সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

উন্নয়নের গতিকে অব্যাহত রাখতে দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৫৭ এএম, জুলাই ১৪, ২০১৯
একুশে সংবাদ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যথাযথ পদক্ষেপ প্রহণের আহবান জানিয়ে বলেছেন, আপনারা দেখেবেন দুর্নীতির কারণে আমাদের অর্জনগুলো যেন নষ্ট হয়ে না যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আপনারা (জেষ্ঠ্য সরকারী কর্মকর্তা) তৃণমূল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করবেন। যাতে করে আমাদের এত কষ্টের অর্জনগুলো দুর্নীতির কারণে নষ্ট না হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী দুর্ণীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমরা এত খেটে, সারাদিন এত কাজের পরে যদি দুর্নীতির কারণে সব অর্জন নষ্ট হয়ে যায় সেটা হবে খুব দু:খজনক। এটা কোনভাবেই সহ্য করা হবে না। তিনি এ বিষয়ে সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার পাশাপাশি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হওয়ারও আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘যে ঘুষ নেবে সেই কেবল অপরাধী নয়, যে ঘুষ দেবে সে ও অপরাধী। কাজেই দুর্নীতির কারণে আমাদের উন্নয়নটা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূলত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা দলিল। একইভাবে মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবগণ সংযুক্ত দপ্তর/সংস্থাসমূহের সঙ্গে এবং দপ্তর/সংস্থাসমূহের প্রধানগণ মাঠ পর্যায়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহ, এ সকল উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গৃহীত কার্যক্রমসমূহ এবং এ কার্যক্রমের ফলাফল পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক ও লক্ষ্যমাত্রাসমূহ বর্ণনা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অর্থবছর সমাপ্ত হওয়ার পর ঐ বছরের চুক্তিতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রকৃত অর্জন মূল্যায়ন করা হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে প্রথম বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বা এপিএ প্রবর্তন করা হয়। এবার ৬ষ্ঠ বছরের মত এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের যে মানুষগুলি তাঁদেরকে সকল নাগরিক সুবিধাটা আমরা দিতে চাই। যাতে করে তাদেরকে কাজ খোঁজার জন্য আর গ্রাম থেকে শহরে আসতে না হয়। নিজের গ্রামেই সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা তারা পেতে পারে। তিনি বলেন, মানুষের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ বাড়ার ফলে এবং যেহেতু আমরা ঘোষণা দিয়েছি ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ তাই যত্রতত্র দালান কোঠা ও স্থাপনা তৈরী হওয়ায় কৃষিজমি কমে যাওয়ার একটা আশংকা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে মাষ্টার প্লান থাকা এবং তা যথাযথভাবে কার্যকরের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বোধ হয় আমাদের একটু দেখা উচিত যে, কিভাবে আমাদের কৃষি জমিগুলোকে আমরা রক্ষা করবো। পরিবেশ এবং প্রতিবেশ রক্ষা করে উন্নয়ন যেন পরিকল্পিতভাবে করা যায়। শিল্পায়নের জন্য সারাদেশে একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন,‘যত্র তত্র যেখানে সেখানে ঘর-বাড়ি এবং কল কারখানা এভাবে যদি হতে থাকে তাহলে যেমন আমাদের আবাদি জমিও নষ্ট হবে তেমনি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য নাগরিক সুবিধা দেওয়াটাও একটু কঠিন হয়ে যাবে। তিনি এজন্য মানুষকে বোঝানোর এবং নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপনা নির্মান করলে তারা যে সুবিধাগুলো পাবেন সেগুলো সম্পর্কে তাঁদের অবহিতকরণের জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান। একইসঙ্গে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী এই ব্যাধি নির্মূলে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন এবং এই ধারা অব্যাহত রাখার, যাতে করে কোনভাবেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকারও আহবান জানান। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়,বিভাগ এবং দপ্তরের সিনিয়র সচিব এবং সচিববৃন্দ একযোগে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে একে একে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তা তুলে দেন। বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি সম্পাদনের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ অনুষ্ঠানে ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সম্মাননা পত্র এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এরমধ্যে ২০১৭-১৮ সালের বার্ষিক কর্মসংস্থান চুক্তি সম্পাদনে সাফল্যের বিবেচনায় বিদ্যুৎ বিভাগ প্রথম, বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ দ্বিতীয় এবং জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিভাগ তৃতীয় স্থান অর্জন করায় অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবদের হাতে প্রধানমন্ত্রী ক্রেষ্ট এবং সম্মাননা পত্র তুলে দেন। শুদ্ধাচার চর্চা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং সরকারী কর্মচারিদের শুদ্ধাচার চর্চায় উৎসাহ প্রদানে সরকার প্রদত্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মালেক বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে তাঁর মন্ত্রণালয়ের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরুপ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে সম্মাননা পত্র গ্রহণ করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রলালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা বিভাগ এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণও প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে এপিএ’র সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মাননা পত্র গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম, মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব ড.আহমেদ কায়কাউস বক্তৃতা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। একুশে সংবাদ // এস.ব,স // ১৪.০৭.২০১৯

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1