সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলেরা

প্রকাশিত: ১০:৪৬ এএম, জুন ২২, ২০১৭
একুশে সংবাদ : দেশের উপকূলীয় জেলা ভোলায় নদী ও সমুদ্রে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। আষাঢ়ের অবিরাম বর্ষায় সামনে ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই নদী-সাগরে যাওয়ার জন্য জেলার প্রায় চার লাখ জেলে জাল বুনন, ট্রলার মেরামত ও পুরাতন জাল রিপু করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বছর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় এবার যেন আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে জেলে পল্লীগুলোতে। বিভিন্ন জনের কাছে ধার-দেনা করে পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে ইলিশ ধরার। জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম মেম্বার জানান, আষাঢ়ের মাঝামাঝি সময় থেকে এ বছর ইলিশ পড়া শুরু হতে পারে। বর্তমানে নদীতে খুব একটা ইলিশ নেই। তাই এই সময়টাকে সামনে রেখে জেলার ৭ উপজেলার আট হাজারের বেশি নৌকা-ট্রলার প্রস্তুত করা হচ্ছে। আর গতবার ব্যাপক ইলিশ পাওয়ায় এবার উৎফুল্ল চিত্তে রয়েছে জেলেরা। এবারো ব্যপক ইলিশের আশায় প্রস্তুতি চলছে বলে জানান জেলেদের এই নেতা। রহিম মাঝি ৩০ বছর ধরে নদীতে মাছ ধরছেন। দেখেছেন নদীতে মাছের একাল ও সেকাল। উত্তাল মেঘনা ও গভীর সমূদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন অনেকবার। তবুও অন্য কোন কাজ না জানায় মাছ ধরাই তার পেশা। তিনি জানান, আগে জৈষ্ঠ্য মাস থেকেই ইলিশের মৌসুম শুরু হতো। কিন্তু এখন মৌসুম বদলে গিয়ে আষাঢ়ের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ইলিশের সময় থাকে। আর সাম্প্রতিক সময়ে নদীতে মাছও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি মনে করেন, এজন্য সরকারের জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম প্রধান ভূমিকা রাখছে। সরেজমিনে ভোলার মেঘনা পাড়ের জেলে পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, জেলেদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। কেউ পুরানো জালকে নতুন করে রিপু করছে। কেউ বা নতুন জাল বুনতে ব্যস্ত। আবার কেউ নৌকা-ট্রলার মেরামত করছে। কেউ নৌযানের নিচের অংশে পুডিং ও আলকাতরা লাগাচ্ছেন। সব মিলিয়ে একটা কাজের সময় বিরাজ করছে পল্লীগুলোতে। শিশু থেকে শুরু করে কেউ বসে নেই। সম্মিলিতভাবে পরিবারের সবাই কাজে হাত লাগাচ্ছে। এসব পরিবারগুলো স্বপ্ন দেখছে ইলিশের প্রাচুর্যতায় তাদের অভাব দূর হবে। মেঘনা পাড়ের নাছীরমাঝি এলাকার জেলে রাসেদ মাঝি, কালাম মাঝি, সাইদ আলী ও রহমান বেপারী বলেন, গত বছর নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় এবার এনজিওর কাছ থেকে প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছেন। এই টাকায় নতুন জাল ও ট্রলার মেরামত করছেন তারা। আশা করছেন প্রচুর ইলিশ ধরার মাধ্যমে লাভবান হবেন তারা। গত বেশ কয়েকবছর ঋণের বোঝায় জর্জরিত ছিলেন কাদের আলী ও রমজান মাঝি। উপার্জনের অধিকাংশ অর্থ চলে যেত দেনা পরিশোধে। কিন্তু গতবার প্রচুর ইলিশ জালে আটকা পড়ায় দেনা কমে এসেছে। এখন অনেকটাই চাপমুক্ত তারা। আশা করছেন এবার ইলিশ বেঁচে বাকি দেনা মিটিয়ে দেবেন। কোরার হাটের জেলে আমিন মাঝি, মাইনুদ্দিন ও জসিমউদ্দিন মাঝি বলেন, বৃষ্টি বাড়ার সাথে সাথে নদীতে ইলিশ মাছের চাপ আসে। তখন ট্রলার নিয়ে উত্তাল মেঘনার মাঝে জাল তোলা হয়। বিশেষ করে সামনের আমাবশ্যার প্রচুর ইলিশ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খালের মাছের আড়ৎদার মো. আল-আমীন বলেন, প্রতিবছর ইলিশের মৌসুমে মাছের ঘাটগুলো জমজমাট হয়ে উঠে। তাই সামনের ইলিশের সময়কে রেখে আড়ৎগুলোতে সংস্কারের কাজ চলছে। একইসাথে মাছ রাখার গোলা, সাঝি পরিষ্কার পরিচ্ছনতা করা হচ্ছে। স্থানীয় বরফকলের ম্যানেজার মো. আলাউদ্দিন জানান, গত বছর জেলায় সবচেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়েছিল। বরফ তৈরিতে তাদের মহাব্যস্ত থাকতে হয়েছিল তখন। লাভও হয়েছে ভালো। মূলত ইলিশের সময় উপর ভিত্তি করেই বরফের ব্যবসা চলে। তাই সামনের ইলিশের মৌসুম ঘিরে বরফ তৈরিরও প্রস্তুতি চলছে তাদের। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, মার্চ ও এপ্রিল ২ মাস অভায়শ্রমে কঠোরভাবে পালিত হয়েছে ইলিশসহ সব ধরেনের মৎস্য রক্ষা কার্যক্রম। এছাড়া জাটকা সংরক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে এবছর ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর জাটকা ইলিশ আহরনে বিরত থাকা ৫২ হাজার ১৫০টি জেলে পরিবারের জন্য মার্চ-জুন এই চার মাস মোট আট হাজার ৩৪৪ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। একুশে সংবাদ // পপি // বিবা // ২২.০৬.১৭

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1