সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রামগঞ্জে রাস্তার ‘আপদ’ অবৈধ ট্রলিঃ গত বছরে নিহত ১১জন

প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
রামগঞ্জ প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জ উপজেলার মাঝিগাঁও সড়কে গত ৩০ ডিসেম্বর বেপরোয়া গতির একটি ট্রলির (ট্রাক্ট) সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকলেটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে মারা যায় লামচর ইউপির দাসপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী আবদুর রহিম (৪০)। গত এক বছরে (জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর) রামগঞ্জ উপজেলায় অবৈধ ট্রলিতে ১১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধ শতাধিক। অধিকাংশ নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পর্যবেক্ষণ ও রামগঞ্জ থানা সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আশারকোটা গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেনের জানান, অভাব-অনটনের সংসার তাঁর। মানুষের সহযোগীয় মেয়ে আমেনা আক্তার খুশি ও ছেলে রেদোয়ান হোসেনের পড়াশোনা চালান। গত বুধবার তাঁরা দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিতে কেন্দ্রে যাচ্ছিল। হঠাৎ তাদের বহনকারী সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে একটি ট্রলি (ট্রাক্ট) ধাক্কা দেয়। দুমড়েমুচড়ে যায় অটোরিকশাটি। পরীক্ষার্থী আমেনা-রেদোয়ানসহ চারজন আহত হয়। ভেঙে যায় আমেনার ডান হাত। মারাত্নক জখম হয় ডান চোখ। আশংকাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে। বন্ধ হয়ে গেছে ভাই-বোনের পরীক্ষা। ভেঙে গেছে তাঁর স্বপ্ন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু ইউছুফ ট্রলি মালিক সমিতির কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে আহত আমেনার চিকিৎসার জন্য দেন। গত ১২ জুলাই রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সড়কে অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় ট্রলি। এতে পানপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মমিন উল্যা (৫০) নিহত হয়। গত ১৮ জুন পানিওয়ালা সড়কে বেপরোয়া গতির একটি ট্রলি অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় অটোরিকশার যাত্রী সাইফুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তি। আহত হয় আরও এক নারীযাত্রী। ২০ মার্চ সমিতির বাজার এলাকায় ট্রলির ধাক্কায় আবদুল আজিজ (৫০) নামে এক কৃষক মারা যায়। তিনি ভাদুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। রামগঞ্জ থানা সূত্র জানায়, কৃষি কাজে (ক্ষেত চাষ) ব্যবহৃত ট্রাক্টর দিয়ে বানানো হয় ট্রলি। স্থানীয়ভাবে বানানোর কারণে এগুলো মানসম্মত হয়না। যেন-তেনভাবে ওয়ার্কশপে বানানো হয় বডি। থাকেনা পেছনে ব্রেকও। রাস্তায় চলাচল করা এগুলো বেআইনী। উপজেলায় শতাধিক ট্রলি অবৈধভাবে চলছে। এসব ট্রলি দিয়ে ইট, বালি, রড সিমেন্ট ও গাছসহ বিভিন্ন ভারী পন্য আনা-নেয়া করা হয়। এতে অহরহ ঘটে দুর্ঘটনা। ট্রলিতে গত এক বছরে ১১ জন নিহত হয়েছে। কমপক্ষে ৪০টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছে অর্ধ শতাধিক। তবে এসব ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। আবদুর রহিমের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ ও আবদুল আজিজের ছেলে মো. পলাশ জানান, বেপরোয়া গতির ট্রলির ধাক্কায় তাদের স্বজন মারা যান। কিন্তু ঝক্কি-ঝামেলার কারণে থানায় তারা মামলা করেনি। মানবাধিকার কর্মী ও শিশু সংগঠক এম এ রহিম জানান, রামগঞ্জে ট্রলি চলাচল সব চেয়ে বেশি। ট্রলি সড়কে চলাচল অবৈধ। এর চালকগুলোও অধক্ষ। এসব ট্রলি ধাক্কায় আহত ও পঙ্গুত্বের সংখ্য বাড়ছে। রামগঞ্জ ট্রলি মালিক সমিতির সভাপতি কালু সর্দার বলেন, ট্রলিতে করে কম দামে লোকজন মালামাল আনা-নেয়া করতে পারে। অবৈধ হলেও তা মানুষের উপকারে আসে। দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কভাবে চালাতে চালকদের কঠোরভাবে বলা হয়েছে। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তোতা মিয়া বলেন, ট্রলি রাস্তায় চলাচল অবৈধ। নিহতের ঘটনায় অনেকেই থানায় মামলা করে না। এগুলো রাস্তায় চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু ইউছুফ বলেন, ট্রলির ধাক্কায় পরীক্ষার্থী আমেনা আক্তার ও রেদোয়ান হোসেন আহতের ঘটনাটি আমার খুব কষ্ট লেগেছে। খবর পেয়ে আমি হাসপাতলে গিয়ে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাই। ডিসেম্বর মাসেও ট্রলির ধাক্কায় একজন মারা গেছে। এর আগেও বেশ কয়েকজন মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছি ট্রলি চলাচল বন্ধ করার জন্য কিন্তু পারিনি। এগুলো বন্ধের জন্য চেষ্টা করছি।   একুশে সংবাদ // এস.ছায়েদ // ১৫.০২.২০১৮

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1