সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বিমান দুর্ঘটনা : শিশু প্রিয়ন্ময়ীর স্মৃতি হাতড়ানো ফারুকের বাড়ি

প্রকাশিত: ০১:১৫ পিএম, মার্চ ২১, ২০১৮
শ্রীপুর প্রতিনিধি : ঘর ভর্তি মানুষ। নিচতলা, দোতলা, সিঁড়ি সব জায়গাতেই মানুষের আনাগোণা। কেউ চোখের জল মুছছেন আবার কেউ আফসোস প্রকাশ করছেন নানা ভাষায়। বাড়ি জুড়ে যারা থাকার কথা ছিল তারাই শুধু নেই। গাজীপুরের শ্রীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষা নগরহাওলা গ্রামের ফারুক হোসেন প্রিয়ক (এফ এইচ প্রিয়কের) দোতলা বাড়িটির দৃশ্যপট আজ এরকমই। নেপালে বিমান দুর্ঘটনার আটদিনের মাথায় সোমবার রাত আটটার দিকে ফারুক হোসেন প্রিয়ক (এফ এইচ প্রিয়কের) শিশুকন্যা তামাররা প্রিয়কসহ নিথর দেহের পরিচয়ে তার বাড়িতে প্রবেশ করে কফিন বন্দি হয়ে।   জৈনা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বলেন, হৃদয়ের টানে ফারুকের স্বজনদের দেখতে এসেছিলেন এ বাড়িতে। তিনি বলেন, ১২ মার্চের পর থেকে এ বাড়িতে বেশ কয়েকবার এসেছি। এ বাড়ির প্রতিটি দেয়ালে যেন বেদনার রং লেগে আছে। ফারুক বেঁচে থাকাবস্থায়ও তাদের বাড়িতে আসতাম। তার মেয়ে তামাররা প্রিয়ন্ময়ী বাড়িটি জাগিয়ে রাখত। সবাই কেবলই মেয়েটির কথা বলছে বারবার। এ বাড়ির কঠিন শোক থেকে বেরিয়ে আসার কোনো অবলম্বনই এখন আর বাকি রইল না। প্রিয়ন্ময়ী তার বাবা ফারুকের পথ ধরে ওপারে চলে গেছে। ছবি বেগম। তিনি ফারুকের বাড়ির গৃহপরিচারিকা। তিনি বলেন, গত এক বছর হতে চলল এ বাড়িতে রয়েছেন। তার দেখা নানা ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে তিন বলেন, শিশু কন্যা প্রিয়ন্ময়ী মায়ের শাসনের নানা ধরনের অভিযোগ দাদুর কাছেই করত। প্রিয়ন্ময়ী তার দাদুর সাথে সারাদিন দৌড়াদৌড়ী করে বাড়িটি মাতিয়ে রাখত। যেদিন নেপাল যাবে সেদিন বিমানে উঠার খবর শুনে আনন্দিত হয়েছিল। প্রতিদিন গোসলের সময় সে কান্নাকাটি করত। কিন্তু সেদিন গোসলের সময় হাঁসছিল আর কুট কুট করে বিমানে উঠার গল্প করছিল। বিমান কেমন হবে, বিমানের ভেতর কেমন থাকে ইত্যাদি। প্রিয়ন্ময়ীর দাদু ফিরুজা বেগম বলেন, তিনি নিজ হাতে তাকে গোসল করিয়ে দিয়েছেন। প্রিয়ন্ময়ীকে আমি দাদু বলে ডাকতাম। আমার সাথে এখন আর কেউ দৌড়াদৌড়ি খেলবে না, দাদু বলে প্রিয়ন্ময়ী আর আমাকে ডাকবে না বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। ফিরুজা বেগমের ভাই তোফাজ্জল হোসেন জানান, প্রিয়ন্ময়ী প্রতিটি মুহুর্ত বাড়িটি মাতিয়ে রাখত। আমরা যখন আসতাম সে দৌড়ে আসত, শুভেচ্ছা জানিয়ে আমাদের কবিতা শোনাত। সদা হাস্যোজ্জল স্বভাবের এই শিশু কন্যার স্মৃতি ঘিরে রয়েছে আজ। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার বোনের জামাই শরাফত আলী মারা যান। কিন্তু পাঁচ বছর পরেই আবার একটি দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে সব শেষ হয়ে গেল। প্রসঙ্গত, ১২ মার্চ সোমবার নেপালে বিধ্বস্ত বিমানের যাত্রী ফারুক হোসেন প্রিয়ক ও তার শিশু কন্যা প্রিয়ন্ময়ী নিহত হয়। নিহত প্রিয়কের চাচাতো ভাই লুৎফর রহমান, সোমবার মরদেহ দুটি বাড়ীতে আনার পর মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শ্রীপুরের আব্দুল আউয়াল ডিগ্রী কলেজ মাঠ ও বেলা ১১টায় জৈনা বাজার এলাকার মাতব্বর বাড়ী মাঠে দু’দফা জানাযা শেষে প্রিয়ক ও প্রিয়ংময়ী’র মরদেহ প্রিয়কের নিজ বাড়ির সামনেই দাফন করা হয়।     একুশে সংবাদ // এস.সানি // ২১.০৩.২০১৮

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1