সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দুরা ভারত ছেড়ে যাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৪:২১ পিএম, জুলাই ১১, ২০১৮
একুশে সংবাদ : পাকিস্তানে অত্যাচার-বৈষম্যের কারণে যেসব হিন্দুরা ভারতে চলে এসেছিলেন, তাঁদের একটা অংশ আবারও ফিরে যেতে শুরু করেছেন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ভারতের নাগরিকত্ব না পেয়ে আবারও নিজের দেশে ফিরতে শুরু করেছেন এঁরা।খবর বিবিসি । নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১৬ সালেই ঘোষণা করেছিল যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান সহ প্রতিবেশী দেশগুলিতে কোনও হিন্দু যদি ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হন, তাহলে তাঁদের স্বাগত জানাবে ভারত, দেবে নাগরিকত্ব। কিন্তু পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দুদের একাংশের এখন মনে হচ্ছে যে ওই ঘোষণাই সার হয়েছে, নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে না নানা অছিলায়। পাকিস্তান থেকে হিন্দুদের ভারতে চলে আসা শুরু হয়েছিল ১৯৬৫-তে দুই দেশের যুদ্ধের পরেই। তারপরে আরও এক ঝাঁক হিন্দু ভারতে চলে এসেছিলেন ৭১-এর যুদ্ধের সময়, আর শেষবার বড় সংখ্যায় হিন্দুরা পাকিস্তান ছেড়ে আসেন ৯২-৯৩ সালে, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরবর্তী সময়ে। কিন্তু অন্য বছরগুলোতেও অল্প হলেও পাকিস্তান থেকে হিন্দুদের ভারতে চলে আসা বন্ধ হয় নি। এঁদের অভিযোগ, হিন্দু হওয়ার জন্যই পাকিস্তানে নিয়মিত অত্যাচারের সম্মুখীন হতেন তাঁরা। রাজস্থানের যোধপুর শহরের বাসিন্দা এক শ্রমিক কিষান পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের সাঙ্ঘার জেলা থেকে ভারতে চলে এসেছেন ২০০০ সালে। তিনি বলছিলেন, আমার বাবা-মা ভারত থেকেই পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। তাই ভারতকেই নিজের দেশ বলে মনে করি। "কিন্তু পাকিস্তানে আমাদের অবস্থা এমনই ছিল যে নিজের নাম পর্যন্ত বলতে সাহস পেতাম না, হিন্দু নাম শুনলেই সমস্যা হত।" যোধপুর শহরেরই আরেক বাসিন্দা গোর্ধন ভীল পাকিস্তানের টান্ডো সুমরো থেকে ভারতে চলে এসেছেন ২০০১ সালে, কিন্তু এখনো নাগরিকত্ব পান নি তিনি। ভীলের কথায়, "ধর্মীয় নিপীড়নের কারণেই পরিবার সহ ভারতে চলে আসি। কিন্তু এত বছরেও ভারতের নাগরিকত্ব পেলাম না। দীর্ঘমেয়াদী ভিসা নিয়ে থাকতে হয় ভারতে। যোধপুর শহরের বাইরে বেরতে পারি না। যেখানে ভাড়া থাকি, সেখানে বিদ্যুৎ, জলের ব্যবস্থা কিছুই নেই। ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজে ভর্তি করানোটাও সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এত দিন ধরে নাগরিকত্বের আবেদন করেছি, কিন্তু বারে বারে ঘোরানো হচ্ছে নানা যুক্তিতে। ভীল বা কিষানের মতো বহু মানুষ দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও নাগরিকত্ব না পেয়ে তাঁদের কেউ কেউ আবার ফিরে যেতে শুরু করেছেন পাকিস্তানে। সম্প্রতি রাজস্থান হাইকোর্টে দায়ের হওয়া এক জনস্বার্থ মামলায় হিন্দুদের পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন সেখানকার বিদেশী নাগরিক পঞ্জীকরণ অফিসার শ্বেতা ধনকার। তিনি বলেন, ২০১৫ থেকে ১৭ এই সময়ের মধ্যে পাকিস্তান ফিরে গেছেন ৯৬৮ হিন্দু। সংগঠনটির সভাপতি হিন্দু সিং সোধা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "সেদেশে ধর্মের কারণে অত্যাচারিত হচ্ছিলেন, বৈষম্যের শিকার হচ্ছিলেন বলেই তো এই মানুষরা ভারতে চলে এসেছিলেন। কিন্তু এখানে যদি তারা স্বাগতই না হবেন, তাহলে তো তারা ফিরে যাবেনই।" "তারা তো দেখতে পাচ্ছেন যে সমস্যা শুধু পাকিস্তানে নয়, ভারতেও রয়েছে। তাই নিজের দেশে ফিরছেন তারা। শুধু যে নাগরিকত্ব না দিয়ে স্বাগত জানানো হচ্ছে না তা তো নয়। নানা সময়ে গোয়েন্দা থেকে শুরু করে নানা দপ্তর এঁদের রীতিমতো হেনস্থাও করছে।" বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে ঘোষণা করেছিল যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান আফগানিস্তান থেকে অত্যাচারিত হয়ে যেসব সংখ্যালঘু মানুষ ভারতে চলে আসবেন, তাদের এদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু গোর্ধণ ভীল বলছেন," ২০০৯ সালে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম । গত মাসে একটা শিবির খুলে ১০৮ জনকে নাগরিকত্ব দেওয়া হল - যারা অনেক পরে এসেছে। কিন্ত আমার আবেদন এখনও ঝুলে রয়েছে। সরকার তো ঘোষণা করেছে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে, কিন্তু নীচের তলায় কর্মী অফিসাররা তো হেনস্থাই করছে শুধু।" হিন্দু সিং সোধা আরও জানাচ্ছিলেন, যেসব হিন্দু ভারত থেকে আবারও পাকিস্তানে ফেরত চলে গেছেন, তাঁদের সেখানে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে যে ভারতে গিয়ে তোমরা কী পেলে! চাপ আসছে ধর্ম পরিবর্তনেরও। নানা জায়গা থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে সোধা বলছিলেন যে ভারত থেকে ফেরত যাওয়া হিন্দুদের অনেককেই ধর্ম পরিবর্তন করতে হয়েছে। একুশে সংবাদ // এস.ব,স // ১১.০৭.২০১৮

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1