সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

‘বঙ্গবন্ধু’ বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী রয়্যালস

প্রকাশিত: ১০:২২ এএম, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
একুশে সংবাদ : বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো রাজশাহী রয়্যালস। গতকাল টুর্নামেন্টের ফাইনালে খুলনা টাইগার্সকে ২১ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশেষ বিপিএলের শিরোপা ঘরে তোলা রাজশাহী টুর্নামেন্ট ইতিহাসে নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়লো উত্তর বঙ্গের দলটি। বিপিএলের সপ্তম আসরের ফাইনলে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭০ রান করে রাজশাহী রয়্যালস। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৯ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে রাজশাহীর পক্ষে ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। বল হাতে প্রথম ওভারে আক্রমনে আসেন পাকিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার মোহাম্মদ আমির। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে ৪ ওভারে ১৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খুলনাকে ফাইনালে তোলা আমির আজ প্রথম ওভারে ৭ রান দেন। একটি বাউন্ডারি আসে আফিফের ব্যাট থেকে। পরের ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রবি ফ্রাইলিঙ্ককে যুতসইভাবে খেলতে পারেননি আফিফ ও লিটন। ওভার থেকে আসে ৩ রান। পরের ওভারে বাউন্ডারি দিয়ে আমিরকে স্বাগত জানান আফিফ। তবে তৃতীয় ওভারে আফিফকে বিদায় দেন আমির। বাউন্সারকে হুক করতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দেন আফিফ। সামনের দিকে দৌঁড়ে এসে ঝাপিয়ে পড়ে স্কয়ার লেগে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। আফিফের বিদায়ে উইকেট যান ইরফান শুক্কুর। লিটনকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। ৩টি চারে বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন শুক্কুর। পাওয়ার প্লে’র শেষ বলে এ ম্যাচে প্রথম বলকে মাঠের বাইরে পাঠান লিটন। পেসার শফিউলকে ছক্কা মারেন লিটন। ৬ ওভারে মাত্র ৪৩ রান পায় রাজশাহী। পাওয়ার প্লে’তে কম রান আসলেও, উইকেট ধরে রাখার লক্ষ্য ছিলো রাজশাহীর। তাই দেখেশুনেই খেলছিলেন লিটন-শুক্কুর। পাওয়ার প্লে’র পর ৯ ওভার পর্যন্ত ১টি করে চার-ছক্কা মারেন লিটন-শুক্কুর। ৯ ওভার শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৬৩ রান। ১০তম ওভারের প্রথম বলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লিটন। পেসার শহিদুল ইসলামের বলে স্কয়ার লেগে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লিটন। আউট হওয়ার আগে ২৮ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করেন তিনি। শুক্কুরের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৪০ বলে যোগ করেন ৪৯ রান । এরপর ক্রিজে শুক্কুরের সঙ্গী হন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে খুলনার বিপক্ষে ৫০ বলে ৮০ রান করেও রাজশাহীর হার ঠেকাতে পারেননি মালিক। এবার আর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি মালিক। ১৩ বলে ৯ রান করে ফ্রাইলিঙ্কের শিকার হন তিনি। এক প্রান্ত দিয়ে লিটন-মালিক ফিরলেও, এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন শুক্কুর। ষষ্ঠ ম্যাচে এসে ৩০তম বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শুক্কুর। অবশ্য হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটি বড় করতে পারেননি তিনি। আমিরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৫২ রানে আউট হন শুক্কুর। ইনিংসে ৬টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন তিনি। শুক্কুর যখন আউট হন তখন ইনিংসের ৩৪ বল বাকী ছিলো। উইকেটে ছিলেন রাজশাহীর অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল ও পাকিস্তানের মোহাম্মদ নাওয়াজ। পরের পরের ১৬ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৭ রান যোগ করতে পারেন নাওয়াজ-রাসেল। তাই ১৭ ওভার শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ ছিলো ৪ উইকেটে ১১৬ রান। এ অবস্থায় বড় সংগ্রহ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় রাজশাহী। কিন্তু শেষ তিন ওভারে যথাক্রমে ২১, ১৮ ও ১৫ রান তুলেন রাসেল-নাওয়াজ। ১৮তম ওভারে ফ্রাইলিঙ্ক, ১৯তম ওভারে আমির ও ২০তম ওভারে বল হাতে ছিলেন শফিউল। ফলে ৪ উইকেটে ১৭০ রানের সংগ্রহ পায় রাজশাহী। পঞ্চম উইকেটে ৩৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৭১ রান যোগ করেন রাসেল ও নওয়াজ। একবার জীবন পেয়ে ৩টি ছক্কায় ১৬ বলে অপরাজিত ২৭ রান করেন রাসেল। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ২০ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন নাওয়াজ। খুলনার আমির ৩৫ রানে ২ উইকেট নেন। জবাবে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় খুলনা। আগের দুই ম্যাচে অপরাজিত ১১৫ ও ৭৮ রান করা ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত শুন্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে রাজশাহীর পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ ইরফানকে পয়েন্ট দিয়ে কাট করেন শান্ত। বাঁ-দিকে ঝাপিয়ে পড়ে উড়ন্ত ক্যাচ নেন লিটন। আরেক ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজও ব্যর্থ। ২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। তাই প্রথম ১১ বলের মধ্যে ১১ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে মহাবিপদেই পড়ে খুলনা। এ অবস্থায় ঠান্ডা মাথায় দলের হাল ধরেন শামসুর রহমান ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলো রুশো। এই জুটি দলকে লড়াইয়ে ফেরান। ৫৩ বলে ৭৪ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন তারা। অবশ্য এই জুটি দলীয় ৪৪ রানেই থামতে পারতো, যদি না রাজশাহীর আবু জায়েদ রুশোর ক্যাচটি ফেলতেন। ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে পাকিস্তানের শোয়েব মালিকের বলে কভার দিয়ে মারতে গিয়ে জায়েদকে ক্যাচ দেন রুশো। কিন্তু সেটি ফেলে দেন জায়েদ। ফলে ১৮ রানে জীবন পান রুশো। অবশ্য জীবন পেয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি রুশো। পাকিস্তানের নওয়াজের বলে রাসেলকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। ২৬ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ২৬ রান করেন রুশো। রুশো থামলেও ৩৮তম বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন শামসুর। হাফ-সেঞ্চুরির পরই শামসুরকে বিদায় দেন রাজশাহীর পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১০১ রানে আউট হন শামসুর। এমন অবস্থায় জয়ের জন্য ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৭০ রান দরকার ছিলো খুলনার। আশার প্রদীপ হিসেবে টিকে ছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, আফগানিস্তানের নাজিবুল্লাহ জাদরান ও ফ্রাইলিঙ্ক। কিন্তু তিনজনের কেউই গ্র্যান্ড ফাইনালে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি। মুশফিক ২১, জাদরান ৪ ও ফ্রাইলিঙ্ক ১২ রানে আউট হন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৪৯ রান করে ফাইনাল হারে খুলনা। রাজশাহীর ইরফান-রাসেল ও রাব্বি ২টি করে উইকেট নেন। এ্যাচ ও টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন রাজশাহী অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। এস.ব.স // ১৮.০১.২০২০

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1