সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সা.)ও নাতিদের সঙ্গে খেলাধুলায় করতেন

প্রকাশিত: ০১:১২ পিএম, অক্টোবর ৮, ২০১৯
একুশে সংবাদ: আমাদের উচিৎ শিশুদেরকে শুধু পড়ালেখা আর শাষনের বেড়াজালে বন্দি না রেখে শিশুর বিকাশের প্রয়োজনে আনন্দময় শৈশব উপহার দেওয়া।তাই শিশুকে সারাক্ষণ পড়াশোনার শেকলে বন্দি না রেখে খেলাধুলার সুযোগও দিতে হবে। এর পাশাপাশি শিশুদের মানসিক প্রশান্তির জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশ, মাতা-পিতা ও অভিভাবকের সঙ্গ।নিঃসঙ্গ ও আনন্দহীন জীবন শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে এমনকি তাকে বিপথগামীও করতে পারে। আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) মাঝেমধ্যেই তাঁর শিশু নাতিদের সঙ্গে খেলাধুলায় করতেন।তাঁদের পর্যাপ্ত সময় দিতেন।হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী (সা.) দিনের এক অংশে বের হলেন, তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেননি এবং আমিও তাঁর সঙ্গে কথা বলিনি।অবশেষে তিনি বনু কাইনুকা বাজারে এলেন (সেখান থেকে ফিরে এসে) হজরত ফাতেমা (রা.)-এর ঘরের আঙিনায় বসলেন। অতঃপর বললেন, এখানে খোকা [হাসান (রা.)] আছে কি? এখানে খোকা আছে কি? ফাতেমা (রা.) তাঁকে কিছুক্ষণ সময় দিলেন।আমার ধারণা হলো, তিনি তাঁকে পুঁতির মালা—সোনা-রুপা ছাড়া যা বাচ্চাদের পরানো হতো, পরাচ্ছিলেন (সাজিয়ে দিচ্ছিলেন)। তারপর তিনি দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং চুমু খেলেন।তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তুমি তাকে (হাসানকে) মহব্বত করো এবং তাকে যে ভালোবাসবে তাকেও মহব্বত করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২১২২) সারাক্ষণ পড়ালেখায় ব্যস্ত থাকলে শিশুদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।তাই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তাদের খেলার সুযোগ দিতে হবে।এতে তাদের মস্তিষ্ক চাপমুক্ত থাকবে।হজরত হাসান (রা.) ও হোসাইন (রা.)-ও খেলা করতেন। একদিন হোসাইন (রা.) গলির মধ্যে খেলছিলেন।প্রিয় নবী (সা.) সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন।তিনি লোকদের অগ্রভাগে এগিয়ে গেলেন এবং তাঁর দুই হাত প্রসারিত করে দিলেন।বালকটি এদিক-ওদিক পালাতে থাকল।কিন্তু নবী (সা.) তাকে হাসতে হাসতে ধরে ফেলেন। এরপর তিনি তাঁর এক হাত ছেলেটির চোয়ালের নিচে রাখলেন এবং অপর হাত তার মাথার তালুতে রাখলেন।তিনি তাকে চুমু দিলেন এবং বললেন, ‘হোসাইন আমার থেকে এবং আমি হোসাইন থেকে। যে ব্যক্তি হোসাইনকে ভালোবাসে, আল্লাহ তাআলা তাকে ভালোবাসেন।হোসাইন আমার নাতিদের একজন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪৪) শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিও প্রয়োজন।এ জন্য দরকার চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা।খোলা মাঠ, মুক্ত আকাশ ও বিশুদ্ধ বাতাস শিশুর মনকে প্রফুল্ল করে।তাই তাদের মাঝেমধ্যে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া উচিত।শিশুদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও সমাজের সবার সঙ্গে মেশার সুযোগ দিতে হবে।সৃজনশীল কাজের চর্চা করাতে হবে।অনেকে অন্যের সন্তানের সঙ্গে তুলনা করে নিজ সন্তানকে সারাক্ষণ পড়ার টেবিলে আটকে রাখেন।অথচ পড়ালেখার চাপ সীমা ছাড়ালে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। ইমাম গাজালি (রহ.) বলেন, শিশু যখন মক্তব (বিদ্যালয়) থেকে ফিরে আসে, তখন তাকে খেলাধুলার সুযোগ দেওয়া উচিত।যাতে দীর্ঘ সময়ের পড়াশোনার চাপ দূর হয়ে যায়। শিশুকে যদি খেলাধুলার সুযোগ না দেওয়া হয় এবং সারাক্ষণ বই-খাতা নিয়ে বসে থাকতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তার স্বতঃস্ফূর্ততা বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়বে।পড়াশোনা তার কাছে কারাগারের শাস্তি বলে মনে হবে।ফলে সে যেকোনোভাবে এই বন্দিদশা থেকে মুক্তির জন্য অস্থির হয়ে উঠবে। (ইহয়াউ উলুমিদ দীন : ৩/৫৯) শিশুর আনন্দময় সময় নিশ্চিত করা অভিভাবকের দায়িত্ব। তার সঙ্গে কোমল ভাষায় কথা বলতে হবে। তার জন্য যা কিছু ভালো এবং যা কিছু মন্দ তা সহজভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে।যেন ভবিষ্যৎ চিন্তার চাপে সে বিগড়ে না যায়।ইবনে মিসকাওয়াইহ বলেন, ‘কিছু সময় শিশুকে খেলাধুলার সুযোগ দেওয়া চাই।যাতে পড়াশোনার ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। তবে লক্ষ রাখতে হবে, এমন কোনো খেলায় যেন সে মগ্ন না হয়, যাতে ব্যথা পাওয়ার বা অতি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।বলা বাহুল্য, শরীর চালনা স্বাস্থ্যকে রক্ষা করে, অলসতা দূর করে, বুদ্ধিকে শাণিত করে, নতুন উদ্যম সৃষ্টি করে এবং মনে প্রশান্তি দেয়।’ (তাহজিবুল আখলাক, পৃষ্ঠা ২০) আমাদের উচিত, শিশুদের যত্ন করা, তাদের সঙ্গ দেওয়া।দিনের কিছু সময় খেলাধুলার পরিবেশ দেওয়া।তবে ঘরের এক কোণে ভিডিও গেম খেলার সুযোগ দিলে তা তার জন্য কল্যাণকর হবে না। একুশে সংবাদ//ক.ক.ন//০৮.১০.২০১৯

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1