সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পান চাষে কম খরচে বেশি লাভ

প্রকাশিত: ১২:০৭ পিএম, অক্টোবর ২৩, ২০১৮
নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সদরের কুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, পোড়াবাদুরিয়া, গোবরা, গোয়ালবাড়ীসহ ,বীড়গ্রাম লোহাগড়া উপজেলার এড়েন্দা,শারুলিয়া, ধোপাদা, মল্লিকপুর, দিঘলিয়া, রামপুরা, লক্ষ্মীপাশা, ইতনা এবং কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া, মহাজন, টুনা, খাসিয়াল, বাঅইসোনা, কলাবাড়িয়া, পুরুলিয়া গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে পানের আবাদ হচ্ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার পান চলে যাচ্ছে ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় নড়াইলের কৃষকরা ঝুঁকছেন পান চাষে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদনের ৮৫ ভাগ পান যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে দোঁয়াশ মাটিতে দেড় ফুট দূরত্বে সারি বেধে ১ফুট দূরে দূরে পানের কা- লাগিয়ে দিতে হয়। প্রতিটি পানের লতা থেকে ১২-১৫টি চারা লাগানো যায়। বাঁশ, পাটকাঠি, জিআই তার ,কাশবন, সুপারি পাতা দিয়ে পানের বরজ বানাতে হয়। পানের লতাটি ধীরে ধীরে বড় হয় এবং পাটকাঠি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে। ৫-৬ মাস পর পান বিক্রির উপযোগি হয়। একটি বরজ থেকে সর্বনিম্ন ১৫ বছর একাধারে পান পাওয়া যায়। যদি পানের ফাপ পচা রোগ না হয় তাহলে বরজটি ৪০-৫০ বছর থাকে। আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে পানের ফাপ পঁচা রোগ হয়। এটি পানের সবচেয়ে বড় রোগ। এ রোগ দমনে ফ্লোরি, এডমা ও কাফেডার নামে এই তিনটি ঔষধ ব্যবহার করা হয়। শীতের সময় এক প্রকার বিষাক্ত কুয়াশা পান গাছে লাগলে পান পাতা ঝরে যায় এতে চাষীদের মারাত্মক ক্ষতি হয় । নড়াইলে সাধারণত দুই প্রকার পান চাষ হয়, মিষ্টি পান ও সাচি পান। তবে জেলায় মোট চাষের ৮০ ভাগই মিষ্টি পান । এ বছর জেলায় ১৭৯৮ একর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। জেলার তিনটি উপজেলার মধ্যে কালিয়া উপজেলায় প্রায় পঞ্চাশ ভাগ পান চাষ হয়। দশ বছর আগে জেলায় পানের আবাদ হত মাত্র ৭শ’ থেকে ৮শ’ একর জমিতে। বর্তমানে তা বেড়ে দিগুণ হয়েছে। সদর উপজেলার গোয়ালবাড়ী গ্রামের পান চাষি ভবেস বিশ্বাস, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, পান চাষ আমাদের পূর্ব পুরুষের পেশা এ পেশা আমি ধরে রেখেছি। ২৫ বছর যাবৎ পানের আবাদ করছি। বর্তমানে আমার ৭২ শতক জমিতে দুটি বরজ আছে। এক একর জমিতে প্রথম বছর পান চাষ করতে ১ লাখ ২০ থেকে ১ রাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। দ্বিতীয় বছর থেকে খরচ খুবই কম। প্রতি বছর খরচ বাদে একর জমি থেকে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়। এর উপর নির্ভর করে আমার সংসার চলছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালভাবে জীবন যাপন করছি। লক্ষ্মী রানী বিশ্বাস, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, পান চাষ করেই আমাদের সংসার চলে। আমি ও আমার স্বামী দুজনেই বরজে কাজ করি। ২৭ বছর ধরে পানের বরজ করে আসাছি । বর্তমানে ২৩ শতক জমিতে পানের বরজ রয়েছে। প্রতিহাটে সপ্তাহে দু’দিন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার পান বিক্রি করি। এখান থেকেই আয় করে সংসারের খরচসহ সন্তানদের লেখাপড়ায়ম ব্যয় করা হয়। নড়াইল শহরের রূপগঞ্জের হাটে প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার পানের সবচেয়ে বড় হাট বসে। ৮০টি পানে ১ পন হয় যা আকার ভেদে ৩০-২০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। পান ব্যবসায়ী খোকন দাস ও গোপাল বিশ্বাস, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, আমরা দির্ঘদিন যাবৎ পানের ব্যবসা করে আসছি। নড়াইলের বিভিন্ন হাট থেকে পান কিনে নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করি। এখানকার পান সুস্বাধু হওয়ায় এ পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমাদের লাভও ভাল হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায়, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, নড়াইলের মাটি পান চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত হওয়ায় এখানে দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির পান চাষ করে চাষিরা। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অনেকে পানের চাষ শুরু করেছে । প্রতি বছর পানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা দেয়া করা হচ্ছে। একুশে সংবাদ // এস.উজ্জল // ২৩.১০.২০১৮

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1