সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড “নিয়ম ভেঙে” পদোন্নতির প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ১০:২৫ এএম, জুন ১৭, ২০১৭
একুশে সংবাদ : রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে ‘নিয়ম ভেঙে’ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়ার প্রস্তুতি চলছে এবং এর মাধ্যমে অন্তত ২০ লাখ টাকার বাণিজ্যের ছক কষা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ। বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পদগুলোতে আগে থেকেই কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া আছে। বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা গত পাঁচ বছর যাবৎ এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তার পরেও এসব পদে পদোন্নতি দেয়ার আয়োজন করা হয়েছে, যা সরকারি চাকরিবিধির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৬ মে ২২৬তম বোর্ডসভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন প্রফেসর তানবিরুল আলম। সভায় বোর্ডের স্বার্থে দ্বিতীয় শ্রেণির ১১ কর্মকর্তাকে নিজ নিজ পদেই বেতন-ভাতা অপরিবর্তিত রেখে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে চলতি দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে মোতাবেক ওই বছরের ১ জুলাই ১১ কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু এটি “নিয়মমাফিক হয়নি” বলে বোর্ডের দুই কর্মকর্তা পরের বছর ৭ এপ্রিল উচ্চ আদালতে রিট করেন। ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আদালত এই রিট খারিজ করে দেন। এরপর ওই মাসেই বোর্ডে ২৩২তম বোর্ডসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার রেজুলেশনের একটি সিদ্ধান্তে বলা হয়, “উচ্চ আদালত রিট খারিজ করে দেওয়ায় ধরে নেওয়া যায়, প্রথম শ্রেণির পদে চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত ১১ কর্মকর্তার ওই পদে কাজ করার যোগ্যতা রয়েছে।” তাই অতি দ্রুত এসব কর্মকর্তার পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের জন্য নির্বাচক কমিটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব কর্মকর্তার পদোন্নতির সঙ্কট নিরসন হয়নি। এরই মধ্যে অবসরে গেছেন দুই কর্মকর্তা। বাকি ৯ কর্মকর্তাও চলতি দায়িত্ব থেকে পদে ফিরতে পারেননি। এর মধ্যে বদল হয় বোর্ডের চেয়ারম্যানও। যোগ দেন প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ। এখন তিনি বোর্ডসভার আগের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে ওই ১১ পদে নতুন করে পদোন্নতি দেয়ার আয়োজন করেছেন। ভুক্তভোগি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম শ্রেণির ১১ পদ পূরণে চেয়ারম্যান গত ২১ এপ্রিল বোর্ডের দ্বিতীয় শ্রেণির সব কর্মকর্তার সাক্ষাতকার নেন। এখন তাদের মধ্যে থেকে “পছন্দের” কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। এর ফলে পাঁচ বছর প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর আবার দ্বিতীয় শ্রেণিতে ফিরে যেতে হবে কয়েকজন কর্মকর্তাকে! এ নিয়ে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। বোর্ডে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা থেকে চলতি দায়িত্বে পদোন্নতি পেয়েছিলেন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রুবী রোজারিও। তিনি বলেন, “২৬ বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের যোগ্যতা অনুযায়ীই চলতি দায়িত্বে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। এখন আমাদের আবার দ্বিতীয় শ্রেণিতে ফিরিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য যেমন হতাশার, তেমন লজ্জার।” বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রথম শ্রেণিতে থাকা ৯ কর্মকর্তার মধ্যে এখন অন্তত চার কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে নামানোর চেষ্টা চলছে। এই চার কর্মকর্তার জায়গায় দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক মানিক চন্দ্র সেন, সহকারি সচিব নেসার উদ্দিন, সহকারি হিসাবরক্ষণ অফিসার শফিকুল ইসলাম ও সহকারি সচিব (ভাণ্ডার) লিটন সরকারকে পদোন্নতি দেয়ার চেষ্টা চলছে। সূত্র আরও জানায়, এসব কর্মকর্তার কয়েকজন বোর্ড চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ। কেউ কেউ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত। লিটন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ভাণ্ডারের খাতা ঠিকাদারকে ওজনে বেশি দেয়ার। গত বছরের ১৭ জুন প্রতি ট্রাকে ৯ টনের বিপরীতে ১১ টন করে কাগজ দেয়ার সময় হাতেনাতে ধরাও পড়েছিলেন তিনি। অথচ এই বিতর্কিত কর্মকর্তাকেও পদোন্নতি দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেছেন, বোর্ডসভা যাদের চলতি দায়িত্ব হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছিল, তারাই অযোগ্য। আমি যোগ্যদের পদোন্নতি দেয়ার আয়োজন করছি। আগামি এক মাসের ভেতর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো “বাণিজ্য” হচ্ছে না। চেয়ারম্যান আরো বলেন, চলতি দায়িত্ব পদোন্নতি নয়। তাই আমি নতুন করে পদোন্নতি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। আর আমি নির্বাচক কমিটির কেউ নই। তাই বাণিজ্যের অভিযোগ ভিত্তিহীন। বোর্ডে গত ৩০ বছরে এমন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কোনো কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়নি। একুশে সংবাদ // পপি // বিবা // ১৭.০৬.১৭

বিভাগের আরো খবর

You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MySQL server version for the right syntax to use near 'ORDER BY bn_content.ContentID DESC LIMIT 8' at line 1