সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দাফনের সময় নড়ে ওঠা শিশুটিকে বাঁচানো গেল না

প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
একুশে সংবাদ : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে মৃত ঘোষণার পর দাফনের সময় নড়ে ওঠা নবজাতক মীমকে বাঁচানো যায়নি। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের শিশু হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র-আইসিইউতে চিকিৎসাধীন শিশুটি মারা যায়। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ শিশুটির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নবজাতকটিকে বাঁচানো যায়নি। গতরাতে সে মারা গেছে। তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। নবজাতকটির মায়ের নাম শারমিন আক্তার (২৪) । তিনি ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার স্বামী মিনহাজ উদ্দিন পোশাক কারখানায় কাজ করেন। এ দম্পতি ঢাকার ধামরাইয়ের বাসিন্দা। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে মীমের জন্ম দেন শারমিন আক্তার। এর পরই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে ডেথ সার্টিফিকেট দেয় ঢামেক কর্তৃপক্ষ। স্বজনরা নবজাতকটিকে দাফন করতে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে গোসল করানোর সময় শিশুটি হঠাৎ নড়ে ওঠে কান্না করে। পরে তাকে কবরস্থান থেকে প্রথমে আজিমপুর মেটারনিটিতে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. আবদুল আজিজ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘শিশুটিকে বর্তমানে কার্ডিয়াক আইসিইউতে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা যে খুব একটা ভালো তা বলা যাবে না। তবে তাকে যে অবস্থায় এখানে আনা হয়েছিল তার চেয়ে ভালো আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তার হার্টবিট খুবই কম, শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছে না। সাত মাসে ভূমিষ্ঠ হওয়ায় তার ওজনও কম, মাত্র এক কেজি। শরীরে রক্তশূন্যতা আছে। নাভি দিয়ে রক্ত বের হয়েছে, এখানে নিয়ে আসার পর তা বন্ধ করা হয়েছে। একটু সুস্থ হলে লাইফসাপোর্ট খুলে দেয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। কিন্তু নবজাতক মীমের বেঁচে থাকার এমন প্রত্যাশার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যুর খবর জানায় শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দাফনের সময়ে মীমের নড়ে ওঠার বিষয়ে শিশু হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা যতটা জেনেছি, সোমবার সকালে কবর দেয়ার আগে শিশুটিকে গোসল করানো হয়। এ সময় তার হার্টবিট দেখতে পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে আজিমপুর মেটারনিটি হসপিটালে নেয়া হয়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এখানে (ঢাকা শিশু হাসপাতাল) নিয়ে আসা হয়। এদিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে মীমের মামা শরিফুল বলেন, ‘প্রথম যখন আমার বোনকে ভর্তি করি তখন ডাক্তাররা তাকে দেখে বলেন- গাছ নেবেন না ফল নেবেন। তখন বোনকে বাঁচাতে জোর দিই। আমি বলি, আমাদের গাছ চাই। এর পর রাতে আমাদের জানানো হয় শিশুটি নড়াচড়া করছে না। মারা গেছে।’ বাচ্চাটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ডাক্তাররা বলেন, ‘সে পেটে মারা গেছে। পরে তাকে একটি বক্সের ভেতরে রাখা হয়। তারপর আজিমপুরে নিয়ে যাওয়ার পর বাকি ঘটনা ঘটে।’ তিনি জানান, শিশুটি কবর দেয়ার সময় একটা নাম দিতে হয়, তাই আমি নাম দিয়েছিলাম মীম। এটি তার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। দুজনই চাকরি করে। তাদের বাড়ি ঢাকার ধামরাইয়ে। এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সোমবার বিকালে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসিরউদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, “হাসপাতালে ‘মৃত’ ঘোষিত সেই নবজাতকই গোরস্তানে ‘জীবিত’ শনাক্ত শিশুটি কিনা, সে বিষয়ে সন্দিহান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এ জন্য বিষয়টি তদন্তে ঢামেকের উপপরিচালক ড. বিদ্যুৎ কান্তি পালকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে। কমিটির বাকি তিন সদস্য হলেন- অধ্যাপক ড. শিখা গাঙ্গুলী, ড. মো ফেরদৌস আহমেদ ও ড. রওশন আরা সুলতানা।” তিনি বলেন, ‘২৭ সপ্তাহ প্রেগন্যান্সি নিয়ে শারমিন নামের ওই নারী ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হন। সকালে তার একটি স্টিলবর্ন বেবি (মৃত বাচ্চা) হয়। এখনও ওই নারীর ব্লেডিং হচ্ছে। তার চিকিৎসা চলছে। মৃত বাচ্চা হওয়ার বিষয়টি তার স্বজনদের জানানো হয় এবং বাচ্চাটিও হ্যান্ডওভার করা হয়েছে।’ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসিরউদ্দিন বলেন, আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে যে শিশুটিকে ‘জীবিত’ দাবি করা হচ্ছে সে ওই নারীরই কিনা। তদন্ত করা হবে এবং কী হয়েছে তা জানানো হবে। তবে এ বিষয়ে আমাদের সন্দেহ আছে।   একুশে সংবাদ // এস. কা.ক // ২৪.০৪.২০১৮

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1