সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঐতিয্যবাহী ষাট গম্বুজ মসজিদ

প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পিএম, অক্টোবর ৩, ২০১৯
একুশে সংবাদ: ষাট গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের বাগেরহাট শহর থেকে মাত্র ৭ কিলােকিটার দুরে খুলনা - বাগেরহাট মহাসড়কের উওর পাসে ষাট গম্বুজ বাসষ্টপথ লাগােয়া সুন্দরঘােনা গ্রামে অবস্থিত। মসজিদটির গায়ে কোনাে শিলালিপি নেই। তাই এটি কে কোন সময় নির্মাণ নির্মাণ করা হয়েছিলাে সে সম্পর্কে সঠিক কোনাে তথ্য পাওয়া যায়নি । তবে মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখলে এটি যে খান জাহান নির্মাণ করেছিলেন সে সম্পর্কে কারাে কোনাে সন্দেহ নেই। ধারণা করা হয় তিনি ১৫শত শতাব্দীতে এটি নির্মাণ করেছিলেন।এই মসজিদটি বহু বছর ধরে এবং বহু অর্থ খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিলো।এর পাথরগুলাে আনা হয়েছিলাে রাজমহল থেকে। এটি বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মধ্যে একটি।মসজিদটি উত্তর দক্ষিণে বাইরের দিকে প্রায় ১৬০ ফুট এবং ভিতরের দিকে প্রায় ১৪৩ ফুট লম্বা আর পূর্ব পশ্চিমে।বাইরের দিকে প্রায় ১০৪ ফুট এবং ভিতরের দিকে প্রায় ৮৮ ফুট চওড়া। দেওয়ালগুলাে প্রায় ৮৫ ফুট। দেশের দক্ষিণ - পশ্চিমে অবস্থিত প্রাচীন এ মসজিদটিকে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য ( World Heritage sites ) হিসাবে মর্যাদা দেয়। মসজিদটি বাগেরহাট শহরকে বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী শহরের মধ্যে স্থান করে দিয়েছে।মসজিদটির পূর্ব দিকে দেওয়ালে ১১টি বিরাট আকারের খিলানযুক্ত দরজা আছে।মাঝের দরজাটি অন্যগুলাের তুলনায় বেশ বড়।উত্তর এবং দক্ষিণ দেওয়ালে আছে ৭টি করে দরজা। আর মসজিদের ৪ কোণে ৪টি মিনারও আছে।এগুলাের নকশা গােলাকার এবং এর উপরের দিকে সরু হয়ে গেছে।এদের কার্ণিশের কাছে বলয়াকারু ব্যান্ড এবং চূড়ায় গােলাকার গম্বুজ আছে।মিনারগুলাের উচ্চতা ছাদের কার্নিশের চেয়ে বেশি।সামনের দুটি মিনারে প্যাঁচানাে সিঁড়ি আছে এবং এখান থেকে আযান দেবার ব্যবস্থাও ছিলাে। এদের একটির নাম রওশন কোঠা অপরটির নাম আন্ধার কোঠা। মসজিদের ভেতরে ৬০টি স্তম্ভ বা পিলার আছে।এগুলাে উত্তর থেকে দক্ষিণে ৬ সারিতে অবস্থিত এবং প্রত্যেক সারিতে ১০টি করে স্তম্ভ আছে।প্রতিটি স্তম্ভই পাথর কেটে বানানাে শুধু ৫টি স্তম্ভ বাইরে থেকে ইট দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে।এই ৬০টি স্তম্ভ এবং চারপাশের দেয়ালের ওপর তৈরি করা হয়েছে গম্বুজ।মসজিদটির নাম ৬০ গম্বুজ হলেও এখানে গম্বুজ মােটেও ৬৫টি নয় বরং গম্বুজ সংখ্যা ৭৭টি।৭৭টি গম্বুজের মধ্যে ৭০ টির উপরিভাগ গােলাকার এবং পূর্ণ দেওয়ালের মাঝের দরজা এবং পশ্চিম দেয়ালের মাঝের মিহরাবের মধ্যবর্তি সারিতে যে সাতটি গম্বুজ সেগুলাে দেখতে অনেকটা বাংলাদেশের চৌচালা ঘরের চালের মতাে। মিনাৱে গম্বুজের সংখ্যা ৪ টি এ হিসেবে গম্বুজের সংখ্যা দাঁড়ায় মােট ৮১ তে।তবুও এর নাম হয়েছে পাটগম্বুজ।ঐতিহাসিকরা মনে করেন সাতটি সারিবদ্ধ গম্বুজ সারি আছে বলে এ মসজিদের সাত গম্বুজ এবং তা থেকে ষাটগম্বুজ নাম হয়েছে।আবার অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন গম্বুজগুলাে ৬০ টি প্রস্তরনির্মিত স্তম্ভের ওপর অবস্থিত বলেই নাম ষাটগম্বুজ হয়েছে। জাদুঘর: ষাট গম্বুজ মসজিদ কম্পাউন্ডের ভিতরে একটি জাদুঘর অবস্থিত। খান জাহান আলী (রহঃ) এর আমলের নিদর্শন সমূহ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। মোট ২৮টি গ্যলারী নিয়ে জাদুঘরটি সজ্জিত। জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে খান জাহান আলী (রহঃ) পোষা কুমীর ধলা পাহার এর দেহাবশেষ। এছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাপ্ত মাটির তৈরি খেলনা, পোড়া মাটির ফলক, কাঁচ ও বিভিন্ন ধাতুর তৈরি তৈজসপত্র, অস্ত্র, আরও অনেক নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী। জাদুঘরটি শনিবার এবং সব সরকারী ছুটির দিনে বন্ধ থাকে। জাদুঘরটি সকাল ৯.০০টা থেকে বিকেল ৫.০০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যাতায়াত: ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে বাগেরহাট যাওয়া ভাল। প্রতিদিন অসংখ্য বাস ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।মেঘনা, বনফুল, ফাল্গুনী, সোহাগ পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ ছাড়াও আরও অনেক বাস আছে খুলনা যাবার জন্য। বাসে খুলনা পৌঁছতে ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগে।ভাড়া ৩০০-৪০০টাকা। খুলনা থেকে মাত্র ৫০ মিনিটের পথ ষাট গম্বুজ মসজিদ। এছাড়া ঢাকা থেকে দুটি ট্রেন খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬.২০ মিনিটে এবং চিত্রা এক্সপ্রেস সন্ধ্যা ৭.০০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। কোথায় থাকবেন: বাগেরহাটে থাকার তেমন ভাল ব্যবস্থা নেই। তাই বাগেরহাটে থাকার চেয়ে খুলনাতে থাকাই উত্তম। এখানের কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেল হল ক্যাসেল সালাম , হোটেল রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল , দি হোটেল মিলেনিয়াম লি: , ওয়েষ্টার্ন ইন ইন্টারন্যাশনাল লি: , নিউ হোটেল টাইগার গার্ডেন, সি এস এস রেস্ট হাউজ , এলজিইডি রেস্ট হাউজ , কারিতাস রেস্ট হাউজ। এখানে আপনি ৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। প্রায় সবগুলোতেই খাবারের ব্যবস্থা আছে। একুশে সংবাদ//ট.ব.ন//০২.১০.২০১৯

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1