সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দুই কিশোরীকে একই রশিতে ঝুলিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ১১:৫২ এএম, মে ১৯, ২০১৮
একুশে সংবাদ : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে দুই ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণ শেষে মুখে বিষ ঢেলে ও ফাঁস দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার পৌর সদরের মহাদেবপুর ত্রিপুরা পল্লীর একটি ঘর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। আবুল হোসেন নামের স্থানীয় এক বখাটে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দুই কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের জঙ্গল মহাদেবপুর ত্রিপুরাপাড়ার বাসিন্দা সুমন ত্রিপুরার ঘরে একই রশিতে সুমনের মেয়ে ছবি রানী ত্রিপুরা (১১) ও প্রতিবেশী ফলিন ত্রিপুরার মেয়ে সুকুলতি ত্রিপুরার (১৫) ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। ঘটনার সময় দুই কিশোরীর মা-বাবা বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং আশপাশের বাসিন্দারা দড়ি কেটে লাশ দুটি নামিয়ে আনে। পরে তাঁরা দেখেন যে মেয়ে দুটির মুখ থেকে বিষ জাতীয় তরল পদার্থ ঝরে পড়ছে। যেখানে লাশগুলো ঝুলছিল সেখানেও এ ধরনের পদার্থ দেখেন তাঁরা। এদিকে ঘটনার পর পাড়ার কয়েকটি শিশু জানায়, পাশের গ্রামের কয়েক যুবক দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে ওই ঘরে প্রবেশ করেছিল। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহ তীব্রতর হয়। কারণ পাশের চৌধুরীপাড়া এলাকার এক বখাটে যুবক বেশ কিছুদিন ধরে সুকুলতি ত্রিপুরাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রায়ই সে ত্রিপুরা পাড়ায় ঢুকে মেয়েটিকে বিরক্ত করত। এ নিয়ে ২০-২৫ দিন আগে স্থানীয়রা একটি বৈঠকও করে। কিন্তু ওই বখাটেকে আটকানো যাচ্ছিল না। সে দলবল নিয়ে পাড়ার চারপাশে ঘুরঘুর করত। ফলে দুই কিশোরীর ঘরে কোনো অভিভাবক না থাকার সুযোগ নিয়ে তারা এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তাঁরা। ছবি ত্রিপুরার বাবা সুমন ত্রিপুরা বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ঈশ্বরের কাছে অনেক প্রার্থনা করে এই মেয়েটিকে পেয়েছিলাম। একটা ভারী কাজও মেয়েকে করতে দিতাম না। নিজে কষ্ট করে মেয়েকে অনেক আদরে রেখেছিলাম। এক বখাটে আমার সেই আদরের মেয়েকে হত্যা করেছে। অথচ তার সঙ্গে ওই ছেলেটার কোনো সম্পর্ক ছিল না। চৌধুরীপাড়ার আবুল হোসেন (২৫) নামের ওই যুবক পাশের বাড়ির সুকুলতি ত্রিপুরাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রাজি না হওয়ায় পাড়ার ভেতরে এসেই সে সুকুলতিকে বিরক্ত করত। বারণ করার পরও ছেলেটি প্রায়ই পাড়ায় এসে ওকে উত্ত্যক্ত করত। আজ (শুক্রবার) দুপুরেও ছেলেটি আরো দুজনকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ায় এসেছিল এবং সেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।’ মেয়ের নিথর মুখ দেখিয়ে কাঁদতে কাঁদতে সুমন ত্রিপুরা বলেন, ‘মেয়ের মুখে বিষও আছে আবার গলায় ফাঁসও আছে। আর ফাঁস লাগানো থাকলেও শরীরের বেশির ভাগই ছিল মাটিতে লাগানো। একটি মেয়ে বিষ খেয়ে কি আবার ফাঁস নিতে যায়? আর শরীরের অধিকাংশ মাটিতে থাকলে ফাঁসে কি মৃত্যু হয়?’ সুকুলতির বাবা ফলিন ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা অসহায় দুর্বল মানুষ। তাই ওই বখাটে আমার মেয়েকে এভাবে মেরে ফেলল। আমি এর বিচার চাইব কার কাছে। আমার তো টাকা-পয়সা নাই।’ এদিকে গতকাল বিকেল ৩টায়ও ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়নি। সন্তানের লাশ নিয়ে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না অভিভাবকরা। এ ঘটনায় মামলা করবেন নাকি লাশ দাফন করে ফেলবেন তাও বুঝতে পারছিলেন না। তাই হতভম্ব হয়ে সন্তানের লাশ ঘিরে তাঁরা আহাজারি করছিলেন। পরে এই প্রতিবেদক পুলিশকে জানালে সীতাকুণ্ড থানার ওসি ইফতেখার হাসান সেখানে ফোর্স পাঠানোর উদ্যোগ নেন। রাতেই লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি জানান। সূএ : কালের কন্ঠ একুশে সংবাদ // এস.ক.ক // ১৯.০৫.২০১৮

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1