আবারো আশায় চলতি মৌসুমে লোকসান পুষিয়ে নিতে নব-উদ্যোমে আলু আবাদ করেছেন।চাষিরা ক্ষেতের পরিচর্যা টপ ড্রেসিং, সেচ ও সার প্রয়োগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

গত বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার চাষিরা আলুর ফলন বাড়ানোর জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন।অনুকল আবহাওয়া বিরাজ করায় চাষিরা বলছেন গত ৩/৪ বছর যাবত আলুর আবাদ ও উৎপাদন ভালো হচ্ছে। গত বছর তারা উঠতি মৌসুমে আলুর দামও পেয়েছেন ভালো।

উঠতি মৌসুমে ৬শ’-৭শ’ টাকা বস্তা (৫৫ কেজি) বিক্রি হলেও হিমাগারে রক্ষিত আলুর দাম কমে যায়। এতে ৯৫ শতাংশ চাষি ও ব্যবসায়ীদেরকে লোকসান গুনতে হয়। অনেকে আশঙ্কা করছেন লোকসানের কারণে এবার আলু আবাদ কমে যেতে পারে।

রাজশাহীর জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে আলুর আবাদ হয়েছে। বিশেষ করে জেলার পবা, মোহনপুর, বাগমারা, তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলাতে বেশীরভাগ আলুচাষ হয়ে থাকে। তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলাতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আলুচাষ হয়। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সফল চাষি কাম ব্যবসায়ী মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি গ্রামের নুরুল ইসলাম ও নুড়িয়াক্ষেত্র গ্রামের মোবারক হোসেন আলুচাষ করেছেন তানোর উপজেলায়।

নুরুল ইসলাম ও মোবারক হোসেন বলেন, মোহনপুর, পবা ও বাগমারা উপজেলায় আলু ক্ষেতের দাড়াতে দুইবার মাটি তুলে দিতে হয়।কিন্তু তানোরে আলুর দাড়াতে একবার মাটি চেঁচে তুলে দিলেই হয়। তবে সেচ লাগে বেশী।

তবে এবারে শীতের সাথে ঘনঘন বৃষ্টি হওয়ায় পরে যারা রোপন করেছেন তাদের মাটি টপড্রেসিং করা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। আর দাড়াতে (সারি) মাটি তুলে দিতে না পারলে আলুর ফলন অবশ্যই ব্যাহত হবে।

সিলিন্দা এলাকার জামাল উদ্দিন বলেন, গতবার আলুতে প্রযাপ্ত লোকসান হয়েছে।আশা করছি আবওয়া অনুকুলে থাকায় ভাল ফলন হবার সম্ভবানা রয়েছে।আশা করছি নায্য দাম পেলে লোকসানটা পুশিয়ে নিতে পারবো।

কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আলু নিতান্তই শীতপ্রধান অঞ্চলের ফসল। নাতিশীতষ্ণ অঞ্চলেও আলু ভালো জন্মে। তবে অ-নিরক্ষীয় অঞ্চলের শীতকালীন মৌসুমে যেমন আমাদের দেশে আলুর চাষ করা চলে।

১৬-২১ ডিগ্রি তাপমাত্রা আলুর জন্য আদর্শ স্থানীয়। মেঘ মেঘ শীত শীত থাকলে আলু ক্ষেতের জন্য ভাল। তবে গাছ বৃদ্ধির প্রথম দিকে অধিক তাপ ও শেষ দিকে অর্থাৎ কন্দ ধরা কালীন সময়ে কম তাপ থাকা বাঞ্ছনীয়। অল্প পরিমাণ বরফ পড়াও আলু সহ্য করতে পারে, তবে অধিক শৈত্যে কন্দের বৃদ্ধি থেমে যায় ও কোষের গঠন নষ্ট হয়ে যায়। ঘনঘন বৃষ্টি হলে ফলন কম হতে পারে।

বৃহস্পতিবার সকালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুম হক বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে আলুর আবাদ ভাল হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে না পড়লে উৎপাদনও আশানুরুপ হবে। চাষিদের কৃষিবিভাগের পরামর্শ নিয়ে ক্ষেতের যত্ন নিতে আহবান জানান তিনি।

এস. পান্না //১৩.০২.২০২০

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1