সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দীর্ঘ ১৬ বছর নষ্ট হয়ে পড়ে আছে বিদ্যুতের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রর যন্ত্রপাতি, ঝিনাইদহের ৫ টি ইউনিয়নের হাজার হাজার গ্রাহক সেবা থেকে বঞ্চিত, মেরামতের উদ্যোগ নেই

প্রকাশিত: ০৮:১৭ এএম, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৩
আহমেদ নাসিম আনসারী ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাট-গোপালপুর বাজারে অবস্থিত ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিষ্টিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের (ও.জো.পা.ডি.কো) গ্রাহক সেবা কেন্দ্রটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘ ১৬ বছর। ষ্টেশন ভবনটিতে বাস করছে শিয়াল-কুকুর। সামনের খোলা জায়গায় বসে মাবকসেবীদের নিয়মিত আড্ডা। এদিকে সাব ষ্টেশনটি বন্ধ থাকায় এর আওতাধীন সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের হাজার হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক দীর্ঘদিন গ্রাহক সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরের শহর ঝিনাইদহে অবস্থিত সাব-ষ্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন থাকায় ওই এলাকার গ্রাহকরা ঠিকমতো ভোল্টেজ পাচ্ছেন না। আর লাইনে কোন ত্র“টি দেখা দিলে গোটা এলাকার সঞ্চালন বন্ধ করে সেই ত্র“টি মেরামত করতে হচ্ছে। যার কারনে সময় নষ্ট হয় বেশী। যতক্ষন মেরামত শেষ না হচ্ছে ততক্ষন গোটা এলাকা থাকছে অন্ধকারে। হাট-গোপালপুর বাজারের বাসিন্দা মসিয়ার রহমান জানান, ১৯৮৮ সালে হাট-গোটালপুর বাজারে এই সাব-ষ্টেশনটি স্থাপন করা হয়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান হাট-গোপালপুর বাজারের পাশ্ববর্তী গ্রাম হুদা-পুটিয়ার বাসিন্দা সামছুল ইসলাম এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে এই সাব-ষ্টেশনটি স্থাপন করেন। এই সাব-ষ্টেশনটি স্থাপনের পর তাদের এলাকার পদ্মাকর, হরিশংকরপুর, পোড়াহাটি, দোগাছী ও ফুরসন্দি ইউনিয়নের বিদ্যুৎ গ্রাহকরা এই সেবা কেন্দ্র থেকে সেবা পেয়ে আসছিলেন। ৩৩ হাজার কে.বি লাইন থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে এই সাব ষ্টেশনের ট্রান্সফারমার এর মাধ্যমে ১১ হাজার কে.বি লাইনে সরবরাহ করা হতো। এতে অত্র এলাকার গ্রাহকরা সঠিক ভাবে বিদ্যুৎ পেতেন। ভোল্টেজ ভালো থাকায় তাদের এলাকার ছোট ছোট মিল কল-কারখানা, বাসা বাড়ির টিভি-ফ্রিজ ভালো ভাবে চলতো। মসিয়ার রহমান আরো জানান, ট্রান্সফারমার ত্র“টির কথা বলে ১৯৯৭ সালে হঠাৎ করে সাব-ষ্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখানে কর্মরত ৬ জন কর্মচারীও ক্রমান্বয়ে অন্যত্র চলে যান। পড়ে থাকে সরকারের কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। এক পর্যায়ে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়ে যায় ষ্টেশনটি। এভাবে পড়ে থাকার কারনে ওই ষ্টেশনের মুল্যবান যন্ত্রপাতি অনেক চুরি হয়ে গেছে। ভবনটির জ্বানালা-দরজা ভেঙ্গে পড়েছে। ঘরের মধ্যে বাস করছে শিয়াল-কুকুর। আর বাইরে মাদকসেবীদের আড্ডা চলে প্রতিনিয়ত। হাট-গোপালপুর বাজারের আরেক ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম জানান, এই সাব ষ্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দুর থেকে সঞ্চালন লাইন আসায় ঠিকমতো ভোল্টেজ পাচ্ছেন না। তিনি জানান, হাট-গোপালপুর বাজারে প্রায় ১ হাজার চাতাল রয়েছে। আছে ১০০ টি রাইচ মিল ও ১০ টি অটো রাইচ মিল। এছাড়া রয়েছে প্রায় ৭ শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যারা ঠিকমতো ভোল্টেজ না পেয়ে প্রায়ই মেশিন বন্ধ করে বসে থাকতে হয়। এছাড়া বাসা বাড়িতে ভোল্টেজ সমস্যার কারনে প্রায়ই টিভি-ফ্রিজ নষ্ট হচ্ছে। আমিরুল ইসলাম আরো জানান, লাইনে কোন ত্র“টি দেখা দিলে সুদুর ঝিনাইদহ থেকে চেক করার পর ত্র“টি ধরা পড়ে। আর এই চেক করতে করতে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায়। ততটা সময় দীর্ঘ এলাকার গ্রাহকদের থাকতে হয় অন্ধকারে। কিন্তু ষ্টেশনটি চালু থাকা কালে সাব ষ্টেশনটির আওতাধীন লাইন চেক করে সল্প সময়ে ভালো করা সম্ভব হতো। যা গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতো। এ ব্যাপারে ও.জো.পা.ডি.কো’র ঝিনাইদহস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কি কারনে ষ্টেশনটি বন্ধ করা হয়েছিল তা তিনি বলতে পারেন না। তবে এটা চালু হলে গ্রাহকদের সাথে কর্মকর্তা কর্মচারীরাও উপকৃত হবেন। কোন ত্র“টি দেখা দিলে গোটা এলাকার লাইন বন্ধ করতে হবে না। পাশাপাশি অনেক খোজাখুজিও করতে হবে না ক্রুটি ধরতে। যে কারনে তারা বিষয়টি মেরামতের জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। আশা করছেন অল্প দিনের মধ্যে এই সাব ষ্টেশনটি আবার চালু হবে। উপকৃত হবে ওই এলাকার হাজার হাজার গ্রাহক।

বিভাগের আরো খবর