সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত: ০৭:২৯ পিএম, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
একুশে সংবাদ : নির্ধারিত ক্যাম্পের ভেতরে থাকতে বলা হলেও রোহিঙ্গারা সে নির্দেশনা মানছে না। তারা ক্যাম্পের বাইরে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কক্সবাজার জেলার উখিয়ার কুতুপালং নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরের চিত্র এমনই। রাস্তার দু’ধারে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। রাস্তার দু’ধারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী। মূলত তারা ত্রাণের অপেক্ষায় বসে আছেন। কেউ কেউ আবার কর্দমাক্ত পায়ে কক্সবাজার শহরের দিকে রওনা দিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে তাদের বারবার ক্যাম্পের ভেতরে যেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা সে নির্দেশনা কানে তুলছেন না। মিয়ানমারের ফরিয়াবাদ বাজার থেকে ছয়দিন আগে হেঁটে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন দিলারা খাতুন। বলেন, ছয়দিনে হালকা কিছু খাবার পেয়েছি। এক মুঠো ভাতও পাইনি। ক্যাম্পের ভেতরে খাবারের জন্য হুড়োহুড়ি করতে হয়, কেউ পায় কেউ পায় না। ছোট বাচ্চা নিয়ে আমি দৌড়াতে পারব না, তাই এখানে বসে আছি। এদিকে সরকার নির্ধারিত ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের চলাচল এবং তাদের পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও সেটি মানছেন না কেউ। কক্সবাজার লিংক রোড ও রামু এলাকায় অনেক রোহিঙ্গাকে পরিবারসহ হাঁটাচলা করতে দেখা গেছে। অনেককে ইজিবাইকে চড়ে বাংলাদেশি আত্মীয়ের বাসায় যেতেও দেখা গেছে। সিএনজি ও বাসে তাদের অবাধে চলাচল অব্যাহত আছে। স্ত্রী ও দুই বছরের সন্তান নিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রমজান আলী বলেন , রামুতে আত্মীয়ের বাড়ি। আগেও বেশ কয়েকবার এসেছি। বার্মিজ আর্মিদের নিপীড়নের কারণে তিনদিন আগে বাংলাদেশে এসেছি। এখন সেই আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছি। ক্যাম্পের বাইরে অবস্থান নেয়া মধ্যবয়সী নারী জবেদা বেগম বলেন, দু’দিন পাহাড় ডিঙিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করি। এরপর সীমান্ত থেকে ট্রাকে এখানে এসেছি। ক্যাম্পের ভেতরে যাওয়ার সুযোগ পাইনি, তাই বাইরে অবস্থান করছি। মা ও চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে উখিয়ায় আসা সাহিদা বলেন, নিজ চোখে যে গণ্ডগোল দেখলাম, এর চেয়ে কোনোমতে এখানে থাকাই ভালো। রাস্তায় থাকা আর ক্যাম্পে থাকা একই কথা। কিছু করে তো খেতে হবে। গত শনিবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এক বার্তায় রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে যাতায়াত এবং তাদের পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ক্যাম্পের আশপাশে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেলেও রোহিঙ্গাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে তাদের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। এদিকে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ফিরে যেতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বারবার মাইকিং করা হচ্ছে। মাইকিংয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা বলছেন, ‘আপনারা (রোহিঙ্গা) অনুগ্রহ করে ক্যাম্পের ভেতরে ফিরে যান। সেখানে আপনাদের জন্য খানাপিনা, চিকিৎসাসহ সবধরনের সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ ও বিদ্রোহী গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ সদস্যসহ বহু রোহিঙ্গা হতাহত হন। ওই ঘটনার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘শুদ্ধি অভিযান’র নামে রাখাইন রাজ্যে নিরীহ মানুষের ওপর বর্বর নির্যাতন শুরু করে। হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুনসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা দেশটির সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসী দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে না। নির্যাতনের ভয়ে প্রতিদিনই বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। সম্প্রতি জাতিসংঘের তথ্য মতে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএম এবং শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, সহসা মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে সমস্যার সমাধান করা না গেলে এ সপ্তাহেই বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। একুশে সংবাদ / এস এস.জা / ১৮.০৯.১৭

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1