সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

আজও সাক্ষী হয়ে রয়েছে, "বালিয়াটির জমিদার বাড়ি"

প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
একুশে সংবাদ: সারা দিন কাজের ফাকে দম নেওয়ারও সুযোগ থাকেনা আমাদের।তাই আমরা অনেকে ভাবি কোরও একদিন কাজের ফাকে পরিবারের সকলকে নিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসা যাক। অনেকে ভেবে পায়না কোথায় ঘুরতে যাবে। তাহলে সেই সব ভ্রমন পিপাসু মানুষদের জন্যদের জন্য আজ আলোচনা করবো তেমনই একটি ভ্রমননের জায়গা সম্পর্কে। ঢাকা বিভাগের একটি উল্লেখযোগ্য জেলা মানিকগঞ্জ।বালিয়াটির জমিদার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায় অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। বালিয়াটির জমিদার গোবিন্দরাম উনিশ শতকের প্রথমার্ধে এখানে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন। সেই প্রাসাদটিই বর্তমানে বালিয়াটি প্রাসাদ নামে সুপরিচিত।মানিকগঞ্জ শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়ার বালিয়াটিতে এই প্রাসাদটি অবস্থিত। যা দেখতে পাবেন: মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় বালিয়াটি জমিদারবাড়ি অবস্থিত। ঢাকা থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং মানিকগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্ব দিকে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু সুরম্য প্রাচীন স্থাপনা। অনেক দূর থেকে এখনও দালানগুলোর চূড়া মন কাড়ে আগতদের। সময়ের ব্যবধানে ভবনগুলো ধ্বংসের প্রহর গুনলেও আজও ঠায় দাঁড়িয়ে জানান দেয়া বালিয়াটির জমিদারদের সেকালের সেই বিত্ত আর বৈভবের কথা। বালিয়াটি জমিদারবাড়ি বালিয়াটির জমিদাররা আঠারো শতকের প্রথম ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমভাগ প্রায় দুইশ বছরের এ দীর্ঘ সময়টাতে বালিয়াটির জমিদারদের সুখ্যাতি ছিল বিস্তর। এ সময়ে তারা নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেন এ এলাকায়। বালিয়াটি জমিদারবাড়ি সেগুলোর অন্যতম। জানা যায়, আঠারো শতকের মধ্যভাগে জমিদার গোবিন্দরাম শাহ বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেন। আর ক্রমান্বয়ে তার উত্তরাধিকারীরা এখানে নির্মাণ করেন আরো বেশ কিছু স্থাপনা। এখানে পূর্ববাড়ি, পশ্চিমবাড়ি, উত্তরবাড়ি, মধ্যবাড়ি এবং গোলাবাড়ি নামে বড় আকারের পাঁচটি ভবন। জমিদারবাড়ির এই বিভিন্ন অংশ বালিয়াটি জমিদার পরিবারের উত্তরাধিকারীরাই তৈরি করেন বলে জানা যায়। মূল প্রাসাদ কমপ্লেক্সটির একই রকম পাঁচটি অংশ আলাদাভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। পূর্ব দিকের একটি অংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও বাকি চারটি টিকে আছে এখনও। মূল ভবনগুলোর সামনের দেয়ালজুড়ে নানা রকম কারুকাজ আজ মূর্তি চোখে পড়ে। বালিয়াটি জমিদারবাড়ির বিশাল কমপ্লেক্সটি উঁচু দেয়ালে ঘেরা। প্রাচীন আমলের সেই প্রাচীর এখনও টিকে আছে। এ চার দেয়ালের মাঝে এখন রয়েছে চারটি সুদৃশ্য ভবন। আর ভবনগুলোর সামনের প্রাচীর দেয়ালে রয়েছে চারটি প্রবেশ পথ। আর চারটি ভবনের পেছন দিকে আছে আরো চারটি ভবন। চারটি প্রবেশ পথের চূড়ায় রয়েছে পাথরের তৈরি চারটি সিংহমূর্তি। সিংহ দরজা পেরিয়ে বাইরে বেরোলেই দীর্ঘ পুকুর। পুকুরের জলে বালিয়াটি প্রাসাদের প্রতিচ্ছবি আজো মন ভরে দেয় সবার। বালিয়াটি জমিদার বাড়ি মূলত পাঁচটি মহলে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে টিকে আছে প্রায় একই রকম চারটি মহল। আর এ চারটি মহলের মাঝের দুটি দোতলা আর দু পাশের দুটি তিন তলা। প্রায় বিশ একরেরও বেশি জমির উপরে নির্মিত এ জমিদারবাড়িতে রয়েছে ছোট-বড় দুশোর বেশি কক্ষ। পেছনের দিকে আছে বড় একটি পুকুর। শান বাঁধানো ছয়টি ঘাট আছে এ পুকুরের চার পাশে। পুকুরের চারপাশের সারিবদ্ধ কক্ষগুলো ছিল পরিচারক, প্রহরী ও অন্যান্য কর্মচারীদের থাকার জন্য। বালিয়াটিতে ১৯২৩ সালের দিকে জমিদার কিশোরী রায় চৌধুরী নিজ ব্যয়ে একটি এলোপ্যাথিক দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে এটি সরকারী নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে। বালিয়াটিতে গেলে হাসপাতালটি দেখা যাবে। জমিদার হীরালাল রায় চৌধুরী সাটুরিয়া থেকে বালিয়াটির প্রবেশ পথের পাশে কাউন্নারা গ্রামে একটি বাগানবাড়ী নির্মাণ করেন এবং সেখানে দিঘির মাঝখানে একটি প্রমোদ ভবন গড়ে তোলেন যেখানে সুন্দরী নর্তকী বা প্রমোদ বালাদের নাচগান ও পান চলতো। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদটি রক্ষনাবেক্ষণ করছে। প্রতিদিন শত শত দর্শনাথী দেখতে আসে নয়নাভিরাম এই প্রাসাদটি। প্রাসাদটির মধ্যে রয়েছে জমিদারদের হাম্মাম খানা, হেরেম খানা, জমিদারদের ব্যবহৃত বিভিন্ন দর্শনীয় বস্তু। জমিদারদের তেলোয়ার, তাদের খাট, পালঙ্গ, আসবাবপত্র ও নানান ধরনের জমিদারি বিষয়াদি। যে সব দেখলে দর্শকদের মন আনন্দে উদ্বেল হয়ে যায়। কিভাবে যাবেন: ঢাকা গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জ সাটুরিয়া গামী বাস ধরে সাটুরিয়া যাবেন। তারপর সাটুরিয়া থেকে টেম্পু বা সিএনজি করে বালিয়াতি যাবেন।এইখার থেকে জমিদার বাড়ীর দূরত্ব এক কি:মি:।ইজি বাইক বা সিএনজি তে করে গেলে ২০-৩০টাকা লাগবে। বাজারে মধ্যে পেয়ে যাবেন বালিয়াটি প্রাসাদ।এছাড়া সাটুরিয়া থেকে ইজি বাইক বা সিএনজিতে ৫০-৬০ টাকায় পৌচে যাওয়া যাবে জমিদার বাড়ী। কোথায় থাকবেন: সাটুরিয়াতে থাকার মতো তেমন কোন আবাসিক হোটেল নেই। তবে মানিকগঞ্জে থাকার মতো আবাসিক হোটেল রয়েছে। মানিকগঞ্জে এসে যে কোন আবাসিক হোটেলে থাকা যাবে। অথবা যেহেতু ঢাকা থেকে দূরত্ব খুব বেশী নয় তাই আপনি চাইলে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আস্তে পারবেন। একুশে সংবাদ//ট.ন.ন//১৬.১০.২০১৯

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1