সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাঁশখালী ইকোপার্ক

প্রকাশিত: ০৫:৪৪ পিএম, নভেম্বর ৪, ২০১৯
একুশে সংবাদ: আঁকাবাঁকা পাহাড়ি সড়ক, চারপাশে ঘন সবুজের সমারোহ, বন্যহাতির বিচরণ, চেনা-অচেনা পাখির মন-মাতানো কিচিরমিচির শব্দ, দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু, সুউচ্চ টাওয়ার কী নেই এখানে।হ্যাঁ, বলছিলাম চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কথা।বহুমুখী আরণ্যক সৌন্দর্য ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী পর্যটকদের কাছে টানে। বাংলাদেশে এমন উপজেলা হাতেগোনা দু’একটি, যেখানে পর্যটক আকর্ষণের অসংখ্য নিদর্শনে ভরপুর।পাহাড়, সমুদ্র, নদী, খাল ও সমতলভূমি বেষ্টিত এ উপজেলায় রয়েছে ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বালুচরসমৃদ্ধ সমুদ্র সৈকত, ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়ি হ্রদ ও প্রাকৃতিক চিড়িয়াখানা সংবলিত নানা জীববৈচিত্র্যের হৃদয়ছোঁয়া ইকোপার্ক, ৩৬৬২ একরজুড়ে চাঁনপুর-বৈলগাঁও চা বাগান, সমুদ্র মোহনায় খাটখালী মিনি সমুদ্রবন্দর, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ও চিংড়ি চাষের দৃশ্য, পানি থেকে লবণ চাষের দৃশ্য, নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন, পুরাকীর্তি, ঐতিহাসিক মসজিদ, মন্দির, কেয়াং এবং আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, দরবেশ-আউলিয়া ও সাধু-সন্ন্যাসীদের তীর্থভূমি এই বাঁশখালী। বাংলাদেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু। স্বচ্ছ জলরাশি, শরতের কাশফুলের দৃশ্য ও বন্যপ্রাণীর হাঁকডাক আর প্রকৃতি সেখানে এক অন্যরকম অনুভূতি তৈরি করে। একেক ঋতুতে একেক রকম রূপ এই ইকোপার্কের। সারি সারি পাহাড় চূড়ায় নানা প্রজাতির বৃক্ষের সমাহার গ্রাম্যবধূর মতোই শান্তরূপ নিয়ে যেন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। সুউচ্চ পাহাড়ের শীর্ষে ওঠে অনায়াসে দুরবিন ছাড়া খালি চোখেই দেখা যায় অদূরে বঙ্গোপসাগরের অথৈ জলরাশি। বিকালে উপভোগ করা যায় সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য। কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও বাঁশখালী চ্যানেল নিয়ে সংযোজিত মোহনায় সামুদ্রিক জলের নানা বর্ণিল দৃশ্য সহজেই উপভোগ করা যায় এখান থেকে। উপকূলবর্তী জমিগুলোতে লবণ উত্পাদন, চিংড়ি চাষ ও সামুদ্রিক মত্স্য আহরণের দৃশ্য দেখা সম্ভব পর্যটকদের। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসংবলিত গণ্ডামারার সাগরবক্ষে বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমান, সাধনপুরে কামানের মহড়ার দৃশ্য, ইলাশার ষাটগম্বুজ মসজিদ, সরলে মলকা বানুর দীঘি ও মসজিদ, বাণীগ্রামের শিখমন্দিরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের নানা ধরনের পুরাকীর্তি দেখার মতো। ১৯৮৬ সালে বন্যপ্রাণী ও বনজসম্পদ রক্ষার্থে সরকার ৭ হাজার ৭৬৪ হেক্টর বনভূমি নিয়ে ‘চুনতি অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদফতর বামেরছড়া ও ডানেরছড়া প্রকল্পটিও চুনতি অভয়ারণ্য অন্তর্ভুক্তি হয়। এখানে রয়েছে মাঝারি, বড়, ছোট অসংখ্য পাহাড়। মাঝেমধ্যে আঁকাবাঁকা ঝর্নাবেষ্টিত খাল ছড়া। পাহাড়ের কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া ঝর্নাধারা সব পর্যটকের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। ইকোপার্কে রয়েছে পিকনিক সেট, দ্বিতল রেস্ট কর্নার, দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু, সাসপেনশন ব্রিজ, দোলনা, স্লিপার, দ্বিতল রেস্ট হাউস, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ব্যারাক ৪ ইউনিট, গেট, প্রধান ফটক, পাখি ও বন্যপ্রাণী অবলোকন টাওয়ার, ভাসমান প্লাটফরম, লেক, কংক্রিটে শাবের ছাতা, রিফ্রেশমেন্ট কর্নার, ফেনোরোমিক ভিউ টাওয়ার, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, চিত্রা বিড়াল, বাঘ, মেছোবাঘ, জলজ ও সুন্দর পাখির প্রজনন কেন্দ্র। গড়ে তোলা হয়েছে ৫০ হেক্টর জমির ওপর ঝাউ বাগান। ২০ হেক্টর জমিতে ভেষজ উদ্ভিদের বন। ১২ হেক্টর ভূমিতে শোভা বর্ধনকারী ফুল ও বাহারি গাছ। প্রতিদিন প্রতি মৌসুমেই বাঁশখালী ইকোপার্কে পর্যটকদের ভিড় লেগেই আছে। প্রধান সড়ক থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ি এলাকায় প্রবেশমুখে আগন্তুকদের স্বাগত জানিয়ে প্রধান ফটক বা গেট। ইকোপার্কে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সবুজ পাহাড়ের হ্রদের পানির সঙ্গে নীল আকাশের লুকোচুরি, পাখির কোলাহল, ডাহুকের কিচিরমিচির ডাক, হ্রদের পানিতে স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত বোট নিয়ে হ্রদে ভ্রমণ। লেকে মাছ ধরার জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। পর্যটকদের পিকনিক স্পট, রাত যাপনের জন্য কটেজ। বাঁশখালী ইকোপার্কটির অবস্থান উপজেলা সদর জলদি নেমে মনছুরিয়া বাজার থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্বে। এছাড়াও চুনতি, হাতিয়া, আজিজনগর, হারবাং, পুঁইছড়ি, নাপোড়া, চাম্বল, জলদি বিট অফিসগুলোর সংস্কার করে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকেঃ বিআরটিসি এর বাসগুলো ছাড়ে ঢাকা কমলাপুর টার্মিনাল থেকে।আর অন্যান্য এসি, ননএসি বাস গুলো ছাড়ে সায়দাবাদ বাস ষ্টেশন থেকে। আরামদায়ক এবং নির্ভর যোগ্য সার্ভিস গুলো হল এস.আলম ও সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভূতি। সবগুলো বাসই কক্সবাজার যায়। কক্সবাজার চট্টগ্রামের মাঝামাঝিতে বাশখালী অবস্থিত। অথবা চট্টগ্রাম শহর এর বহদ্দার হাট থেকে বাশখালীর বাস ছাড়ে। একুশে সংবাদ//ব.ট.ন//০৪.১১.২০১৯

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1