সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মিলন মেলা

প্রকাশিত: ০৪:৩৩ পিএম, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও ) : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল জগদল সীমান্তে ১৫ এপ্রিল ভারত ও বাংলাদেশের ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। প্রতি বছর পাথর কালীর মেলা বিজিবি ও বিএসএফের সম্মতিতে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই এই সাক্ষাতের সুযোগ সৃষ্ঠি হয়। কাঁটাতারের বেড়া তাদের আলাদা করে রাখলেও আবেগ পৌছে যায় দেশকালের সীমানা ডিঙ্গিয়ে। ভারতে নির্বাচন চলমান। তারপরও পারেনি লোকজনকে আটকে রাখতে। সীমান্তে আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করতে লোকজন ছুটে এসেছেন। মেলা স্থলে কথা হয় লালমনিরহাট থেকে আসা তহিদুলের সাথে তিনি বলেন অনেক বছর পর ছোট ছোট খালার দেখা পেয়ে চোখে আনন্দ যেন বাধ মানছিল না ভাই। ছোট খালা থাকেন ভারতের পশ্চিম দিনাজপুরে। অনেক দিন দেখা না হলেও আজ রক্তের টান ঠিকই তাদের হাজির করেছে কাঁটাতারের পারে। বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর এবং ভারতে কোচবিহার, আসাম, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কলকাতা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বাই সাইকেল, অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস, মিনিবাস যোগে মেলা স্থলে হাজির হয় লাখো মানুষ। এর পর চলে প্রতিক্ষার প্রহর। সোমবার বিজিবি ও বিএসএফের সম্মতিতে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত মিলন মেলার অনুমতি দেওয়া হয়। সীমান্ত এলাকার স্থানীয়রা জানান, ভোর থেকে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষেরা এসে জড়ো হন সীমান্তে। দির্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকা একে অপরের সঙ্গে দেখা করা কথা বলার সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায় না কেউ। প্রতি বছর দু’দেশের স্বজনদের এ মিলন মেলা এখানে এক বিরল দৃশ্যের জন্ম দেয়। লাখো মানুষ কথা বলেছে এই দিনে তাদের প্রিয় স্বজনদের সাথে। দু’ দেশের সীমারেখা কাটাতার দিয়ে আলাদা করা হলেও আলাদা করা যায়নি তাদের ভালবাসার টান। দীর্ঘদিন দুরে থাকা, দেখা হওয়ায় অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। আবার কেউ প্রিয়জনের দেখা না পেয়ে বাড়ি যেতে হয় চোখে পানি নিয়ে। দু’দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা সাধারণ মানুষ টাকা পয়সার অভাবে পাসপোর্ট ভিসা করতে পারেন না তারা এই দিনটির অপেক্ষয় থাকে। সারা বছর দু দেশের মানুষ অপেক্ষা করে এই দিনটির জন্য। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আগে থেকেই জানিয়ে দেয় স্বজনরা। কে কোথায় দেখা করবে। ভারতীয় অধিবাসীরা কাঁটাতারের পাশে এলে সেখানে বাংলাদেশের ও লাখো নারী পুরুষ সমবেত হয়। ভারতীয় সীমান্তে মেয়ে কল্পনা রাণী ও মা গীতারাণী বাংলাদেশ সীমান্তে সঙ্গে নাতী নাতনি সবাই সবার সাথে কান্নাজড়িত কন্ঠে কথা বলছে। গীতারাণী বলেন, ৫ বছর পর জামাই ও মেয়ের দেখা পেলাম একে অপরকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছা থাকলেও পারছিনা। বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাঝখানে কাঁটাতারের বেড়া। ইচ্ছে হচ্ছিল একটু ছুঁয়ে দেখার কিন্তু ছুতে পারছিলামনা। জড়িয়ে একটু চিৎকার করে কান্না করি তবে হয়তো দির্ঘদিনের জমে থাকা কষ্টগুলো থেকে একটু রেহাই পেতাম বলছিলেন ভারতের মাকড় হাট থাকা ছোট বোন মরজিনাকে দেখতে আসা দিনাজপুরের আবুল হোসেন। পাথর কালীর মেলার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নগেন কুমার পাল জানান,কৃষকের ধান মাঠে থাকার কারনে এক সপ্তাহ পিছিয়ে এ মেলা করা হচ্ছে। ১৯৭৪ সালের পর উপজেলার সীমান্ত এলাকা পাক ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধিনে ছিল। এ কারনে দেশ বিভাগের পর আত্মীয় স্বজনেরা দু’দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই সারা বছর কেউ কারো সাথে দেখা সাক্ষাত করতে পারেননা। অপেক্ষা করে থাকে এই দিনটির জন্য। থানা অফিসার ইনর্চাজ আব্দুল মান্নান বলেন আইন শৃংখলার রক্ষার জন্য পুলিশ বাহিনী সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। একুশে সংবাদ // এস.আকাশ// ১৫.০৪.২০১৯

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1