সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রোহিঙ্গাদের জন্য বছরে ব্যয় হবে ৬৪০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ১০:৪৫ এএম, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
একুশে সংবাদ :নতুন করে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক খাতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্নেষকরা। তারা বলছেন, শুধু গত ২৫ আগস্টের পর আসা শরণার্থীদের এক বছরের জন্য খাদ্য, পয়ঃনিস্কাশন, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতেই কমপক্ষে ৬৪০ কোটি টাকা লাগবে। এ ছাড়া কক্সবাজারসহ আশপাশ এলাকায় জীবন-জীবিকা ও আর্থ-সামাজিক সংকট বাড়িয়ে দেবে। অর্থনীতি, নৃতাত্ত্বিক বিশ্নেষক ও শরণার্থী গবেষকরা সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ড. রাহমান নাসিরউদ্দিন দীর্ঘ দিন ধরেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা মিলে স্থানীয় অধিবাসীর সংখ্যা দেড় লাখের কিছু বেশি। এই এলাকায় আগে থেকেই রয়েছে চার লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। নতুন করে এসেছে চার লাখের বেশি। তিনি বলেন, ২০১২ সালে এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির ওপর গবেষণায় দেখা যায়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে সেখানে শ্রমের মজুরি কমে গেছে। আগে যেখানে একজন দিনমজুরের দৈনিক মজুরি ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সেখানে একজন রোহিঙ্গাকে মাত্র ৫০ টাকায় দিনমজুর নিয়োগ করা যায়। ফলে স্থানীয় অধিবাসী দিনমজুরের আয় দ্রুত কমে যায় এবং তাদের দৈনন্দিন জীবন-জীবিকার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। সাগরে মাছ ধরার জন্য জেলেদের নিয়োগ করার ক্ষেত্রেও নিয়মিত মজুরির ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমে রোহিঙ্গাদের নিয়োগ করা সম্ভব হয়। দেখা গেছে, গত চার-পাঁচ বছরে মাছ ধরার পেশা ৪০ ভাগই রোহিঙ্গাদের কাছে চলে গেছে। কম মজুরির কারণে নৌকার মালিকরা রোহিঙ্গাদেরই বেশি পছন্দ করেন। এই সামান্য মজুরিতেই তারা সন্তুষ্ট থাকে। এভাবে কক্সবাজার জেলার অধিকাংশ এলাকাতে দৈনন্দিন জীবিকার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এর বাইরে নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে গাছ কাটা ও পাহাড় কাটা পড়বে। টাকার অঙ্কের চেয়ে সার্বিক আর্থ-সামাজিক পরিবেশের ওপর চাপ এবং ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে। নতুন করে আসা সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গার প্রতিদিনের খাবার খরচ জনপ্রতি ১০০ টাকা ব্যয় করা হলে বছরে সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গার জন্য প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। এর বাইরে হিসাব করে দেখা যায়, প্রতি চারজনে একটি পরিবার ধরে একটি করে ঘর নির্মাণ করা হলেও প্রয়োজন প্রায় ৯০ কোটি টাকা। এ ছাড়া তাদের জন্য খাবার পানি ও পয়ঃনিস্কাশনে ব্যয় হবে অতিরিক্ত আরও প্রায় ১০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে টাকার অঙ্কেই ৬৪০ কোটি টাকা খরচ হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে জরুরি সহায়তার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থায় শরণার্থী সংকট দীর্ঘ হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় যত বছর গড়াবে, তত বেশি ব্যয়ের চাপ বাড়বে বাংলাদেশের ওপরেই। এ ব্যাপারে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান আহসান এইচ মনসুর বলেন, একটা দেশে যখন বড় আকারে শরণার্থীরা আসে তখন চাপ বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক। এখন এ চাপ মোকাবেলায় অন্যান্য দেশের কাছ থেকে যত বেশি আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যাবে, বাংলাদেশের ওপর চাপ তত কমবে। তবে চাপ মোকাবেলার সবচেয়ে কার্যকর উপায় দ্রুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। নতুন করে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তার জন্য এ মুহূর্তেই ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৬১৬ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। একুশে সংবাদ/ এস এস.সকাল /১৯.০৯.২০১৭

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1