সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

এশিয়া কাপে উড়ন্ত সূচনা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ১০:০৮ এএম, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮
একুশে সংবাদ : মুশফিকুর রহিমের অসাধারন সেঞ্চুরিতে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৪তম আসরের উড়ন্ত সূচনা করলো বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রুপে এবং আসরের প্রথম ম্যাচে গতরাতে শ্রীলংকাকে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগাররা। ব্যাট হাতে ১৪৪ রানের দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন মুশি। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। কিন্তু শুরুটা মোটেই ভাল করতে পারেননি দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন শ্রীলংকান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। প্রথম চার বল থেকে ১ রান দেন মালিঙ্গা। ওভারের পঞ্চম ও শেষ বলে বাংলাদেশ ওপেনার লিটন ও তিন নম্বরে নামা সাকিব আল হাসানকে শুন্য হাতে ফিরিয়ে দেন মালিঙ্গা। তার আউট-সুইং না বুঝে স্লিপে ক্যাচ দেন মিথুন। আর মালিঙ্গার ইন-সুইংয়ের কাছে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হন সাকিব। ইনিংসের পরের ওভারে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবালও। তবে আউট হয়ে নয়, শ্রীলংকার আরেক পেসার সুরাঙ্গা লাকমলের শেষ ডেলিভারিতে বাঁ-হাতের কব্জিতে আঘাত পান তামিম। এরপরই মাঠ ছাড়েন তিনি। তখন তার রান ছিলো ২। ৩ রানের মধ্যে লিটন-সাকিবের সাথে তামিমকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে সামনে এগিয়ে যাবার সাহস দেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন। বেশ সর্তকতার সাথে খেলতে থাকেন তারা। ফলে প্রথম পাওয়া-প্লে ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২৪ রান। উইকেটে সেট হয়ে পরের দশ ওভারের রানের গতি বাড়িয়েছেন মুশফিক ও মিথুন। ১১ থেকে ২০ ওভারে ৭৮ রান যোগ করেন মুশফিক-মিথুন জুটি। এরমধ্যে নিজের চার ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মিথুন। অন্যপ্রান্তে হাফ-সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন মুশফিকুর। কিছুক্ষণবাদে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনিও। অর্ধশতকের পরও দলের রানের চাকা ভালোই ঘুরাচ্ছিলেন মিথুন-মুশফিক জুটি। এতে ২৫ ওভার শেষে সাড়ে পাঁচের কাচছাকাছি গড় রেখে স্কোরবোর্ডে ২ উইকেটে ১৩৪ রান সংগ্রহ করেন তারা। তবে ২৬তম ওভারে এই জুটিতে ভাঙ্গন ধরান ইনিংসের শুরুতে বাংলাদেশ শিবিরে জোড়া আঘাত হানা শ্রীলংকার মালিঙ্গা। ওভারের তৃতীয় বলে মালিঙ্গাকে অহেতুক ওভার বাউন্ডারি মারতে গিয়ে অাকাশে বল তুলে দেন মিথুন। সেটি তালুবন্দি করতে ভুল করেননি শ্রীলংকার কুশল পেরেরা। শেষ পর্যন্ত ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৮ বলে ৬৩ রান করে থেমে যান মিথুন। যা তার চার ম্যাচ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। দলীয় ১৩৪ রানে মিথুন ফিরে যাবার পর বাংলাদেশ ইনিংসে মিনি ধস নামে। ৬ রানের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন। দু’জনই ১ রান করে করেন। ১৪২ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোয় একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে টিকে ছিলেন একমাত্র মুশফিক। লোয়ার-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজ ও অধিনায়ক মাশরাফিকে নিয়ে দলের স্কোর দু’শর কাছাকাছি নিয়ে যান মুশফিকুর। দলীয় ১৯৫ রানের মধ্যে আউট হন মিরাজ ও মাশরাফি। মিরাজ ১৫ ও ম্যাশ ১১ রান করেন। দশ নম্বরে নামা রুবেল ২ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ২৬ রান যোগ করেন মুশি। এরমাঝে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরিও তুলে নেন মুশফিকুর। ২০১৭ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছিলেন তিনি। দলীয় ২২৯ রান ও ৪৭তম ওভারের পঞ্চম বলে শেষ ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজ আউট হলে, হাতের ব্যাথা নিয়ে ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন তামিম। শুধুমাত্র উইকেটে টিকে থেকে মুশফিককে সঙ্গ দেন তামিম। এই সুযোগে আরও ৩২ রান এনে দেন মুশফিক। ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে লং-অনে ক্যাচ দিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিক আউট হলে তিন বল বাকি থাকতে ২৬১ রানে বাংলাদেশ ইনিংস। ১১টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৫০ বলে ১৪৪ রান করে আউট হন মুশফিক। এটিই তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এশিয়া কাপের ইতিহাসে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসও এটি। অন্যপ্রান্তে ২ রান নিয়ে দ্বিতীয়বারের ব্যাট হাতে ঐ স্কোরেই অপরাজিত থাকেন তামিম। শ্রীলংকার পক্ষে মালিঙ্গা ১০ ওভারে ২৩ রানে ৪ উইকেট নেন। ২৬২ রানের টার্গেট খেলত নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশ বোলারদের উপর চড়াও হন শ্রীলংকার ওপেনার উপুল থারাঙ্গা। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফির করা প্রথম ওভার থেকে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৩ রান তুলে নেন থারাঙ্গা। পরের ওভারে বাংলাদেশের আরেক পেসার মুস্তাফিজুরকে পরপর দু’টি চার মারেন থারাঙ্গা। তবে ঐ ওভারের শেষ বলেই শ্রীলংকার আরেক ওপেনার কুশল মেন্ডিসকে শুন্য হাতে বিদায় দেন ফিজ। মুস্তাফিজুরের উইকেট শিকারে যেন উৎসাহিত হয়ে উঠেন মাশরাফি। তাই নিজের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে মারমুখী মেজাজে থাকা থারাঙ্গাকে বোল্ড করে বিদায় দেন ম্যাশ। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ বলে ২৭ রান করেন থারাঙ্গা। শ্রীলংকা ইনিংসে তৃতীয় আঘাতও হানেন মাশরাফি। চার নম্বরে নামা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে রানের খাতাই খুলতে দেননি টাইগার দলপতি। ২৭ বলের ব্যবধানে ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেকাদায় পড়ে যায় শ্রীলংকা। শ্রীলংকার উপর চাপ আরও বাড়ে, অন্যপ্রান্তে বল হাতে অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ উইকেট শিকার করলে। তিন নম্বরে নামা কুশল পেরেরা ১১ রান করে মিরাজের প্রথম শিকার হন। এতে ৩৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে শ্রীলংকা। এই অবস্থায় শ্রীলংকার মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ভরসা হয়ে উঠেন। কিন্তু লংকানদের মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের উইকেটে সেট হবার আগে বিদায় দেন বাংলাদেশের বোলাররা। ৯ রানের ব্যবধানে শ্রীলংকার তিন মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, দাসুন শানাকা ও থিসারা পেরেরা প্যাভিলিয়নে নিজেদেও অবস্থান সংহত করে বাংলাদেশ । ১৬ রান করা ম্যাথুজকে পেসার রুবেল ও ৬ রান করা পেরেরাকে অফ-স্পিনার মিরাজ আউট করেন। ৭ রান করে রান আউট হন শানাকা। তাই ৬৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারের পথ দেখে ফেলে শ্রীলংকা। লংকানদের জন্য বড় ব্যবধানে ম্যাচ হার সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু শেষদিকে, দিলরুয়ান পেরেরা ও সুরাঙ্গা লাকমল ছোট দু’টি ইনিংস খেলে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমান। পেরেরা ২৯ ও লাকমল ২০ রান করেন। আর দশম ব্যাটসম্যান আমিলা আপোনসোকে ৪ রানে বিদায় দিয়ে শ্রীলংকাকে ১২৪ রানেই গুটিয়ে দেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বোলিং-এ নিজেকেসহ ছয়জন বোলার ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। সকলেই উইকেট শিকার করেছেন। তিন ‘ম’ মাশরাফি-মুস্তাফিজুর-মিরাজ ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন সাকিব-রুবেল ও মোসাদ্দেক। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বের নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ। ঐ ম্যাচ জিতলেই হেসেখেলেই শেষ চারে উঠবে মাশরাফির দল। একুশে সংবাদ // এস.ব,স // ১৬.০৯.২০১৮

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1