রাজশাহী : বিএনপি সব সময় প্রযুক্তিকে ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে নানারকম বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। কিন্তু উপমহাদেশের মানদ-ে এটি একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে কোনো হাঙামা ঘটেনি। সিল মারার ঘটনা ঘটেনি। ইভিএমে ভোট গ্রহণ করার কারণে এসব বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। কারণ, ইভিএমে একজনের ভোট অন্যজনের দেয়ার সুযোগ নেই।
মন্ত্রী বলেন, ইভিএম নিজেই প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের একজন এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। আঙুলের ছাপ নিয়ে সমস্যার কারণে খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। কিন্তু ইভিএম নিয়ে বিএনপি নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আসলে বিএনপি প্রযুক্তিকে সব সময় ভয় পায়।
তিনি বলেন, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় বিনামূল্যে বাংলাদেশে সাব-মেরিন ক্যাবল দিতে চাওয়া হয়েছিল। তখনকার প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সাব-মেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হলে বাংলাদেশের সব গোপন তথ্য বাইরে চলে যাবে। তিনি সাব-মেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশকে যুক্ত করেননি। পরে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করে আমাদের সাব-মেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হতে হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি বলেছে, এটি আন্দোলনের অংশ। এখন বিএনপির আন্দোলন মানে মানুষ মনে করে জ্বালাও-পোড়াও, হাঙামা। বিএনপির এই হাঙামার আশঙ্কায় মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। তারপরেও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভোটার উপস্থিতি বেশি। আর ৫৫ লাখ ভোটারের একটি শহরে সুন্দর ভোটের আয়োজন করার জন্য নির্বাচন কমিশন ধন্যবাদ পাবার যোগ্যতা রাখে।
সভায় আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের আহ্বান জানান দলের রাজশাহী বিভাগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় দলকে গুরুত্ব দিতে হবে। নিজস্ব বলয় তৈরি করা সমীচিন হবে না। মৌচাকে মধু না থাকলে কাউকে পাশে পাওয়া যায় না। ত্যাগী নেতাকর্মীদেরম মূল্যায়ন করতে হবে।
অনুপ্রবেশকারীরা সাংগঠনিক পদে থাকলেও বাদ দিতে হবে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর যারা পিঠ বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগে এসেছে তাদের রাখা যাবে না।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। তিনি আগামী মার্চ মাস থেকেই রাজশাহীর উপজেলাপর্যায়ে সম্মেলনের নিন্দেশ দেন। এ সময় সম্মেলনে নিজের আত্মীয়দের পদ-পদবিতে আনার ব্যাপারেও সতর্ক করে দেন তিনি। বলেন, নিজের লোক টেনে লাভ নেই। আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ গুরুত্বপূর্ণ নয়। আর ২০১৪ সালের পর যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন তারা দলের নেতা হতে পারবেন না বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠা-ু, বেগম আখতার জাহান, ডা মেরিনা জাহান কবিতা, রাজশাহীর এমপি আয়েন উদ্দিন, ডা মুনসুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা। সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। সভা পরিচালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা।
এস.পান্না // ০৬.০২.২০২০